back to top

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা | বিস্তারিত আলোচনা

- Advertisement -

 

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা

বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সেরা চলচ্চিত্রগুলির এক বিশেষ সংকলন

বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। প্রায় চার দশক ধরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক হিসেবে রাজত্ব করে আসছেন। তিনি অভিনয় করেছেন বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে – রোমান্টিক নায়ক থেকে একশন হিরো, সমাজসেবক থেকে খলনায়ক – প্রতিটি চরিত্রেই তিনি অনবদ্য অভিনয় করেছেন।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অভিনীত সিনেমার তালিকা অনেক দীর্ঘ। তাঁর অভিনীত বিভিন্ন জনপ্রিয় সিনেমার মধ্যে রয়েছে প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা কর্তব্য ফুল মুভি, প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা অন্নদাতা, প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা জামাই রাজা, প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা অগ্নি পরীক্ষা ফুল মুভি এবং আরও অনেক। এই সিনেমাগুলো দর্শকদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে এবং বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাঁর সেরা কয়েকটি সিনেমা, সেই সিনেমাগুলোর কাহিনী, এবং বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান সম্পর্কে জানব। চলুন শুরু করা যাক।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়: একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ১৯৬২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক। শিশু শিল্পী হিসেবে প্রসেনজিৎ তাঁর চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন “ছুটির ঘণ্টা” (১৯৮০) সিনেমার মাধ্যমে। তবে “দুই পৃথিবী” (১৯৮৪) সিনেমা থেকে তিনি নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

প্রসেনজিতের জনপ্রিয়তা ১৯৯০-এর দশকে চরম উচ্চতায় পৌঁছায়। সেই সময় থেকে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের অবিসংবাদিত নায়ক হিসেবে পরিচিত হন। ২০০০-এর দশকে প্রসেনজিৎ তাঁর অভিনয় জগতকে আরও বিস্তৃত করে এবং নিজেকে একজন পরিপক্ব অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

প্রসেনজিৎ শুধু একজন অভিনেতাই নন, তিনি একজন প্রযোজক, পরিচালক এবং বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। ভারতীয় চলচ্চিত্রে তাঁর অবদানের জন্য তিনি পদ্মশ্রী সহ বিভিন্ন পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। দীর্ঘ চার দশক ধরে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান রেখে চলেছেন।

প্রসেনজিতের অবিস্মরণীয় বাংলা সিনেমা

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন ৩০০+ সিনেমায়। এখানে তাঁর কিছু অবিস্মরণীয় প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা সম্পর্কে জানা যাক:

১. কর্তব্য (১৯৯৫)

অ্যাকশন
ড্রামা
ফ্যামিলি

পরিচালক: সোহন রায়

অন্যান্য শিল্পীরা: দেবশ্রী রায়, রঞ্জিত মল্লিক

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা কর্তব্য ফুল মুভি একটি প্রভাবশালী পারিবারিক ড্রামা। এই সিনেমায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন রঞ্জন চরিত্রে, যিনি একজন আদর্শবান ও কর্তব্যপরায়ণ যুবক। পারিবারিক সম্পর্ক, প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা এবং কর্তব্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব – এই বিষয়গুলি সিনেমাটিতে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। রঞ্জনের চরিত্র পরিবারের জন্য নিজের স্বার্থ বিসর্জন দেয় এবং কর্তব্যের পথেই এগিয়ে যায়। এই সিনেমাটি প্রসেনজিৎ এবং দেবশ্রী রায়ের অনবদ্য অভিনয়ে মণ্ডিত এবং দর্শকদের কাছে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।

আরও জানুন

২. অন্নদাতা (১৯৯০)

ড্রামা
অ্যাকশন

পরিচালক: সুধীর মুখোপাধ্যায়

অন্যান্য শিল্পীরা: রুপা গাঙ্গুলী, ভিকিণসদা

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা অন্নদাতা এবং প্রসেনজিৎ প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা অন্নদাতা নামেও পরিচিত এই সিনেমাটি ৯০-এর দশকের অন্যতম জনপ্রিয় সিনেমা। bangla movie প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা অন্নদাতা তে প্রসেনজিৎ অভিনয় করেছেন অন্তর চরিত্রে, একজন ভদ্র ও পরিশ্রমী যুবক যিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। এই সিনেমায় পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ, সমাজের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং প্রেম – এই তিনটি বিষয় চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। অন্নদাতা সিনেমাটি মূলত একজন সৎ ব্যক্তির সংগ্রামের গল্প, যিনি পরিবারকে ভালোবাসেন এবং সেই ভালোবাসার জন্য যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে প্রস্তুত।

আরও জানুন

৩. জামাই রাজা (১৯৯২)

কমেডি
রোমান্টিক

পরিচালক: প্রশান্ত নন্দী

অন্যান্য শিল্পীরা: রুপা গাঙ্গুলী, উত্তম মুখার্জী

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা জামাই রাজা একটি রোমান্টিক কমেডি সিনেমা। এই সিনেমায় প্রসেনজিৎ একজন জামাই-এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যিনি তাঁর শ্বশুরবাড়িতে খুব আদরে থাকেন। তবে পরিস্থিতির কারণে তাঁকে নিজের পরিচয় গোপন রাখতে হয় এবং বিভিন্ন হাস্যকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। জামাই ও শ্বশুরবাড়ির সম্পর্ককে নিয়ে এই সিনেমাটি একটি মজার আখ্যান উপস্থাপন করেছে। প্রসেনজিৎ ও রুপা গাঙ্গুলীর জুটি এই সিনেমাটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। অন্যান্য প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা ঘর জামাই সিনেমাটিও একই রকম বিষয়বস্তু নিয়ে নির্মিত হয়েছিল।

আরও জানুন

প্রসেনজিতের এই সিনেমাগুলি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে!

প্রসেনজিতের অ্যাকশন সিনেমা

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অ্যাকশন সিনেমাতেও সমান পারদর্শী। তাঁর কিছু সেরা অ্যাকশন প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা এখানে দেওয়া হল:

অগ্নি পরীক্ষা (১৯৯৬)

পরিচালক: অনিল দাস

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা অগ্নি পরীক্ষা ফুল মুভি একটি জনপ্রিয় অ্যাকশন সিনেমা। এই সিনেমায় প্রসেনজিৎ একজন পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করেন, যিনি সমাজের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেন। দুষ্কৃতকারীদের হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করার জন্য তাঁকে বিভিন্ন বাধার মুখোমুখি হতে হয় এবং তাঁর নিজের পরিবারও বিপদের মুখে পড়ে। প্রসেনজিতের দমদার অভিনয় ও অ্যাকশন দৃশ্যগুলি এই সিনেমার আকর্ষণ বাড়িয়েছে।

শিবা (১৯৯৪)

পরিচালক: সোহন রায়

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা শিবা একটি অ্যাকশন-ড্রামা সিনেমা। এই সিনেমায় প্রসেনজিৎ শিবা নামের একজন সাহসী যুবকের ভূমিকায় অভিনয় করেন, যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার। সমাজের দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তিনি একদিকে যেমন বিপদের মুখে পড়েন, অন্যদিকে নিজের প্রেমের জীবনও জটিল হয়ে ওঠে। প্রসেনজিতের শক্তিশালী অভিনয় এই সিনেমার প্রাণ।

গ্রেফতার (১৯৯৮)

পরিচালক: হরিদাস বাইরাগী

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা গ্রেফতার একটি আইন-আদালত কেন্দ্রিক অ্যাকশন সিনেমা। এই সিনেমায় প্রসেনজিৎ একজন সৎ পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করেন, যিনি একটি জটিল মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের শিকার হন। গ্রেফতার সিনেমাটি সোজা সত্য কথা বলার সাহস, ন্যায়-অন্যায়ের লড়াই, এবং একজন নীতিবান মানুষের চারিত্রিক দৃঢ়তা দেখিয়েছে।

শত্রুর মোকাবেলা (১৯৯৫)

পরিচালক: সোহন রায়

শত্রুর মোকাবেলা প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা হিসেবে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। এই সিনেমায় প্রসেনজিৎ অভিনয় করেন একজন সাধারণ যুবকের ভূমিকায়, যিনি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন। তাঁর পরিবারের উপর অত্যাচার হওয়ার পর, তিনি ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই শুরু করেন। এই সিনেমাটি প্রসেনজিতের অন্যতম হিট সিনেমা হিসেবে পরিচিত।

প্রসেনজিতের অ্যাকশন সিনেমাগুলিতে তাঁর শক্তিশালী অভিনয় ও চরিত্রের বলিষ্ঠতা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে!

প্রসেনজিতের পারিবারিক সিনেমা

পারিবারিক সিনেমাতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় অনবদ্য। তাঁর কিছু সেরা পারিবারিক প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা এখানে উল্লেখ করা হল:

1

স্বামীর আদেশ (১৯৯৭)

পরিচালক: অজয় দাস

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা স্বামীর আদেশ একটি পারিবারিক ড্রামা। এই সিনেমায় প্রসেনজিৎ একজন আদর্শ স্বামী ও পরিবারের কর্তার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। পরিবারের বিভিন্ন সমস্যা, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে সম্পর্কের জটিলতা – এই সিনেমাটিতে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। প্রসেনজিতের অভিনয় এই সিনেমাটিকে একটি মার্মিক পারিবারিক গল্পে পরিণত করেছে।

2

দাদার আদেশ (১৯৯৬)

পরিচালক: রাজা মিত্র

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা দাদার আদেশ একটি পারিবারিক ড্রামা যেখানে প্রসেনজিৎ একজন বড় ভাইয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তাঁর চরিত্র পরিবারের দায়িত্ব নেয় এবং ছোট ভাই-বোনদের সঠিক পথে পরিচালিত করে। কিন্তু যখন তার নিজের ছোট ভাই ভুল পথে চলতে শুরু করে, তখন তাঁকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এই সিনেমাটি পারিবারিক বন্ধন, দায়িত্ববোধ, এবং ভালোবাসার গল্প।

3

সন্তান যখন শত্রু (১৯৯৯)

পরিচালক: অনিল দাস

সন্তান যখন শত্রু প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা একটি বিশেষ পারিবারিক ড্রামা যেখানে প্রসেনজিৎ একজন পিতার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এই সিনেমাটি পিতা-পুত্রের সম্পর্কের জটিলতা, পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব, এবং পরিবারের মান-সম্মান রক্ষার গল্প। যখন তাঁর সন্তান ভুল পথে চলে এবং পরিবারের বিরুদ্ধে যায়, তখন তাঁর চরিত্র কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। প্রসেনজিতের অভিনয় এই সিনেমাটিকে অত্যন্ত মার্মিক করে তুলেছে।

প্রসেনজিতের পারিবারিক সিনেমাগুলি বাংলা দর্শকদের হৃদয় জয় করেছে পারিবারিক মূল্যবোধ ও আবেগপূর্ণ কাহিনী দিয়ে!

বাংলা চলচ্চিত্রে প্রসেনজিতের অবদান

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা শুধু মনোরঞ্জনই করেনি, বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় শুধু একজন অভিনেতাই নন, তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব। চলুন জেনে নেই বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবদান:

১. বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি

১৯৯০-এর দশকে যখন বাংলা চলচ্চিত্র শিল্প সংকটের মধ্যে ছিল, তখন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সিনেমাগুলি শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলি দর্শকদের মাঝে বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করে এবং বাংলা সিনেমা হলগুলিতে দর্শকদের ভিড় বাড়ায়। প্রসেনজিতের জনপ্রিয়তার কারণে বাংলা সিনেমার বাজার সম্প্রসারিত হয়।

২. বিভিন্ন ধরনের চরিত্র অভিনয়

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে বাংলা চলচ্চিত্রের পরিধি বাড়িয়েছেন। তিনি রোমান্টিক নায়ক, অ্যাকশন হিরো, খলনায়ক, সমাজসেবক, পিতা, ভাই – এমন বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন যা বাংলা চলচ্চিত্রের বৈচিত্র্য বাড়িয়েছে। তাঁর অভিনয় সীমা ও দক্ষতা বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

৩. আধুনিক ও আর্ট হাউস সিনেমায় অবদান

২০০০-এর দশকে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কমার্শিয়াল সিনেমার পাশাপাশি আর্ট হাউস সিনেমাতেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ঋতুপর্ণ ঘোষ, গৌতম ঘোষের মতো পরিচালকদের সাথে কাজ করে তিনি “অন্তঃসলিলা”, “দোসর”, “মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার”, “আউটসাইডার” ইত্যাদি সিনেমায় অভিনয় করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান। এইভাবে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরতে সাহায্য করেছেন।

৪. নতুন প্রতিভা উৎসাহ দান

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নিজের প্রোডাকশন হাউস ‘নিদ্রা’ এর মাধ্যমে অনেক নতুন পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কলাকুশলীদের সুযোগ দিয়েছেন। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন প্রতিভার বিকাশে সাহায্য করেছেন এবং শিল্পটির উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। তাঁর মেন্টরশিপে অনেক নতুন শিল্পী বাংলা চলচ্চিত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অবদান বাংলা চলচ্চিত্রকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে, যা আগামী প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করবে!

প্রসেনজিতের পুরস্কার ও স্বীকৃতি

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা এবং চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদানের জন্য প্রসেনজিৎ বিভিন্ন পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছেন:

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

  • 1

    শ্রেষ্ঠ অভিনেতা – “আকাশ পাতাল” (১৯৯৫)

  • 2

    বিশেষ জুরি পুরস্কার – “মায়ের আদেশ” (১৯৯৮)

  • 3

    শ্রেষ্ঠ অভিনেতা – “দোসর” (২০০৬)

বঙ্গভূষণ সম্মান

২০১২ সালে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক “বঙ্গভূষণ” সম্মানে ভূষিত হন। এই সম্মান দেওয়া হয় বাংলার সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অনন্য অবদানের জন্য। এই সম্মান প্রসেনজিতের কর্মজীবনের অন্যতম বড় স্বীকৃতি।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত বিভিন্ন সিনেমা যেমন “শাঁখচিল”, “অন্তঃসলিলা”, “মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার” ইত্যাদি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। এইসব সিনেমায় তাঁর অভিনয়ের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছেন।

তিনি কান ফিল্ম ফেস্টিভাল, বার্লিন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল, টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

প্রসেনজিতের সাম্প্রতিক কাজ

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সময়ের সাথে সাথে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছেন। সম্প্রতি তিনি বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন এবং প্রযোজনা করেছেন:

মায়ানগরী (২০১৯)

একটি থ্রিলার সিনেমা যেখানে প্রসেনজিৎ একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

দেখুন

দ্রোহকাল (২০২১)

একটি ঐতিহাসিক ড্রামা যেখানে প্রসেনজিৎ একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

দেখুন

শাঁখচিল (২০১৬)

গৌতম ঘোষ পরিচালিত এই ছবিতে প্রসেনজিৎ একজন প্রবাসী ভারতীয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

দেখুন

বন্ধু (২০২০)

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা বন্ধু একটি আবেগময় পারিবারিক ড্রামা যেখানে বন্ধুত্বের গল্প বলা হয়েছে।

দেখুন

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে বেশ কয়েকটি নতুন প্রজেক্টে কাজ করছেন। তিনি এখনও বাংলা চলচ্চিত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে চলেছেন।

উপসংহার

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় চার দশক ধরে বাংলা চলচ্চিত্রে অবদান রেখে চলেছেন এবং তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলি বাঙালি দর্শকদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। যেমন প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা কর্তব্য ফুল মুভি, প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা অন্নদাতা, প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা জামাই রাজা, প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা অগ্নি পরীক্ষা ফুল মুভি ইত্যাদি সিনেমাগুলি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় শুধু একজন অভিনেতাই নন, তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের এক প্রতিষ্ঠান। কমার্শিয়াল সিনেমা থেকে আর্ট হাউস সিনেমা – সব ধরনের সিনেমাতেই তিনি সমান দক্ষতার সাথে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয় দক্ষতা, সাহসিকতা, এবং নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার ক্ষমতা তাঁকে বাংলা চলচ্চিত্রের অবিসংবাদিত নায়ক করে তুলেছে।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা প্রসেনজিতের কিছু সেরা সিনেমা, বিভিন্ন ধরনের সিনেমায় তাঁর অভিনয়, এবং বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান সম্পর্কে জেনেছি। বাংলা চলচ্চিত্র ভক্তদের জন্য প্রসেনজিতের সিনেমাগুলি অবশ্যই দেখার যোগ্য।

“প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের এক যুগের প্রতীক।”

আপনার প্রিয় প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমা কোনটি? আমাদের কমেন্টে জানান!

প্রশ্ন ও উত্তর

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কত বছর ধরে সিনেমায় অভিনয় করছেন?

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রায় চার দশক ধরে বাংলা সিনেমায় অভিনয় করছেন। শিশু শিল্পী হিসেবে ১৯৮০ সালে “ছুটির ঘণ্টা” সিনেমায় অভিনয় দিয়ে তিনি শুরু করেন এবং ১৯৮৪ সালে “দুই পৃথিবী” সিনেমা থেকে নায়ক হিসেবে অভিনয় শুরু করেন। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত তিনি ৩০০+ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এতদিন ধরে তিনি সফলভাবে চলচ্চিত্রে অবদান রেখে চলেছেন, যা চলচ্চিত্র জগতে এক বিরল ঘটনা।

প্রসেনজিতের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা কোনটি?

প্রসেনজিতের অনেক জনপ্রিয় সিনেমা আছে, তবে কিছু বিশেষ জনপ্রিয় সিনেমার মধ্যে রয়েছে “কর্তব্য”, “অন্নদাতা”, “সাসুবাড়ি জিন্দাবাদ”, “বাবা কেনো চাকর”, “জামাই রাজা”, “সুয়ার”, “শত্রু”, “অগ্নি পরীক্ষা” ইত্যাদি। এছাড়া তাঁর আধুনিক সিনেমাগুলির মধ্যে “অন্তঃসলিলা”, “শাঁখচিল”, “দোসর”, “অউটসাইডার” ইত্যাদি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। প্রসেনজিৎ ৯০-এর দশকে যে কমার্শিয়াল সিনেমাগুলি করেছিলেন, সেগুলি বাঙালি দর্শকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়।

প্রসেনজিৎ কি কোনো হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেছেন?

হ্যাঁ, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কয়েকটি হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল “ট্রাফিক” (২০১৬), যা মালায়ালম ভাষার একই নামের সিনেমার রিমেক। এছাড়াও তিনি “শূন্য… দ্য জিরো” (২০১৮) এবং “এনকাউন্টার” (২০১৪) সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তবে তাঁর মূল পরিচয় বাংলা সিনেমার অভিনেতা হিসেবেই এবং তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।

প্রসেনজিৎ কি কোনো সিনেমা পরিচালনা করেছেন?

হ্যাঁ, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় “মায়ের বাপ” নামে একটি সিনেমা পরিচালনা করেছেন ২০১৬ সালে। এছাড়াও তিনি “নিদ্রা” নামে একটি প্রোডাকশন হাউস পরিচালনা করেন এবং বেশ কয়েকটি সিনেমা প্রযোজনা করেছেন। প্রসেনজিৎ শুধু অভিনয়েই সীমাবদ্ধ নন, তিনি সিনেমা নির্মাণের বিভিন্ন দিক যেমন প্রযোজনা, পরিচালনা, ইত্যাদিতেও অবদান রাখছেন। তিনি বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের একজন সম্পূর্ণ ব্যক্তিত্ব।

প্রসেনজিতের বাংলা সিনেমার টিকিট রেকর্ড কী?

প্রসেনজিতের সিনেমাগুলি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টিকিট বিক্রি করা সিনেমাগুলির মধ্যে রয়েছে। ৯০-এর দশকে তাঁর সিনেমাগুলি বক্স অফিসে রেকর্ড ভেঙ্গেছিল। “অন্নদাতা”, “কর্তব্য”, “সাসুবাড়ি জিন্দাবাদ” ইত্যাদি সিনেমাগুলি তখনকার সময়ে সবচেয়ে বেশি টিকিট বিক্রি করা সিনেমা ছিল। ৯০-এর দশকে প্রসেনজিতের প্রতিটি সিনেমা প্রায় ১০০ দিন চলত সিনেমা হলে, যা একটি বিরাট সাফল্য। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল নায়কদের একজন।

Latest articles

Related articles