জেমস এর সেরা ১০ গান লিরিক্স
শিল্পী: জেমস | ধরন: বাংলা রক | শৈলী: আধুনিক বাংলা গান

বাংলা সংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় নাম জেমস (ফারুক মাহফুজ)। তাঁর গানের অনন্য সুর, কণ্ঠস্বর এবং তাৎপর্যপূর্ণ লিরিক্স হাজারো শ্রোতার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এই নিবন্ধে আমরা জেমস-এর সেরা ১০টি গানের একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ ও গানগুলির প্রভাব নিয়ে আলোচনা করব।
জেমস: বাংলা রক সংগীতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র
ফারুক মাহফুজ, যিনি “জেমস” নামে পরিচিত, তিনি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় রক গায়ক। ১৯৮০ এর দশকে ‘ফিডব্যাক’ ব্যান্ডের সাথে তার সংগীত যাত্রা শুরু হয়, পরবর্তীতে তিনি “নগরবাউল” নামে একটি ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। জেমস এর গানগুলি তার বৈচিত্র্যময় কণ্ঠস্বর, গভীর অনুভূতিপূর্ণ সুর এবং অর্থপূর্ণ লিরিক্সের জন্য পরিচিত। আসুন জেমসের সেরা ১০টি গান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।
১. তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
“তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম” জেমসের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানগুলির মধ্যে একটি। এই গানে অন্ধ প্রেমের বেদনা এবং প্রেমে হারিয়ে যাওয়ার আবেগকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গানটি একটি প্রেমের গল্প বর্ণনা করে যেখানে প্রেমিক সমস্ত সামাজিক বাধা অতিক্রম করে প্রেমে পড়েছে, কিন্তু সেই প্রেম শেষ পর্যন্ত যন্ত্রণায় পরিণত হয়।
গানটি প্রথম প্রকাশিত হয় “নগরবাউল” অ্যালবামে এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। গানটির মূল বৈশিষ্ট্য হল এর আবেগ-ভারী কথা, যা অনেক শ্রোতার হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করেছে।
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম লিরিক্স
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
কি দোষ দিবি তাতে
বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই
সকাল, দুপুর, রাতে
আগুন জ্বেলেও পুড়লাম আমি
দিলাম তাতে ঝাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলো রে বন্ধু
ছিলো পুরোটাই পাপ
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
কি দোষ দিবি তাতে
বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই
সকাল, দুপুর, রাতে
তোর কারনে ভুললাম আমি
গোত্র জাতি কুল
কাঁটার সাথে করলাম সন্ধি
পায়ে পিষে ফুল
কেমন করে সইবো আমি
প্রেম আগুনের তাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলো রে
বন্ধু ছিলো পুরোটাই পাপ
পথ হারানো পথিক হলাম
সব হারিয়ে নিঃস্ব
তোর আমার এই প্রেমের
কি দাম দেবে বিশ্ব
প্রেমের নামে কিনলাম আমি
নিঠুর অভিশাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলো রে বন্ধু
ছিলো পুরোটাই পাপ
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
কি দোষ দিবি তাতে
বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই
সকাল, দুপুর, রাতে
২. হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা
“হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা” জেমসের অন্যতম আবেগময় গান, যা অনেক শ্রোতার চোখে জল এনে দেয়। গানটি জীবনের অনিশ্চয়তা এবং প্রিয়জনের সাথে বিদায়ের বেদনাকে মার্মিকভাবে উপস্থাপন করে। জেমসের অনন্য কণ্ঠ এবং আবেগপূর্ণ উপস্থাপনা গানটিকে আরো হৃদয়স্পর্শী করে তুলেছে।
গানটি বিচ্ছেদের অনিবার্যতা এবং জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। গানের প্রতিটি লাইনে জীবন ও সম্পর্কের অনিশ্চয়তার প্রতি একধরনের আত্মসমর্পণের ভাব ফুটে উঠেছে। জেমসের এই গান বাংলা রক সংগীতের একটি অমর সৃষ্টি হিসেবে বিবেচিত।
হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা
নীরবে, অভিমানে নিভৃতে,
করছো তিলে তিলে নিজেকে শেষ।
কেনো বলো, পৃথিবীতে কেউ কারো নয়?
হয়ে গেছে ভালবাসা নিঃশেষ।
বন্ধু, ভেঙ্গে ফেলো এই কারাগার,
খুলে দাও সে হৃদয়ে প্রণয়ের দ্বার।
হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা,
হতেও পারে এই গানই শেষ গান।
হতেও পারে,
আমাদের এই মিলনমেলা এক ইতিহাস
হতেও পারে,
তোমার শীতল চোখটাই যেন এক উচ্ছাস
হতেও পারে,
বিষাদের এই জনপদ প্রণয়ের তীর্থ
হতেও পারে,
তোমার একটু নীরবতায় সে ব্যার্থ।
হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা,
হতেও পারে এই গানই শেষ গান।
দুঃখ আমার সাথেই আছে,
তবু দেখো দু:খী আমি নইতো।
ডাক দিয়ে যায় প্রণয়-মেলা,
এতেই নিহিত সুখ হয়তো।
কিসের এত দু:খ তোমার?
সারাক্ষণ বসে বসে ভাবছো,
পৃথিবীতে বলো বাঁচবে কদিন
সময়টাতো বড় অল্প।
নীরবে, অভিমানে নিভৃতে,
করছো তিলে তিলে নিজেকে শেষ।
কেনো বলো, পৃথিবীতে কেউ কারো নয়?
হয়ে গেছে ভালবাসা নিঃশেষ।
বন্ধু, ভেঙ্গে ফেলো এই কারাগার,
খুলে দাও, খুলে দাও সে হৃদয়ে প্রণয়ের দ্বার।
হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা,
হতেও পারে এই গানই শেষ গান।
৩. বাবা
“বাবা” গানটি জেমসের সবচেয়ে আবেগপূর্ণ রচনাগুলির মধ্যে একটি। এই গানে একজন সন্তানের পিতার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং পিতাকে হারানোর বেদনাকে অত্যন্ত মার্মিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। গানটি শুধু জেমসের ব্যক্তিগত অনুভূতি নয়, বরং সমগ্র বাঙালি সমাজের পিতা-পুত্রের সম্পর্কের গভীরতাকে প্রতিফলিত করে।
গানের প্রতিটি লাইনে পিতার স্মৃতি, তার অনুপস্থিতিতে অনুভূত শূন্যতা, এবং পিতার অবর্তমানে সন্তানের ভেতরে জমে থাকা হাজারো প্রশ্ন ও অনুভূতিকে অসাধারণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। গানটি অনেক শ্রোতার কাছেই ব্যক্তিগত অনুভূতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে।
বাবা লিরিক্স
ছেলে আমার বড় হবে
মা কে বলতো সে কথা,
হবে মানুষের মত মানুষ এক
লেখা ইতিহাসের পাতায়।
নিজ হাতে খেতে পারতাম না
বাবা বলত, ও খোকা,
যখন আমি থাকবোনা,
কি করবি রে বোকা ?
এতো রক্তের সাখে রক্তের টান
স্বার্থের অনেক উর্ধে,
হঠাৎ অজানা ঝড়ে তোমায় হারালাম
মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।
বাবা কতদিন কতদিন দেখিনা তোমায়
কেউ বলেনা তোমার মত,
কোথায় খোকা ওরে বুকে আয়,
বাবা কত রাত কত রাত দেখিনা তোমায়,
কেউ বলেনা মানিক,
কোথায় আমার ওরে বুকে আয়।
চশমাটা তেমনি আছে
আছে লাঠি ও পাঞ্জাবী তোমার,
ইজি-চেয়ারটাও আছে, নেই সেখানে
অলস দেহ শুধু তোমার।
আজানের ধ্বনি আজো শুনি
ভাঙ্গাবেনা ভোরে ঘুম জানি,
শুধু শুনিনা তোমার সেই দরাজ কন্ঠে পড়া
পবিত্র কোরআনের বানী।
বাবা কতদিন কতদিন দেখিনা তোমায়
কেউ বলেনা তোমার মত,
কোথায় খোকা ওরে বুকে আয়,
বাবা কত রাত কত রাত দেখিনা তোমায়,
কেউ বলেনা মানিক,
কোথায় আমার ওরে বুকে আয়।
৪. জগৎতের ঘুম
“জগৎতের ঘুম” জেমসের সবচেয়ে প্রশংসিত গানগুলির মধ্যে একটি। এই গানে বিরহী প্রেমিকের আকুল আহ্বান এবং প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষার বেদনাকে অনবদ্য ভাষায় ব্যক্ত করা হয়েছে। গানটিতে জেমসের স্বভাবসুলভ আবেগময় কণ্ঠস্বর এবং সুমধুর সুর শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যায়।
প্রতীক্ষার বেদনা, প্রেমের আকাঙ্খা, এবং ভালোবাসার জন্য আকুলতা – এই গানের প্রতিটি লাইনে প্রকাশিত হয়েছে। গানটি বাংলা রমান্টিক গানের এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত। মিষ্টি সুর এবং আবেগপূর্ণ কথার মিশেলে গানটি শ্রোতাদের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলে।
জগৎতের ঘুম লিরিক্স
তোর দুই চোখে জগৎতের ঘুম
ভাঙ্গবে কখন বল,
ঘুম ভাঙ্গলে ডাকিস আমায়
উড়িয়ে আঁচল.
তোর মনেতে জোসনার ফুল
ফুঁটবে কখন বল,
তোর বুকেরেই উতালা ঢেই
উঠবে কখন বল.
তোর দুই চোখে জগৎতের ঘুম
ভাঙ্গবে কখন বল,
ঘুম ভাঙ্গলে ডাকিস আমায়
উড়িয়ে আঁচল.
তোর অন্তরে হারানো চাঁদ
আসবে কখন বল,
তোর হৃদয়ে পাখির পালক
হাসবে কখন বল.
মনেতে জোসনার ফুল
উঠবে কখন বল,
তোর বুকেরেই উতালা ঢেই
উঠবে কখন বল.
দুই চোখে জগৎতের ঘুম
ভাঙ্গবে কখন বল,
ঘুম ভাঙ্গলে ডাকিস আমায়
উড়িয়ে আঁচল.
তোর অন্তরে দুঃখ দ্বারা
পুড়বে কখন বল,
তোর ঘরেতে প্রজাপতি
উড়বে কখন বল.
মনেতে জোসনার ফুল
উঠবে কখন বল,
তোর বুকেরই উতালা ঢেই
উঠবে কখন বল.
তোর দুই চোখে জগৎতের ঘুম
ভাঙ্গবে কখন বল,
ঘুম ভাঙ্গলে ডাকিস আমায়
উড়িয়ে আঁচল…!!!
গানের তথ্য
- অ্যালবাম: প্রেমের নাম
- প্রকাশকাল: ১৯৯৮
- সুরকার: জেমস
- গীতিকার: জেমস
- ধরন: রমান্টিক বেলাড
৫. এত কষ্ট
“এত কষ্ট” জেমসের সবচেয়ে বেদনাদায়ক এবং আবেগপূর্ণ গানগুলির মধ্যে একটি। এই গানে মানুষের অন্তর্নিহিত ব্যথা এবং বেদনাকে অসাধারণ ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে। গানটি একই সাথে হতাশা এবং সেই হতাশার মধ্যেও বেঁচে থাকার সংগ্রামকে দেখায়।
গানের সুর এবং কথা উভয়ই এমন এক গভীর বেদনাদায়ক আবেগকে ধারণ করে যা শ্রোতাদের অন্তরে সহজেই প্রবেশ করে। জেমসের কণ্ঠস্বরে গানটির আবেগ অনেক গুণ বেড়ে যায়। এই গানটি তার অন্যতম সেরা গান হিসেবে বিবেচিত, যা তার সংগীত জীবনে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত।
এতো কষ্ট লিরিক্স
এতো কষ্ট কষ্ট লাগে
কেন অন্তরে..
যেন কান্নার..কবিতা..
তবু হাসতে হাসতে কাঁদি
আমি ভুল করে..
আঁকি ব্যাথার, ছবিটা…
এতো কষ্ট কষ্ট লাগে
কেন অন্তরে..
যেন কান্না.. কবিতা..
তবু হাসতে হাসতে কাদি
আমি ভুল করে..
আকি ব্যথা.. ছবিটা..আ..
পাবো হায়..সুখের দেখা কি..
নিঃসঙ্গ এই আমি একাকী..
পাবো হায়, সুখের দেখা কি..
নিঃসঙ্গ এই আমি একাকী-ই..
কেউ জানে কি,কেউ জানে কি
কতটাই আমি..আজ একাকী..
কেউ, জানে, জানে,কি..
কেউ জানে কি…
কতটাই আমি..আজ একাকী..
৬. পাগলা হাওয়া
“পাগলা হাওয়া” জেমসের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং উৎফুল্ল গানগুলির মধ্যে একটি। এটি বন্ধুর প্রতীক্ষার এক মনোরম চিত্র অঙ্কন করে, যেখানে বাতাসের তোড়ের বর্ণনা এবং সেই তোড়ে প্রদীপের নিভে যাওয়ার ভয় উভয়ই অসাধারণভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
গানটি খুব সহজ কথায় একটি গভীর আবেগকে প্রকাশ করেছে। প্রতীক্ষারত ব্যক্তির হৃদয়ের আকুলতা, আশা-নিরাশার দোলাচল, এবং প্রিয়জনের আগমনের আনন্দ – এই সবকিছুই গানের মধ্যে সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। জেমসের কণ্ঠে গানটি একটি অনন্য মাত্রা পেয়েছে।
পাগলা হাওয়ার লিরিক্স
পাগলা হাওয়ার তোড়ে
মাটির পিদিম নিভু নিভু করে
পাগলা হাওয়ার তোড়ে
মাটির পিদিম নিভু নিভু করে
ওরে ওরে হাওয়া থামনা রে
বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
ওরে ওরে হাওয়া থামনা রে
বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
চন্দ্র গেছে দূর পরবাসে
তারা জ্বলেনি ঐ আকাশে
মাটির পিদিম নিভে গেলে
বন্ধুরে দেখব কি করে
চন্দ্র গেছে দূর পরবাসে
তারা জ্বলেনি ঐ আকাশে
মাটির পিদিম নিভে গেলে
বন্ধুরে দেখব কি করে
ওরে ওরে হাওয়া থামনা রে
বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
ওরে ওরে হাওয়া থামনা রে
বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
বিজলী চমকালো না এসে
জোঁনাক গুলো নেইকো পাশে
পিদিম রে তুই নিভে গেলে
বন্ধুরে চিনব কি করে
বিজলী চমকালো না এসে
জোঁনাক গুলো নেইকো পাশে
পিদিম রে তুই নিভে গেলে
বন্ধুরে চিনব কি করে
ওরে ওরে হাওয়া থামনা রে
বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
ওরে ওরে হাওয়া থামনা রে
বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
পাগলা হাওয়ার তোড়ে
মাটির পিদিম নিভু নিভু করে
পাগলা হাওয়ার তোড়ে
মাটির পিদিম নিভু নিভু করে
ওরে ওরে হাওয়া থামনা রে
বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
ওরে ওরে হাওয়া থামনা রে
বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
পাপ্পা পারাপ্পা প্পাপারাপপ্পা
পাপ্পা পারাপ্পা প্পাপারাপপ্পা
হে পাগলা হেহ হাওয়া হে পাগলা
হে পপাগলা ও বন্ধু আসছে বহুদিন পরে
৭. এক নদী যমুনা
“এক নদী যমুনা” জেমসের এক অনবদ্য সৃষ্টি, যেখানে নদীর রূপক ব্যবহার করে হৃদয়ের গভীর ব্যথা এবং আত্ম-সম্মান রক্ষার সংগ্রামকে তুলে ধরা হয়েছে। গানটিতে জেমসের কণ্ঠস্বরের গভীরতা এবং আবেগ শ্রোতাদের হৃদয়কে স্পর্শ করে।
গানটি একজন মানুষের নিজের অশ্রু সামলে রাখার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা এবং প্রেমের ব্যথাকে মেনে নেওয়ার মর্মবেদনাকে উপস্থাপন করে। নদী যেমন নিজের জল সাগরে মিশিয়ে দেয়, তেমনি এক মানুষের আবেগও জীবনের গতিপথে হারিয়ে যায় – এই রূপকটি গানে অসাধারণভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
এক নদী যমুনা লিরিক্স
আমি আর আমার দু’চোখ কখনো জলে ভেজাবো না
এ ব্যথা আমারই থাক, চাই না কারও সান্ত্বনা
পৃথিবী ভালবাসে না, ভালবাসতেও সে জানে না
পৃথিবী ভালবাসে না, ভালবাসতেও সে জানে না
কান্নায় লাভ নেই, কান্নায় হবে না কোনোদিন পদ্মা-মেঘনা
দিনের আলোয় শুকিয়ে যাবে সে
হবে না তো এক নদী যমুনা
টেনে নিয়ে বুকের কাছে,
ছুঁড়ে দেয় ধূলোর মাঝে
ভালবাসার নিয়ম মানি না
তাইতো অশ্রু এখন আসে না
দিও না, দিও না, সান্ত্বনা
কান্নায় লাভ নেই, কান্নায় হবে না কোনোদিন পদ্মা-মেঘনা
দিনের আলোয় শুকিয়ে যাবে সে
হবে না তো এক নদী যমুনা
ডুবেছিল মায়াজালে হৃদয়
সেই ক্ষত এখনো কথা কয়
ভালবাসার নিয়ম মানি না
তাইতো অশ্রু এখন আসে না
দিও না, দিও না, সান্ত্বনা
কান্নায় লাভ নেই, কান্নায় হবে না কোনোদিন পদ্মা-মেঘনা
দিনের আলোয় শুকিয়ে যাবে সে
হবে না তো এক নদী যমুনা
গানের তথ্য
- অ্যালবাম: নিঃসঙ্গতা
- প্রকাশকাল: ১৯৯৯
- সুরকার: জেমস
- গীতিকার: জেমস
- ধরন: আত্ম-স্বীকৃতির গান
৮. জলের কোলে কার ছায়া
“জলের কোলে কার ছায়া” জেমসের অত্যন্ত জনপ্রিয় রমান্টিক গানগুলির মধ্যে একটি। এই গানে অসম্ভব প্রেমের আকাঙ্খা এবং প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষার যন্ত্রণাকে বর্ণনা করা হয়েছে। গানটির সুরে একই সাথে উৎসাহ এবং ব্যথা দুই-ই মিশে আছে।
গানটিতে প্রেমের জন্য অপেক্ষা, প্রিয়জনের জন্য অকৃত্রিম ভালোবাসা, এবং সকল বাধা উপেক্ষা করে ভালোবাসার পথে এগিয়ে যাওয়ার আকুলতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। জেমসের কণ্ঠস্বর এবং সুরের মোহনীয় মিশ্রণে গানটি বাংলা প্রেমের গানগুলির মধ্যে এক অনন্য স্থান দখল করে আছে।
জলের কোলে কার ছায়া লিরিক্স
জলের কোলে কার ছায়া
চেনা চেনা লাগে,
বন্ধু আমার স্নান করেছে খানিক সময় আগে!
এই জলের ঢেউ শ্যাওলা পাতা কেমন তোরা রে?
বন্ধু কখন চলে গেলো
খবর দিলিনে।
আমি সারাটাদিন জলেই থাকি ছিপটি হাতে,
বন্ধু আমার কখন যেন
নেমে আসে জলে!
এই জলের ঢেউ শ্যাওলা পাতা কেমন তোরা রে?
বন্ধু কখন চলে গেলো
খবর দিলিনে।
আমি সারাটা রাত জলেই থাকি ঢেউ গোনার ছলে,
আরে বন্ধু আমার কখন যেন নেমে আসে জলে!
এই জলের ঢেউ শ্যাওলা পাতা কেমন তোরা রে?
বন্ধু কখন চলে গেল
খবর দিলিনে।
জলের কোলে কার ছায়া
চেনা চেনা লাগে,
বন্ধু আমার স্নান করেছে খানিক সময় আগে!
এই জলের ঢেউ শ্যাওলা পাতা কেমন তোরা রে?
বন্ধু কখন চলে গেলো
খবর দিলিনে।
৯. মন আমার পাথরের দেয়াল সে
“মন আমার পাথরের দেয়াল সে” জেমসের অন্যতম অনুপ্রেরণাদায়ক গান, যা জীবনের যাত্রা এবং অবিরাম চলমানতার প্রতীক। এই গানে জীবনের সংগ্রাম, পথচলার কষ্ট এবং সেই পথে অবিচল থাকার প্রেরণাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
গানটিতে জীবনের নানা বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ়তাকে প্রকাশ করা হয়েছে। জেমসের কণ্ঠস্বরে গাওয়া এই গানটি শ্রোতাদের মনের মধ্যে এক অনন্য সাহসের সঞ্চার করে। জীবনের পথযাত্রায় অনেক মানুষকেই এই গান অনুপ্রাণিত করেছে।
মন আমার পাথরের দেয়াল সে লিরিক্স
মন আমার পাথরের দেয়াল সে এক
যত আঘাত করো সব সহ্য করেই যাবে
মন আমার তুমি যত দূরে যাও
আজীবন তোমাকে ভালোবেসে তবু যাবেই
কত ভালোবাসা তোমার জন্য রাখা
সে কথা তুমি যদি জানতে
বুক চিরে দেখাতে পারলে
লুকিয়ে চোখ তুমিও কানতে
ভালোবাসা আমার সুদৃশ্য কাঁচ তো নয়
একটু আঘাতে চূর্ণ সে হবেই
এই ভালোবাসা গোলাপের পাপড়ি নয়
একটু বাতাসে ঝরে কেন যাবে?
এই ভালোবাসা গোলাপের পাপড়ি নয়
একটু বাতাসে ঝরে কেন যাবে?
কত ভালোবাসা তোমার জন্য রাখা
সে কথা তুমি যদি জানতে
বুক চিরে দেখাতে পারলে
লুকিয়ে চোখ তুমিও কানতে
এই ভালোবাসা গিটারের সুরে বাঁধা
মিলনের সুর সে তো তুলে যাবেই
মনের মিছিল এতটা ছোট নয়
তোমার সামনে স্লোগান সে দেবেই
মনের মিছিল এতটা ছোট নয়
তোমার সামনে স্লোগান সে দেবেই
কত ভালোবাসা তোমার জন্য রাখা
সে কথা যদি তুমি জানতে
বুক চিরে দেখাতে পারলে
লুকিয়ে চোখ তুমিও কানতে
মন আমার পাথরের দেয়াল সে এক
যত আঘাত কর সব সহ্য করেই যাবে
মন আমার তুমি যত দূরে যাও
আজীবন তোমাকে ভালোবেসে তবু যাবেই
কত ভালোবাসা তোমার জন্য রাখা
সে কথা যদি তুমি জানতে
বুক চিরে দেখাতে পারলে
লুকিয়ে চোখ তুমিও কানতে
গানের তথ্য
- অ্যালবাম: চলতি গরম
- প্রকাশকাল: ২০০২
- সুরকার: জেমস
- গীতিকার: জেমস
- ধরন: অনুপ্রেরণামূলক রক
১০. ফুল নেবে না অশ্রূ নেবে বন্ধু
“ফুল নেবে না অশ্রূ নেবে বন্ধু” জেমসের অন্যতম লোকজ আধুনিক গান, যা বাঙালি লোকসঙ্গীতের সুর নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। গানটিতে সারেংগা বাদ্যযন্ত্রের প্রতি আকর্ষণ এবং তার মাধুর্যকে উপস্থাপন করা হয়েছে। গানটির লয় এবং সুর শ্রোতাদের মনে এক গভীর অনুরণন সৃষ্টি করে।
এই গানে জেমস আধুনিক রক সঙ্গীতের সাথে বাংলার লোকজ সুরের এক অনবদ্য মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। গানের ভাষা, এর উপমা এবং চিত্রকল্পগুলি বাংলার গ্রামীণ জীবনের সাথে দর্শকদের সংযোগ স্থাপন করে। এই গানটি জেমসের শিল্পী-জীবনে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
ফুল নেবে না অশ্রূ নেবে বন্ধু লিরিক্স
ফুল নেবে না অশ্রূ নেবে বন্ধু।
যদি ফুল ফিরিয়ে দাও
তবে দিতে পারি তোমায়
এই দুচোখের ভর উঠা জলধারা।।
যদি তুমি না আস এ হৃদয় গহীনে
নিঃস্বাসে লাভ কি?
বাঁচা কোন কারণে
দেরি নয় দেরি নয় সুন্দরীতমা
চিৎকার করে বল
ভাল নেই তুমি ছাড়া।।
শুধু তোমার সম্মতিতে
পৃথিবী আমার হাসে
বুঝবে সে জন শুধু
যে মানুষ ভালবাসে
দেরি নয় দেরি নয় সুন্দরীতমা
চি”কার করে বল
ভাল নেই তুমি ছাড়া।।
যদি ফুল ফিরিয়ে দাও
তবে দিতে পারি তোমায়
এই দুচোখের ভর উঠা জলধারা।।
জেমসের সংগীত যাত্রা
ফারুক মাহফুজ, জেমস নামে পরিচিত, বাংলাদেশের সংগীত জগতে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৯৭৬ সালে “ফিডব্যাক” ব্যান্ডের সাথে তার সংগীত জীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে তিনি “নগরবাউল” ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাংলা রক সংগীতের জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।
জেমসের গানগুলি বিষয়ভিত্তিক বৈচিত্র্যে পূর্ণ – প্রেম, বিরহ, সমাজ-সচেতনতা, মানবিক মূল্যবোধ ও আত্ম-জিজ্ঞাসা। তার গানগুলিতে তিনি সমাজের নানা দিক তুলে ধরেছেন, যা শ্রোতাদের গভীরভাবে আকৃষ্ট করে।
উপসংহার
জেমস বাংলাদেশের সংগীত জগতে এক অনন্য প্রতিভা এবং তার গানগুলি বাঙালি সংগীতপ্রেমীদের হৃদয়ে এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তার সুমধুর কণ্ঠস্বর, বাস্তবধর্মী লিরিক্স এবং মনোমুগ্ধকর সুর লক্ষ লক্ষ শ্রোতাকে মুগ্ধ করেছে। আশা করি আমাদের এই নিবন্ধটি তাঁর সেরা ১০টি গান সম্পর্কে একটি সমৃদ্ধ ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছে।