back to top

২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ

- Advertisement -

২০২৪ সালের টপ ১২ ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজঃ

1) PILL

2) Gyaarah Gyaarah

3) Brinda (Tamil)

4) Poacher (Malayalam)

5) Maamla Legal Hai

6) Raat Jawaan Hai

7) 1000 Babies (Malayalam)

8) IC 814: The Kandahar Attack

9) Freedom at Midnight

10) Ranneeti: Balakot & Beyond

11) Shekhar Home

12) Murder in Mahim

———————————————————

1) PILL

Pil web series, ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ, ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ

ওষুধের প্রতি মানুষের নির্ভরতা এই আধুনিক সময়ে এসে আরো বেড়েছে৷ পরিবেশ যেভাবে বিপজ্জনক করে তোলা হয়েছে তা আর হবে নাইবা কেন! ওষুধের প্বার্শপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সিনেমা তো হয়েছে; তবে ইদানীংকালে ওষুধের প্রক্রিয়াজাতকরণ, বড় ফার্মাদের দুর্নীতি, মানুষকে সুস্থ করার নামে বিলিয়ন ডলার কোম্পানি হয়ে উঠবার প্রতিযোগিতা নিয়ে বেশ কাজ হচ্ছে। ২০২৩ সালের সিরিজ ‘দ্য ফল অফ দ্য হাউজ অফ আশার’ এইমুহূর্তে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ উদাহারণ। ‘ওপিওয়েড ক্রাইসিসকে’ মূলে রেখে এক সুবিশাল ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির দুর্নীতিকে অ্যাডগার অ্যালান পো’র গল্পে বেঁধে অনবদ্য এক সিরিজ হয়েছে সেটা। ‘ক্রাইসিস’ (২০২১), ‘পেইন হাসলারস’ (২০২৩) এই সিনেমাগুলোর পাশাপাশি ‘ডোপসিক’ সিরিজও এই ওপিওয়েড ক্রাইসিস নিয়ে। তো পিলের সেই ভয়াবহতা এবার চিত্রায়িত হলো বলিউডেও, ‘পিল’ সিরিজটার মাধ্যমে।

লোভী ও দুর্নীতিবাজ বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি, ওষুধ বিক্রেতা ও ডাক্তারদের অসততা, ঘুষ খেয়ে মেডিকেল কাউন্সিলের অপরাগতা, ওষুধ উৎপাদনের কারখানায় কোনরকম নিরাপত্তা ও সূক্ষ্মতা না যাচাই করে উৎপাদন করা; এসবের গোটা নেক্সাসকে ঘিরে এই সিরিজ। মানে; ওষুধ উৎপাদন হতে শুরু করে রোগীর হাত অব্দি যাওয়া পর্যন্ত যত পক্ষ থাকে জড়িয়ে, সকলের দুর্নীতিকে সমূলে উৎপাটন করা নিয়েই মেডিকেল ড্রামা-থ্রিলার ‘পিল’।
সামান্য কাশির সিরাপ থেকে শুরু করে লক্ষ লক্ষ মানুষের ডায়াবেটিসের ওষুধ সবগুলোতেই কীভাবে রোগী সুস্থ হবার নামে অসুস্থ হয়ে মারা পড়ছে, কিডনি ড্যামেজসহ আরো ভয়ংকর ব্যাধিতে পড়ছে সেটাকে সবিস্তারে বয়ান করে এই সিরিজ৷ কীভাবে লাভ করার জন্য ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো ওষুধের ভেতরে থাকা কেমিক্যালগুলোর যথাযথ মিশ্রণে গুরুত্ব না দিয়েই নিম্নমানের নতুন ব্যাচ বাজারে আনে এবং বায়োলজিস্টরা গুরুত্ব না দিয়েই সেগুলোকে এপ্রুভ করে (ঘুষ নিয়ে), এমনকি ফেইল হওয়া ব্যাচকেও নতুন ব্যাচ নাম্বার দিয়ে ও মেয়োদোত্তীর্ণ ওষুধের ট্যাগ বদলে বাজারে আনা হয়- সেসবকে একদম গোড়া থেকে ধরে এই সিরিজ৷ এমনকি ল্যাব-র‍্যাট বানিয়ে গরীব মানুষদের বিনামূল্যে ওষুধের নামে এসব গেলানো হয় ও বড় বড় রোগ বাসা বাঁধলে কোনরকম ঘা না করে এদেরকে লুকিয়ে রাখা হয়। এক নবিশ ও প্যাশনেট সাংবাদিক এবং একজন মাইক্রো বায়োলজিস্টের হুইসেল ব্লোয়িংয়ে বিশাল এই মেডিকেল দুর্নীতি সামনে আসে, যেটাকে এগিয়ে নিয়ে যায় একজন সৎ মেডিসিন কাউন্সিল ও তার দল।

মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বানানো এই দারুণ গল্প প্রেক্ষাপট হিসেবে বেছে নেয় পাঞ্জাবকে। এবং সেটার আদর্শ ব্যবহার করে। স্বাস্থ্যখাতের মতো এই বড় খাতে দুর্নীতি কীভাবে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়েছে সেটাকে বহু লেয়ারে তুলে আনে এই সিরিজ। মানুষকে সুস্থ করার নামে নির্বিকারভাবে এভাবে মৃ’ত্যুর মুখে ঠেলে দেবার চিত্র দেখে বিবমিষা ও বিভীষিকা জাগে। চিত্রনাট্যটা ওমন বিশদভাবেই লেখা৷ ৮ এপিসোডের এই সিরিজ মূলে ড্রামা হলেও, থ্রিলারের গতিতেই দৌড়ায়। শুরুতে যেটুকু সময় নেয়, প্রত্যেকটা চরিত্র; প্রত্যেকটা পক্ষকে ভালোভাবে দাঁড় করাতে- যথাযথ উদ্দেশ্য নিয়ে, সেটা ন্যায্য। তবে একেবারে কেন্দ্রীয় ন্যারেটিভে ঢোকার ক্ষেত্রে আরেকটু কম সময় ব্যয় করা দরকার ছিল। যাক, সেটা ওভাবে প্রশ্ন জাগায় না। কিন্তু কিছু সাবপ্লট ভালোভাবে গুটিয়ে আনা দরকার ছিল। এতে সংসক্তি নষ্ট হয়েছে। আর যার কারণে শেষে গিয়ে ফর্মুলা এবং সিনেম্যাটিক অলংকারের উপর নির্ভর করতে হয়েছে। দিলবাগের মেয়ের কোণ, একতা ক্যাম্প- এসবকিছুতে আরো বিবরণ দরকার ছিল। অন্যদিকে, দর্শককে যুক্ত রাখার আর উত্তেজনায় রাখাফ কাজটা প্রতিটা এপিসোড ভালোভাবেই করেছে। প্রত্যেকটা এপিসোডেই আলাদা আলাদাভাবে যেভাবে তিন অংকের সমতা রাখা হয়েছে, সেটা বেশ দারুণ৷ দর্শককে অনুনাদি হবার মুহূর্ত যেমন দেয়, তেমনি এই বিস্তৃত দুর্নীতির চিত্র দেখে ভয় আর হতাশার অনুভুতিও জাগাতে সক্ষম হয়েছে রাজকুমার গুপ্তার এই সিরিজ। এই সিরিজের সহলেখক, পরিচালক এবং ক্রিয়েটর তিনিই৷ ‘আমির’, ‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা’, ‘রেইড’- এর মতো ভালো সিনেমাগুলো তারই বানানো। বয়ানের উপর সম্পূর্ণ দখল ছিল তার। সিরিজের ‘ইনসাইটিং ইন্সিডেন্ট’, চরিত্রায়ন, দ্বন্দ্ব আর জটিলতাগুলোর সৃষ্টি ও ফলাফল সবেতেই একটা নিয়ন্ত্রিত ভঙ্গী আছে তার। বক্তব্যটাকে তীর্যক রেখেই এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন সিরিজটা৷ সাথে এমন ড্রামাটিক চরিত্রে রিতেশ দেশমুখের অপ্রত্যাশিত এবং সুদক্ষ অভিনয় একটা যোগ্য প্রোটাগনিস্ট ও পাওয়ান মালহোত্রার শীতল; সূক্ষ্ম অভিনয় দারুণ একটা অ্যান্টাগনিস্ট দাঁড় করিয়েছে৷

মেডিকেল দুর্নীতিকে সমূলে উৎপাটনে এই সিরিজ একটু বেশিই সৎ হয়ে গেছে সমাপ্তিতে, সেটা ইন্ডিয়ান ফর্মুলার কারণেই। বাস্তবে এতটা আশাবাদের চাষ অবশ্য করতে পারা যায় না। শেকড়প্রোথিত বাস্তবতাকে শুরু থেকেই যেভাবে চিত্রণ করেছে এই সিরিজ, শেষে ওতে থাকলে অবশ্য মূলধারার দর্শকের সন্তুষ্টি কমে যেত। কারণ দর্শক তো জেতার অনুভূতিই চায় সমাপ্তিতে। সেই সিনেম্যাটিক অলংকারে ‘পিল’ ভিড়লেও, উদ্দেশ্য থেকে সরে আসেনি- সেটাই বড়কথা। এই সত্য, এই চিত্র নিয়ে কাজ হওয়া দরকার ছিল। ‘পিল’ তাই, তার বিষয়াদির জন্যও যেমন গুরুত্বপূর্ণ; তেমনি সিরিজ হিসেবেও চিত্তাকর্ষক!

কোথায় দেখবেন: Jio Cinema

2) GYAARAH GYAARAH: ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ, Indian web series,

কোরিয়ান সিরিজ ‘সিগন্যাল’- এর ভারতীয় অ্যাডাপ্টেশন। এবং একটা যোগ্য অ্যাডাপ্টেশন। একটা ওয়াকি টকি দিয়ে দুই সময়ের দুই পুলিশের যোগাযোগ এবং নানান কেইসের অতীতের ক্লু বর্তমান থেকে দিয়ে অতীতের ফলাফল বর্তমানে বদলানোর এই ফ্যান্টাসি থ্রিলার সিরিজ মূল নির্যাসটাকে একদম আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে নিজের মতো করে। প্রথম ৬ এপিসোড তো রীতিমতো শ্বাসরুদ্ধকর এক উত্তেজনার রাইড উপহার দেয়। চিত্রনাট্যের বুনন যেমন শক্ত আর রহস্যে ভরপুর, পরিচালনাও তেমন গতিময়; টাইট আর চৌকস। শেষ ২ এপিসোড একটু ডিস্ট্র্যাক্ট করে কারণ, মূল গল্পটায় তখনি ঢুকে। কোরিয়ানটা ১৬ এপিসোডের। এটা ৮ এপিসোড করে ২ সিজনে নামবে। তাই এই সিজনে একটা সমাপ্তিতে পৌঁছানোর আবশ্যকতা তো ছিলই। ওটাকে টোনালি আরো ব্যাল্যান্স করা উচিত ছিল, একটু খেলো হয়ে গেছে। তবে এক বসায় দেখে শেষ করা ছাড়া উঠতে দেয় না এই সিরিজ। সুদক্ষ কাজ।

কোথায় দেখবেন: Zee5

3) BRINDA:

Brinda, web series, hindi web series, ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ

মানুষের অন্ধ ধর্মবিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মতো সিরিয়াস বিষয়াদিকে নিয়ে এক দুর্দান্ত ক্রাইম-থ্রিলার হয়েছে এই তামিল সিরিজটা। ইদুর-বিড়াল খেলার এই টানটান ন্যারেটিভের মূলধারার গল্পে এমন ফিলোসফিক্যাল গভীরতা, তাও আবার ইন্ডিয়ান সিরিজে, পাওয়া হয় বড়জোর কিঞ্চিৎ/কদাচিৎ। কিলারের অবিশ্বাসের ফিলোসফিটাও নুয়্যান্সড। তাইতো, ইঁদুর-বিড়াল খেলাটা আরো জমেছে। কোনপক্ষের দিকেই পুরোপুরি না গিয়ে, অফেন্সিভ না হয়ে দারুণ ভাবনা উদ্রেককারী জায়গা দিয়েছে এই সিরিজ। কিছু ছোটখাটো ত্রুটি আছে, সেসব তৈরি হয়েছে রেড হেরিং হিসেবে থ্রিলারের উপাদান ব্যবহারের ফলে। কিন্তু চমকপ্রদ লেখনী, সুগভীর বক্তব্য ও চরিত্র এবং সুদক্ষ ফিল্মমেকিংয়ের এই সিরিজ, দেখা দরকার অবশ্যই।

কোথায় দেখবেন: Sony LIV

আরো জানুন দেবের নতুন মুভি সম্বন্ধে: রঘু ডাকাত “Raghu Dakat

4) POACHER: Poacher web series, ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ

মালায়ালী এই সিরিজ, নির্বিচারে হাতি হ’ত্যা করে হাতির দাঁত পাচার করার বিশাল নেক্সাস নিয়ে তৈরি। হাতির দাঁত পাচারে ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পাচার সিন্ডিকেটকে ট্র্যাক ডাউন করার এই ঘটনা গড়পড়তা শিকার ধরার যেসকল বলিউডি ন্যারেটিভ তাতে ভিড়েনি। বরঞ্চ, একদমই বাস্তবিক রেখে; পর্যাপ্ত সময়ক্ষেপন করে এই ট্র্যাক ডাউনের ঘটনা এবং এই বিপদজনক কাজে জান বাজি রেখে কাজ করে যাওয়া পুলিশ, ফরেস্ট সার্ভিস অফিসার, এনজিওকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিটাকে ড্রামাটিক ন্যারেটিভে তোলে। গোটা গল্পটা এত বাস্তবিক আর ড্রামাটিক্যালি নুয়্যান্সড হবার কারণ হলো এই সিরিজের ক্রিয়েটর, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক রিচি মেহতা। এর আগে ‘দিল্লী ক্রাইম’ সিরিজও তার তৈরি করা। মালায়ালী সেটিংয়ের যেই একটা গ্রাউন্ডেড ও ন্যাচারাল (সকলের অভিনয়ও যেমন) ভাইব থাকে, সেটা অক্ষুণ্ণই আছে এই সিরিজে। হিরোইজমে ভর করেনি, তদন্ত; খুঁজে বের করা ও শিকারের বাস্তব প্রক্রিয়াতেই গিয়েছে বলে ‘পোচার’ ড্রামাটিক্যালি প্রগাঢ একটা জায়গা পেয়েছে। এরকম একটা সিরিয়াস গল্পকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য এমন একটা অথেন্টিক ন্যারেটিভেরই দরকার ছিল, যেটা রিচি মেহতা উপহার দিয়েছেন।

কোথায় দেখবেন: Amazon prime

5) MAAMLA LEGAL HAI: Maamla legal hai, ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ

ইন্ডিয়ার লিগ্যাল সিস্টেমকে বিদ্রুপ করে বানানো তুখোড় উইটি কমেডি-ড্রামা সিরিজ। ইন্ডিয়ার লিগ্যাল সিস্টেমে যত অ্যাবসার্ডিটি সবকিছুকে কড়া ঠাট্টাবিদ্রুপে রূপ দেওয়া এই সিরিজ কিন্তু কোন বানোয়াট গল্পে যায়নি। বানরের উপর মামলা, তোতার উপর মামলা, জেলে বিয়ে ও বাচ্চা নেওয়ার ঘটনা- এই সব অ্যাবসার্ড কেইসই বাস্তব। পত্রিকার খবর থেকে নেওয়া সব ঘটনা। আর হাস্যরসের পরতে এই সিরিজ লিগ্যাল সিস্টেমের দৈনতা, দুর্দশা ও সীমাবদ্ধতাকে সামনে আনে। সাথে ড্রামাটাও কি সুন্দর করে তৈরি করা। এসকল ঘটনায় হারিয়ে যায়নি চরিত্রগুলোর নিজস্ব জায়গাটা। কোর্টের বাইরে আইনজীবীদের সংগ্রাম, রাজনীতি এবং সেই সংগ্রামই কীভাবে আবার কোন উদ্ভট হাস্যরসের জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে; তাও উপস্থাপন করে এই সিরিজ। উইটি, নুয়্যান্সড লেখনী। আর তা হবে নাইবা কেন! পেছনে জড়িত টিমটা যে টিভিএফ- এর। প্রযোজক আর ক্রিয়েটর তারাই। তাইতো সিরিজের আবহটা এতটা গ্রাউন্ডেড থেকেছে সব দিকেই। সাথে আছে পরীক্ষিত সকল অভিনেতাদের একটা নিখুঁত অনসম্বল। আরো সিজনের অপেক্ষায় থাকব।

কোথায় দেখবেন: Netflix

6) RAAT JAWAAN HAI: Raat jawaan hai, web series, ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ

অভিনেতা সুমিত ব্যাসের প্রশংসা প্রাপ্য এমন সরল, সুন্দর একটা সিরিজ উপহার দেওয়ার জন্য। সুমিত ব্যাস তো টিভিএফের ঘরেই ছিল। তাই সিরিজটার সরল বিষয়াদি আর হাস্যরসে টিভিএফ- এর ভাইবটা যথাযোগ্যভাবেই পাওয়া যায়। সদ্য বাচ্চার মা-বাবা হওয়া ৩ বন্ধুর গল্প এটা। সারাদিনের ঝুটঝামেলার পর, রাতে তারা একসাথে আড্ডা দেয় আর নানান জটিলতা শেয়ার করে। এই বন্ধুরা এখনো তাদের যৌবন বয়সে। তাই বাচ্চার বাবা-মা হলেও পূর্ণ ম্যাচিউরিটি আসেনি। রোজকার ঝঞ্ঝাট কীভাবে তাদের ধীরে ধীরে প্যারেন্টিংয়ের শিক্ষাটা দিচ্ছে এবং আরো দায়িত্বসম্পন্ন করে তুলছে, তা নিয়েই সিরিজ। এবং শেষও হয় তারা বাবা-মা হবার মূল জটিলতা আর বাবা-মা হিসেবে পূর্ণ পরিপক্বতা পাবার জায়গাটা কীভাবে উপলব্ধি করে, তা দিয়ে। সিরিয়াল থেকে আসা বরুণ সোবতি সহ বাকি ২ বন্ধুর অভিনয়ও সুন্দর। তাদের রসায়নটা অনুনাদ তোলার মতো গভীর হয়েছে। চিত্রনাট্যও কি সুন্দর! ঘটনাগুলো যেভাবে ঘটছে, তাদের জীবনটা যেভাবে এগোচ্ছে; সবকিছুতেই একটা অর্গানিক ব্যাপার আছে। লেখনী মসৃণ হবার কারণেই তো। উইটের জায়গায়ও পোক্ত। আর সুমিত ব্যাস জানে কীভাবে ধৈর্য্য আর মায়া দিয়ে এমন একটা গল্প বয়ান করতে হয়। সুন্দর পরিচালনা। এমন নিটোল সুন্দর সিরিজের আরো সিজন চাওয়া যেতেই পারে।

কোথায় দেখবেন: Sony LIV

7) 1000 BABIES: ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ, 1000

মালায়ালি এই ক্রাইম থ্রিলার সিরিজের সবচেয়ে বড় চমকটা লুকিয়ে আছে এর গল্পতেই। গল্পটাই এত ইউনিক যে, রুটিন ইনভেস্টিগেটিভ ড্রামা’টাকে তখন ফিকে মনে হয়। গল্পটা সম্বন্ধে খুব একটা কিছু বলা ঠিক হবে না। শুধু বলা যায়, ১০০০ নবজাতক শিশুর অদলবদলের এক অবিশ্বাস্য, লোমহর্ষক গল্প! অনেক বছর আগের যেই ভয়ঙ্কর অতীত প্রকাশ পেলেই সবকিছু টালমাটাল হয়ে যাবে। ৭ এপিসোডের এই সিরিজ প্রথম এপিসোডে ব্রুডিং আর গা শিরশিরে একটা আবহকে ধীরেধীরে গড়ে তুলে। এরপর থেকেই রুদ্ধশ্বাস গতিতে ছুটে চলেছে। দুর্দান্ত সব ড্রামাটিক হেফট আছে। তদন্তে থাকা অফিসার যখন তার সদ্য জন্মানো বাচ্চাটা হাতে নেয়, তখন তার চোখে যেই দ্বন্দ্ব, সন্দেহ খেলে যায়- ওই ড্রামাটিক মুহূর্তটাই তো গোটা সিরিজের ওজনদার ড্রামার সবচেয়ে বড় হাইলাইট, রহমানের দারুণ অভিনয়ের প্রশংসাও করতে হয়। অ্যান্টি-ক্লাইম্যাক্টিক শেষটাও একটা প্রভাবপূর্ণ জায়গায় পৌঁছেছে। নাজিম কয়ার বুদ্ধিদীপ্ত লেখনীর ও টাইট পরিচালনার এই টানটান ন্যারেটিভের বিঞ্জ কোয়ালিটি আর চিন্তা উদ্রেককারী জায়গা; দুটোই আছে।

কোথায় দেখবেন: Apple TV and Disney hotstar

9) FREEDOM AT MIDNIGHT: ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ

‘৪৭ এর দেশভাগের প্রেক্ষাপটে এই হিস্ট্রিক্যাল সিরিজ৷ নিখিল আদভানি ক্রিয়েটর ও পরিচালক হওয়ায় একটা ব্যাপারে চিন্তাহীন ছিলাম; তা হলো ইতিহাসভিত্তিক ড্রামাকে অত্যন্ত সহজ সরল বয়ানে, আর স্টাইলিশ তরিকায় গতিময় করে দেখাতে পারেন। খুব বেশি নীতিবাগীশ হবার প্রবণতা তার নাই। খুব একটা পক্ষপাতীও হন না। অবশ্যই এটা যেহেতু ভারতীয় সিরিজ, তাই ওটার স্বাভাবিক একটা কোণ থাকবে৷ তবে জিন্নাহ-নেহেরুদের রাজনীতির বাকবিভঙ্গ থেকে গান্ধীর আহাজারি, তার তীব্র বেদনা আর দেশভাগ কীভাবে ঐক্যের দেয়াল গুঁড়িয়ে ধর্মের দেয়াল গড়ে- সেই ইমোশনাল লেন্সটাকে ধরা হয়েছে। কৃষণ চন্দরের লেখার মতো! আদভানির ড্রামাটাইজেশন ভালো। সুষম আর সংহতিপূর্ণ ন্যারেটিভ৷ মাঝেমাঝে উত্তেজনায় পূর্ণ কিছু মুহূর্ত পাওয়া গেছে, যেখানটায় দরকারী৷ ভালো রি-টেলিং। কাস্টিংটা ফ্রেশ এবং তাদের বেশিরভাগই ঐতিহাসিক ফিগারগুলোকে প্রাণ দিতে সফল হয়েছে।

কোথায় দেখবেন: Sony LIV

10) RANNEETI:Ranneeti, ২০২৪ সালের টপ ১২টি ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজ

ভারত পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব/যুদ্ধ নিয়ে ভারত একপাক্ষিক সিনেমা তো আর কম বানায়নি। সেই বহুল ব্যবহৃত অলঙ্কারে এই সিরিজ একটা ফ্রেশ ন্যারেটিভ দিয়েছে। তা হলো, বর্তমান সময়ে ন্যারেটিভ তৈরির যুদ্ধ। ময়দানে আসল যুদ্ধের পর আরেকটা বড় যুদ্ধ তো আজকের দুনিয়ায় অনলাইনে ন্যারেটিভ তৈয়ারে চলে। নিজেদের পলিটিকাল ন্যারেটিভ মানুষের সামনে ন্যায্য প্রমাণ করার বড়মঞ্চ তো, আজকের বিশ্বে- অনলাইন! ‘রণনীতি’ রণের এই নীতিটাকে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে। জনরা ক্লিশে তো আছেই। তবে এয়ারস্ট্রাইকের উত্তেজনা, ন্যারেটিভের দ্বন্দ্ব এগুলোকে ভালোভাবে ডিল করেছে সিরিজটা। আরো দুটো এপিসোড কমিয়ে আনা যেত। আরেকটু টাইট চিত্রনাট্য হবার দরকার ছিল। তবে আগ্রহটা ধরে রেখেছে। মূল চরিত্রে জিমি শেরগিল থাকায়, আগ্রহ উধাও হবারও কারণ নেই। স্বল্পালোচিত, কিন্তু বিষয়ের কারণে প্রয়োজনীয় সিরিজ।

কোথায় দেখবেন: Jio Cinema

11) Shekhar Home

সিরিজটি একটি ইন্ডিয়ান সিরিজ। এটির নাম টা যেমন Sharlock hlomes এর কপি তেমন কাহিনি আর ধরণ টাও ঠিক তেমন কপি। কিন্তু এখানে একটু আলাদা ভাবে দেখানো হয়েছে যা আপনাকে ভিন্ন কিছু উপহার দিবে।

kay kay menon অভিনয় করেছেন লিড রোলে যাকে sekhar হমে বলা হয়। তিনি একজন ডিটেক্টিভ একটা বাসায় ভাড়ায় থাকেন এবং পুলিশ এর কেস গুলো সলভ করেন। স্বভাবতই তিনি অধিক বুদ্ধিমান ও কুল। সেখানে মানে তার বাসায় আরেকজন থাকার জন্য আসে তিনি একজন ডাক্তার এসেই তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক হয়।

সিরিজের প্রত্যেক পর্বে একটা আলাদা কেস কে দেখানো হয় এবং তার বিপরীতে সেখর হোমের নিজস্ব একটা কাহিনি চলতেই থাকে যা শেষে একটা বড় থ্রিল তৈরি করে। সম্পূর্ণ সিরিজ টা আপনাকে চোখ সরাতে দিবে না অবশ্যই One time watching।

এক্টিং এ কোনো ঝামেলা পাবেন না সবাই অভিনয় একদম ভালোই ছিল। শুধু শেষের দিকে কাহিনিটা একটু দ্রুতই এগোচ্ছিল সে অবস্থায় সবার অভিনয় একটু উইক লেগেছে

পরিশেষে একটা বলা যেতেই পারে দেখার মতো সিরিজ।

কোথায় দেখবেন: Jio Cinema

12) Murder in Mahim

জানিনা কেনো এই ওয়েব সিরিজ টা নিয়ে তেমন লেখালেখি বা আলোচনা নেই।আমার তো বেশ লাগলো।বিজয় রাজের অভিনয় মনে দাগ কাটতে বাধ্য হবে।সাথে আশুতোষ রানা র অভিনয় দক্ষতা নিয়ে তো কোনো কথা না বলেলেই চলে।তাছাড়া সিরিজের প্রতিটি ছোটোখাটো চরিত্র গুলো নিজের জায়গায় ভালো অভিনয় করেছে।যারা একটু অন্য ধরনের কাজ দেখতে পছন্দ করেন,তারা দেখতেই পারেন,নিরাশ হবেন না।

কোথায় দেখবেন: Jio Cinema

২০২৪ সালের টপ ১২ ইন্ডিয়ান ওয়েব সিরিজের লিস্ট কেমন লেগেছে তা আমার আগে জানাতে ভুলবেন না। অবশ্যই জানান আপনার কোনটি ভালো লেগেছে। আরো কিছু যদি মিস করে থাকি আমরা তাহলে অবশ্যই জানান আমরা আগামীতে আপনার মতামত অনুযায়ী আমাদের ব্লগটিকে ঠিক করে নেব।

Latest articles

Related articles