back to top

কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন | Kesari movie box office collection

- Advertisement -

কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন: অক্ষয় কুমারের ব্লকবাস্টার যাত্রা

২১ সারঙ্গাঢ়ীর গল্প: বলিউডের সাফল্যতম যুদ্ধভিত্তিক সিনেমার বক্স অফিস কালেকশন এবং সাফল্যের বিশ্লেষণ

সূচিপত্র

কেসরী মুভি পরিচিতি

kesari movie box office collection

‘কেসরী’ হল একটি ২০১৯ সালের বলিউড যুদ্ধভিত্তিক ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র যা অনুরাগ সিং পরিচালিত। এই সিনেমাতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউডের সুপারস্টার অক্ষয় কুমার। চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে কেশরী ফিল্মস, ধর্মা প্রডাকশনস, কেপ অফ গুড ফিল্মস এবং অজয় দেবগন ফিজুয়ালস যৌথভাবে। ২১ মার্চ, ২০১৯ তারিখে ভারত জুড়ে সিনেমাটি মুক্তি পায়।

“কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন বলিউড ইতিহাসে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে। ২১ শিখ যোদ্ধার সাহসিকতার কাহিনী দর্শকদের হৃদয় জয় করেছে।”

কেসরী চলচ্চিত্রটি ১৮৯৭ সালে সংঘটিত সারাগাড়ির যুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। এই যুদ্ধে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩৬তম শিখ রেজিমেন্টের ২১ জন শিখ সৈনিক আফগান উপজাতি পাঠানদের ১০,০০০ সৈন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। অক্ষয় কুমার এই সিনেমায় হাবিলদার ঈশর সিং-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি ২১ জন শিখ সৈনিকের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

এই আর্টিকেলে আমরা কেসরী মুভির বক্স অফিস কালেকশন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। সিনেমাটির প্রথম দিন থেকে শুরু করে মোট লাইফটাইম কালেকশন, দেশে-বিদেশে প্রদর্শন, বাজেট এবং লাভ-লোকসান বিশ্লেষণ – সবকিছুই জানতে পারবেন এই আর্টিকেল থেকে।

🎬

প্রথম সপ্তাহান্তে কেসরী মুভির কালেকশন

কেসরী মুভি হোলি উৎসবের দিনে (২১ মার্চ, ২০১৯) মুক্তি পেয়েছিল, যা সিনেমাটির বক্স অফিস কালেকশনের জন্য একটি বিশেষ সুবিধা হয়েছিল। প্রথম দিনেই সিনেমাটি দারুণ সাড়া ফেলেছিল এবং উচ্চ টিকিট বিক্রি অর্জন করেছিল। আসুন প্রথম সপ্তাহান্তে কেসরী মুভির বক্স অফিস কালেকশন বিস্তারিতভাবে দেখে নেওয়া যাক।

“হোলির দিন মুক্তি পাওয়ার সুবাদে কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশনের প্রথম দিনই ২১.০৬ কোটি রুপি অর্জন করেছিল, যা ২০১৯ সালের পর্যন্ত বলিউডের সবচেয়ে বড় ওপেনিং ডে কালেকশন ছিল।”

💰 প্রথম দিন (২১ মার্চ, ২০১৯)

কেসরী মুভি প্রথম দিনে ২১.০৬ কোটি রুপি আয় করে। হোলির ছুটির দিনে মুক্তি পাওয়া সত্ত্বেও, সিনেমাটি শুরুতে ধীরে শুরু করেছিল, কিন্তু বিকেল এবং সন্ধ্যার শোগুলিতে টিকিট বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। মেট্রো শহরগুলিতে সিনেমাটি দারুণ সাড়া ফেলেছিল।

💰 দ্বিতীয় দিন (২২ মার্চ, ২০১৯)

দ্বিতীয় দিনে সিনেমাটির কালেকশন কিছুটা কমে গিয়ে ১৬.৭৫ কোটি রুপিতে দাঁড়ায়। এটি একটি সাধারণ কার্যদিবস ছিল, তাই টিকিট বিক্রিতে সামান্য পতন দেখা যায়। তবে মুভি সমালোচকদের ইতিবাচক পর্যালোচনা এবং দর্শকদের মুখে মুখে প্রশংসা সিনেমাটিকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করেছিল।

💰 তৃতীয় দিন (২৩ মার্চ, ২০১৯)

শনিবার হওয়ায় কেসরী মুভির আয় আবার বৃদ্ধি পেয়ে ১৮.৭৫ কোটি রুপিতে পৌঁছায়। সপ্তাহান্তে পরিবার সহ দর্শকদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় টিকিট বিক্রিতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা যায়। বিশেষ করে, উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে সিনেমাটি শক্তিশালী প্রদর্শন করে।

💰 চতুর্থ দিন (২৪ মার্চ, ২০১৯)

রবিবার হওয়ায় এবং ইতিবাচক মুখে মুখে প্রচারের কারণে, কেসরী চতুর্থ দিনে সর্বোচ্চ একদিনের আয় করে – ২১.৫১ কোটি রুপি। এই দিনে পরিবার সহ দর্শকদের বিপুল উপস্থিতি ছিল এবং সিনেমা হলগুলিতে অনেক শো হাউসফুল ছিল।

এভাবে কেসরী মুভি তার প্রথম সপ্তাহান্তে (৪ দিনে) মোট ৭৮.০৭ কোটি রুপি আয় করে, যা ২০১৯ সালের একটি অন্যতম সেরা ওপেনিং হিসেবে রেকর্ড করা হয়। বিশেষ করে রবিবারের আয় অত্যন্ত উৎসাহজনক ছিল, যা সিনেমাটির জনপ্রিয়তার নির্দেশক ছিল। পরিসংখ্যান অনুসারে, উত্তর ভারতের রাজ্যগুলি, বিশেষ করে পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে কেসরী সর্বাধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।

🎬

প্রথম সপ্তাহের কালেকশন রিপোর্ট

উৎসাহব্যঞ্জক প্রথম সপ্তাহান্তের পর, কেসরী মুভি সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতেও ভালো পারফর্ম করেছিল। যদিও সাধারণ কার্যদিবসগুলিতে আয় কিছুটা কমেছিল, তবুও সিনেমাটি নিজেকে শক্তিশালী অবস্থায় ধরে রেখেছিল। মুখে মুখে প্রচার এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সিনেমাটিকে জনপ্রিয়তা অর্জনে সাহায্য করেছিল।

“কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন প্রথম সপ্তাহে মোট ১০৫.৮৬ কোটি রুপি অর্জন করে, যা অক্ষয় কুমারের ক্যারিয়ারের দ্রুততম ১০০ কোটি ক্লাবে প্রবেশকারী সিনেমাগুলির একটি হয়ে ওঠে।”

💰 পঞ্চম দিন (২৫ মার্চ, ২০১৯)

সোমবার হওয়ায় কেসরী মুভির আয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়ে ৮.৫৭ কোটি রুপি হয়। সাধারণ কার্যদিবসে টিকিট বিক্রি কমে যাওয়া একটি স্বাভাবিক প্রবণতা, তবুও সিনেমাটি যে আয় করেছিল তা তুলনামূলকভাবে ভালো ছিল।

💰 ষষ্ঠ দিন (২৬ মার্চ, ২০১৯)

এই দিনে সিনেমাটি ৭.২৬ কোটি রুপি আয় করে। ষষ্ঠ দিনে আয় আরও কমে গেলেও, সিনেমাটি তার ১০০ কোটি ক্লাবে প্রবেশের লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে যায়।

💰 সপ্তম দিন (২৭ মার্চ, ২০১৯)

সপ্তম দিনে কেসরী ৬.৯৬ কোটি রুপি আয় করে, যার ফলে প্রথম সপ্তাহের মোট আয় দাঁড়ায় ১০৫.৮৬ কোটি রুপি। এর সাথেই সিনেমাটি ১০০ কোটি ক্লাবে প্রবেশ করে এবং অক্ষয় কুমারের তখন পর্যন্ত দ্রুততম ১০০ কোটি অর্জনকারী সিনেমা হিসেবে রেকর্ড গড়ে।

প্রথম সপ্তাহের কালেকশন রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট যে, কেসরী মুভি শুরুতেই দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিল। ১০০ কোটি ক্লাবে প্রবেশ করতে মাত্র ৭ দিন সময় নেওয়া সিনেমাটির জনপ্রিয়তার প্রমাণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সাফল্যের পিছনে ছিল সিনেমার দেশপ্রেমমূলক বিষয়বস্তু, অক্ষয় কুমারের জনপ্রিয়তা, এবং সারাগাড়ি যুদ্ধের মতো একটি কম পরিচিত ঐতিহাসিক ঘটনাকে সফলভাবে পর্দায় তুলে ধরার প্রয়াস।

🎬

পরবর্তী সপ্তাহগুলির বক্স অফিস আয়

১০০ কোটির বাধা অতিক্রম করার পর, কেসরী মুভি ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়েছিল। দ্বিতীয় সপ্তাহে নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলির প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও, কেসরী ভালোভাবে টিকে ছিল এবং উল্লেখযোগ্য আয় অব্যাহত রেখেছিল। প্রিয় প্রদর্শনকেন্দ্রগুলিতে, বিশেষ করে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে সিনেমাটির শোগুলি ভরপুর দর্শক পেয়েছিল।

“দ্বিতীয় সপ্তাহে কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন ২৯.৬৬ কোটি রুপি, তৃতীয় সপ্তাহে ১১.৯৮ কোটি রুপি, এবং চতুর্থ সপ্তাহে ৩.৫৬ কোটি রুপি অর্জন করে।”

💰 দ্বিতীয় সপ্তাহ (২৮ মার্চ – ৩ এপ্রিল, ২০১৯)

দ্বিতীয় সপ্তাহে কেসরী ২৯.৬৬ কোটি রুপি আয় করে। এই সময়ে সিনেমাটির আয় প্রথম সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ৭২% কমে যায়, যা বক্স অফিসে একটি স্বাভাবিক প্রবণতা। তবে দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে (শুক্রবার থেকে রবিবার) সিনেমাটি আবার ভালো পারফর্ম করে এবং টিকিট বিক্রিতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা যায়।

💰 তৃতীয় সপ্তাহ (৪ – ১০ এপ্রিল, ২০১৯)

তৃতীয় সপ্তাহে কেসরী ১১.৯৮ কোটি রুপি আয় করে। এই সময়ে অন্যান্য নতুন বড় মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলির সাথে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় স্ক্রিনের সংখ্যা কমে যায়, ফলে আয়ও কমে যায়। তবে, তৃতীয় সপ্তাহে এই পরিমাণ আয় তৎকালীন স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বেশ ভালো ছিল।

💰 চতুর্থ সপ্তাহ (১১ – ১৭ এপ্রিল, ২০১৯)

চতুর্থ সপ্তাহে কেসরী ৩.৫৬ কোটি রুপি আয় করে। এই সময়ে সিনেমাটি সীমিত সংখ্যক হলে প্রদর্শিত হচ্ছিল, কিন্তু যেসব হলে প্রদর্শিত হচ্ছিল সেখানে দর্শক সমাগম ছিল। চতুর্থ সপ্তাহ শেষে সিনেমাটির মোট আয় দাঁড়ায় ১৫১.০৬ কোটি রুপি।

চতুর্থ সপ্তাহের পরেও, কেসরী মুভি কিছু নির্বাচিত হলে প্রদর্শিত হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে আরও আয় যোগ করতে থাকে। হলওয়ে লিস্টিং সিস্টেম থেকে সিনেমাটি বেরিয়ে যাওয়ার আগে পাঁচম এবং ষষ্ঠ সপ্তাহে মোট ৩.৩৮ কোটি রুপি আয় করে। এর মাধ্যমে সিনেমাটি ১৫০ কোটির বাধা অতিক্রম করে, যা কোনো যুদ্ধভিত্তিক ভারতীয় চলচ্চিত্রের জন্য একটি বড় সাফল্য।

🎬

কেসরী মুভির মোট লাইফটাইম কালেকশন

কেসরী মুভির ভারতীয় বক্স অফিসে লাইফটাইম কালেকশন মোট ১৫৪.৪৪ কোটি রুপি। এই আয় সিনেমাটিকে ২০১৯ সালের অন্যতম সাফল্যতম বলিউড সিনেমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। অক্ষয় কুমারের ক্যারিয়ারেও এটি একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছিল, যেহেতু তখন পর্যন্ত এটি তার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র ছিল (২.০-এর পরে)।

“কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন ভারতে ১৫৪.৪৪ কোটি রুপি অর্জন করে, যা ২০১৯ সালে বলিউডের সর্বাধিক আয়কারী চলচ্চিত্রের তালিকায় এটিকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে রাখে।”

💰 নেট বক্স অফিস কালেকশন

ভারতে কেসরী মুভির নেট বক্স অফিস কালেকশন (করের পর) মোট ১৫৪.৪৪ কোটি রুপি। এই পরিমাণ সিনেমাটিকে সুপারহিট বিবেচিত করেছিল এবং ২০১৯ সালের টপ ১০ হিন্দি সিনেমার মধ্যে স্থান দিয়েছিল।

💰 গ্রস বক্স অফিস কালেকশন

ভারতে কেসরী মুভির গ্রস বক্স অফিস কালেকশন (কর সহ) মোট ১৮২.২৪ কোটি রুপি। এটি চলচ্চিত্রের সামগ্রিক ব্যবসায়িক সাফল্যের আরও একটি প্রমাণ ছিল।

💰 আঞ্চলিক বিভাজন

কেসরী সবচেয়ে বেশি আয় করেছিল উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে, বিশেষ করে দিল্লি-এনসিআর, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং উত্তর প্রদেশে। এই অঞ্চলগুলিতে মোট আয়ের প্রায় ৪০% অর্জিত হয়েছিল। পশ্চিম ভারত (মহারাষ্ট্র, গুজরাট) থেকে আয় ছিল প্রায় ৩০%, দক্ষিণ ভারত থেকে ১৫%, এবং পূর্ব ভারত থেকে ১৫%।

কেসরী মুভির বক্স অফিস কালেকশন তার মুক্তির বছরে (২০১৯) বলিউডের পঞ্চম সর্বোচ্চ আয়কারী হিন্দি চলচ্চিত্র হিসেবে স্থান অর্জন করেছিল। এর আগে ছিল ‘ওয়ার’, ‘কাবির সিং’, ‘উরি: দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’, এবং ‘ভারত’। একটি যুদ্ধভিত্তিক ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র হিসেবে ১৫০ কোটি টাকার বেশি আয় করা ছিল একটি উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব, বিশেষ করে যেহেতু এই ধরনের চলচ্চিত্রগুলি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট দর্শক শ্রেণীকে আকর্ষণ করে।

🎬

বিদেশে কেসরী মুভির প্রদর্শন ও আয়

কেসরী মুভি শুধু ভারতেই নয়, বিদেশেও প্রদর্শিত হয়েছিল। যুক্তরাজ্য, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল। এসব দেশে ভারতীয় ডায়াসপোরার মধ্যে সিনেমাটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

“বিদেশে কেসরী মুভির বক্স অফিস কালেকশন প্রায় ৫০ কোটি রুপি, যা ভারতের বাইরে অক্ষয় কুমারের অন্যতম সেরা পারফর্মেন্স।”

💰 উত্তর আমেরিকা (যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা)

উত্তর আমেরিকায় কেসরী প্রায় ২.৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৬.৮ কোটি রুপি) আয় করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রে সিনেমাটি ১২০টিরও বেশি স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছিল, যা একটি হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যা।

💰 যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ

যুক্তরাজ্যে কেসরী প্রায় ১.১ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১০.১ কোটি রুপি) আয় করেছিল। সিনেমাটি যুক্তরাজ্যের প্রায় ৯৫টি স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয়েছিল। অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলিতে (যেমন জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন) সিনেমাটি প্রায় ৩.৫ কোটি রুপি আয় করেছিল।

💰 মধ্যপ্রাচ্য

মধ্যপ্রাচ্যে (সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন ইত্যাদি) কেসরী প্রায় ১.৮ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১২.৬ কোটি রুপি) আয় করেছিল। এই অঞ্চলে সিনেমাটি বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল, বিশেষ করে ভারতীয় প্রবাসীদের মধ্যে।

💰 অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে কেসরী প্রায় ০.৭ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ৩.৫ কোটি রুপি) আয় করেছিল। এই অঞ্চলে সিনেমাটি প্রায় ৫০টি স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছিল।

💰 অন্যান্য দেশ

এছাড়াও, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফিজি, মরিশাস, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ অন্যান্য দেশে সিনেমাটি প্রায় ৩.৫ কোটি রুপি আয় করেছিল।

বিদেশে কেসরী মুভির মোট বক্স অফিস কালেকশন প্রায় ৫০ কোটি রুপি। এই সাফল্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ সাধারণত বিদেশে ভারতীয় যুদ্ধভিত্তিক বা ঐতিহাসিক চলচ্চিত্রগুলি অতটা আবেদন তৈরি করতে পারে না। কিন্তু কেসরী মুভির দেশপ্রেমমূলক বিষয়বস্তু, অক্ষয় কুমারের আন্তর্জাতিক আবেদন, এবং উচ্চ মানের নির্মাণ মানদণ্ডের কারণে সিনেমাটি আন্তর্জাতিক দর্শকদের কাছেও পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল।

🎬

প্রডাকশন বাজেট ও লাভ-লোকসান বিশ্লেষণ

কেসরী মুভির প্রডাকশন বাজেট ছিল প্রায় ৮০ কোটি রুপি, যার মধ্যে অক্ষয় কুমারের পারিশ্রমিক, বিশাল সেট নির্মাণ, অ্যাকশন সিকোয়েন্স, পিরিয়ড কস্টিউম, প্রচার ও বিজ্ঞাপন খরচ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল। একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধভিত্তিক সিনেমা হওয়ায়, এর নির্মাণ ব্যয় তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।

“কেসরী মুভির প্রডাকশন বাজেট ৮০ কোটি রুপি, আর মোট বিশ্বব্যাপী কালেকশন ২০৪.৪৪ কোটি রুপি হওয়ায় এটি ১৫৫.৫৫% লাভ অর্জন করেছিল।”

💰 প্রডাকশন বাজেট বিভাজন

শিল্পী ও ক্রু পারিশ্রমিক: ৩৫ কোটি রুপি (অক্ষয় কুমারের পারিশ্রমিক প্রায় ২৫-৩০ কোটি)।
প্রডাকশন ও সেট নির্মাণ: ২৮ কোটি রুপি (সারাগাড়ির যুদ্ধের দৃশ্যের জন্য বিশাল সেট নির্মাণ ও বিশেষ প্রভাব)।
প্রচার ও বিজ্ঞাপন: ১৭ কোটি রুপি।

💰 মোট বিশ্বব্যাপী আয়

ভারতীয় বক্স অফিস: ১৫৪.৪৪ কোটি রুপি।
বিদেশী বক্স অফিস: ৫০ কোটি রুপি।
মোট বিশ্বব্যাপী বক্স অফিস: ২০৪.৪৪ কোটি রুপি।

💰 অন্যান্য আয়

স্যাটেলাইট অধিকার: ৫০ কোটি রুপি।
ডিজিটাল অধিকার: ৩০ কোটি রুপি।
সঙ্গীত অধিকার: ১০ কোটি রুপি।
মোট অন্যান্য আয়: ৯০ কোটি রুপি।

💰 লাভ-লোকসান বিশ্লেষণ

মোট আয় (বক্স অফিস + অন্যান্য): ২৯৪.৪৪ কোটি রুপি।
মোট খরচ (প্রডাকশন + প্রিন্ট ও প্রচার): ৮০ কোটি রুপি।
মোট লাভ: ২১৪.৪৪ কোটি রুপি।
আরওআই (রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট): ২৬৮%।

এই বিশ্লেষণ থেকে স্পষ্ট যে, কেসরী মুভি ব্যবসায়িক দিক থেকে একটি বিশাল সাফল্য অর্জন করেছিল। ৮০ কোটি রুপি বিনিয়োগের বিপরীতে ২৯৪.৪৪ কোটি রুপি আয় করে সিনেমাটি ২৬৮% রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট অর্জন করেছিল। সিনেমাটির সফল বক্স অফিস কালেকশন মিডিয়াতে ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল এবং এটি অক্ষয় কুমারকে বলিউডের সবচেয়ে সফল অভিনেতাদের একজন হিসেবে আরও শক্তিশালী করেছিল।

🎬

কেসরী দ্বারা গড়া বক্স অফিস রেকর্ডসমূহ

কেসরী মুভির ব্যাপক সাফল্য বিভিন্ন বক্স অফিস রেকর্ড গড়ে। সিনেমাটি ২০১৯ সালে এবং বলিউড ইতিহাসে কিছু উল্লেখযোগ্য রেকর্ড স্থাপন করেছিল। এগুলি প্রমাণ করে যে, সঠিক বিষয়বস্তু, উপস্থাপনা, এবং মার্কেটিং-এর মাধ্যমে ঐতিহাসিক যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রও ব্যাপক দর্শক আকর্ষণ করতে পারে।

“কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল (‘উরি: দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’ এর পরে)।”

🏆 ২০১৯ সালের বড় ওপেনিং

কেসরী মুক্তির সময় (মার্চ, ২০১৯) পর্যন্ত ২০১৯ সালের সবচেয়ে বড় ওপেনিং ডে কালেকশন (২১.০৬ কোটি রুপি) অর্জন করেছিল। পরে এই রেকর্ড অন্যান্য বড় মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা দ্বারা ভাঙা হয়েছিল।

🏆 দ্রুত ১০০ কোটি ক্লাব

কেসরী মাত্র ৭ দিনে ১০০ কোটি ক্লাবে প্রবেশ করেছিল, যা তখন পর্যন্ত অক্ষয় কুমারের ক্যারিয়ারের দ্রুততম ১০০ কোটি অর্জনকারী সিনেমা ছিল। এটি ২০১৯ সালে দ্রুততম ১০০ কোটি অর্জনকারী দ্বিতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র ছিল।

🏆 যুদ্ধভিত্তিক সিনেমার রেকর্ড

কেসরী ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী সিনেমা ছিল (‘উরি: দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’ এর পরে)। এটি ঐতিহাসিক যুদ্ধভিত্তিক সিনেমাগুলির মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ আয়কারী সিনেমা হিসেবে স্থান পেয়েছিল।

🏆 ২০১৯ সালের সাফল্য

কেসরী ২০১৯ সালে বলিউডের পঞ্চম সর্বোচ্চ আয়কারী হিন্দি চলচ্চিত্র হিসেবে স্থান পেয়েছিল। এর আগে ছিল ‘ওয়ার’, ‘কাবির সিং’, ‘উরি: দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’, এবং ‘ভারত’।

🏆 অক্ষয় কুমারের সেরা

কেসরী মুক্তির সময় অক্ষয় কুমারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র ছিল (২.০-এর পরে)। এটি তার ক্যারিয়ারের নবম ১০০ কোটি ক্লাব সদস্য সিনেমা ছিল, যা তাকে বক্স অফিসের একজন নির্ভরযোগ্য তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।

কেসরী মুভি দ্বারা গড়া এই রেকর্ডগুলি বলিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছিল। এটি প্রমাণ করেছিল যে, সঠিক উপাদান, ভালো গল্প, এবং উচ্চমানের নির্মাণ মানদণ্ড সহ ঐতিহাসিক বা যুদ্ধভিত্তিক সিনেমাগুলি শুধু সমালোচকদের প্রশংসাই নয়, ব্যবসায়িক সাফল্যও অর্জন করতে পারে। কেসরী সিনেমাটি ২০১৯ সালে বক্স অফিসে অন্যতম বড় বিজয়ী হিসেবে স্থান করে নিয়েছিল।

🎬

কেসরী মুভির সাফল্যের কারণসমূহ

কেসরী মুভি বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছিল, কিন্তু এর পিছনে বেশ কিছু কারণ ছিল। আসুন সেগুলি বিস্তারিতভাবে দেখে নেওয়া যাক:

🔍 অক্ষয় কুমারের স্টারডাম

অক্ষয় কুমার বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য তারকা, যিনি ‘গোল্ড’, ‘পাড্মান’, ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’, ‘২.০’ ইত্যাদি সিনেমার মাধ্যমে বক্স অফিস সাফল্য প্রমাণ করেছিলেন। কেসরী মুভিতে তার উপস্থিতি সিনেমাটির জন্য একটি বড় আকর্ষণ ছিল। ঈশর সিং-এর চরিত্রে তার শক্তিশালী অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল।

🔍 দেশপ্রেমমূলক বিষয়বস্তু

সারাগাড়ির যুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই সিনেমাটি দেশপ্রেম ও সাহসিকতার গল্প বলে। ২১ জন শিখ সৈনিকের ১০,০০০ আফগান সৈন্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই অবিশ্বাস্য গল্প ভারতীয় দর্শকদের মধ্যে দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছিল, যা সিনেমাটির জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছিল।

🔍 বাস্তবসম্মত যুদ্ধের দৃশ্য

কেসরী মুভিতে যুদ্ধের দৃশ্যগুলি অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ও আবেগপূর্ণভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছিল। বিশেষ প্রভাব, সিনেমাটোগ্রাফি, এবং অ্যাকশন কোরিওগ্রাফি অত্যন্ত প্রশংসনীয় ছিল। এই যুদ্ধের দৃশ্যগুলি দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল এবং সিনেমাটির প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়েছিল।

🔍 প্রযোজনার উচ্চ মান

করণ জোহর ও ধর্মা প্রডাকশনস-এর নাম সিনেমাটির প্রযোজনার মান নিশ্চিত করেছিল। সিনেমাটিতে উচ্চমানের সেট, পোশাক, মেকআপ, এবং বিশেষ প্রভাব ব্যবহার করা হয়েছিল, যা দর্শকদের সেই সময়ের পরিবেশে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল।

🔍 ছুটির দিনে মুক্তি

কেসরী হোলি উৎসবের দিন (২১ মার্চ, ২০১৯) মুক্তি পেয়েছিল, যা সিনেমাটির জন্য একটি বড় সুবিধা ছিল। ছুটির দিনে মুক্তি পাওয়ায় প্রথম দিনেই সিনেমাটি বেশি টিকিট বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছিল, যা তার মোট আয়ে ভালো প্রভাব ফেলেছিল।

🔍 ইতিবাচক মুখে মুখে প্রচার

কেসরী দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছিল। এই ইতিবাচক মুখে মুখে প্রচার সিনেমাটির টিকিট বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করেছিল, বিশেষ করে প্রথম সপ্তাহান্তের পর।

উপরোক্ত কারণগুলি মিলে কেসরী মুভিকে বক্স অফিসে সাফল্য অর্জনে সাহায্য করেছিল। সিনেমাটি দেশপ্রেম, সাহসিকতা, বলিদান, এবং মানবতার মতো সার্বজনীন বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলে, যা সবসময়ই ভারতীয় দর্শকদের কাছে আবেদনশীল। এর সাথে অক্ষয় কুমারের তারকাসত্তা, করণ জোহরের প্রযোজনা, এবং অনুরাগ সিংয়ের দক্ষ পরিচালনা মিলে সিনেমাটিকে একটি বক্স অফিস হিট বানিয়েছিল।

🎬

উপসংহার

কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন ও সাফল্যের গল্প আমাদের দেখায় যে, সঠিক উপাদান, ভালো গল্প, এবং উচ্চমানের নির্মাণ মানদণ্ড সহ ঐতিহাসিক বা যুদ্ধভিত্তিক সিনেমাগুলি শুধু সমালোচকদের প্রশংসাই নয়, ব্যবসায়িক সাফল্যও অর্জন করতে পারে। ১৫৪.৪৪ কোটি রুপি ভারতীয় বক্স অফিসে এবং ৫০ কোটি রুপি বিদেশী বক্স অফিসে আয় করে কেসরী ২০১৯ সালের অন্যতম সাফল্যতম বলিউড সিনেমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

অক্ষয় কুমার, পারিণীতি চোপড়া, অনুরাগ সিং, এবং করণ জোহর সহ টিমের সকল সদস্যের কঠোর পরিশ্রম ও সমর্পণ সিনেমাটির সাফল্যে অবদান রেখেছিল। কেসরী মুভি সারাগাড়ির যুদ্ধের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেও সাহায্য করেছিল, যা অনেক ভারতীয়ের কাছে অজানা ছিল।

সামগ্রিকভাবে, কেসরী মুভি অদম্য সাহস, বলিদান, এবং দেশপ্রেমের এক শক্তিশালী গল্প উপস্থাপন করেছিল, যা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়েছিল। সিনেমাটির বক্স অফিস কালেকশন শুধু এর বাণিজ্যিক সাফল্যই নয়, বলিউডের দেশপ্রেমমূলক এবং ঐতিহাসিক চলচ্চিত্রের প্রতি দর্শকদের ভালোবাসাও প্রমাণ করেছিল।

“কেসরী শুধু এক ব্যক্তির নয়, ২১ জন বীর সৈনিকের সাহসিকতার গল্প। এটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

আশা করি, এই আর্টিকেলে কেসরী মুভি বক্স অফিস কালেকশন এবং সিনেমাটির সাফল্যের পিছনে থাকা কারণগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন। কেসরী মুভি শুধু একটি সিনেমাই নয়, এটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় যা সাহসিকতা, বীরত্ব এবং দেশপ্রেমের অমর গল্প বলে, এবং সেই সাথে বক্স অফিসেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে।

Latest articles

Related articles