back to top

বাংলা ফোক গানের তালিকা | বিখ্যাত ফোক গানের লিস্ট

- Advertisement -

বাংলা ফোক গানের তালিকা

বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীতের এক সমৃদ্ধ ভাণ্ডার

বাংলা ফোক গান বা লোকসংগীত বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। সদিয়ের পর সদি ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মৌখিকভাবে প্রচারিত এসব গান বাংলার মাটি, মানুষ, জীবন ও প্রকৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের লোকসংগীতের চর্চা হয়ে আসছে। এই নিবন্ধে আমরা বাংলার বিভিন্ন ধরনের ফোক গান এবং এর প্রধান শিল্পীদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

বাউল গায়ক

বাংলাদেশের একজন বাউল গায়ক – বাংলা লোকসংগীতের অন্যতম প্রতিনিধি

বাংলা ফোক গানের উৎপত্তি ও ইতিহাস

বাংলা লোকসংগীতের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন। এর উৎপত্তি সঠিকভাবে নির্ণয় করা কঠিন, কারণ এটি মূলত মৌখিক ঐতিহ্যের মাধ্যমে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চলে এসেছে। তবে ঐতিহাসিকদের মতে, অনেক লোকগানের উৎপত্তি প্রাক-আর্য ও প্রাক-বৌদ্ধ যুগে খুঁজে পাওয়া যায়। চর্যাপদ (৭ম-১২শ শতাব্দী) বাংলা লোকসংগীতের প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন হিসাবে বিবেচিত হয়।

লোকসংগীতের বৈশিষ্ট্য

বাংলা লোকসংগীতের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলি সাধারণত:

  • মৌখিক ঐতিহ্যের মাধ্যমে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে প্রবাহিত হয়
  • সাধারণ মানুষের জীবন, দুঃখ-বেদনা, আনন্দ-বিষাদ, প্রেম-ভালোবাসা, প্রকৃতি ইত্যাদি বিষয়কে তুলে ধরে
  • সরল ও সহজবোধ্য ভাষায় রচিত হয়
  • অঞ্চলভেদে এর স্বর, সুর, তাল ও রীতিতে পার্থক্য দেখা যায়
  • প্রায়শই স্থানীয় বাদ্যযন্ত্র (যেমন – ডুগি, খঞ্জনি, এক তারা, দোতারা, ঢোল, ফ্লুট ইত্যাদি) দিয়ে পরিবেশিত হয়

একতারা বাদ্যযন্ত্র

একতারা – বাংলা লোকসংগীতের অন্যতম বাদ্যযন্ত্র

বাংলা ফোক গানের প্রধান প্রকারভেদ

বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের লোকসংগীতের চর্চা হয়। এখানে বাংলার কিছু প্রধান ফোক গানের প্রকারভেদ তুলে ধরা হল:

১. বাউল গান

বাঙালি লোকসংগীতের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় ধারা হল বাউল গান। এই গানগুলি মূলত আধ্যাত্মিক তত্ত্ব, দর্শন, প্রেম, ও মানবতাবাদের বার্তা বহন করে। বাউল সম্প্রদায় হল একটি অনন্য ও স্বতন্ত্র ধর্মীয় গোষ্ঠী যারা সাধারণত গেরুয়া (আলখাল্লা) পরিধান করে এবং একতারা, দোতারা, খঞ্জনি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রের সাহায্যে গান পরিবেশন করে।

বিখ্যাত বাউল গায়ক:

  • লালন ফকির (১৭৭৪-১৮৯০)
  • হাসন রাজা (১৮৫৪-১৯২২)
  • রাধারমণ দত্ত (১৮৩৩-১৯১৫)
  • শাহ আবদুল করিম (১৯১৬-২০০৯)
  • পূর্ণদাস বাউল (১৮৮২-১৯৪৫)
  • আনন্দ গোস্বামী (১৯৬৯-)

বিখ্যাত বাউল গান:

  • “কোথা গেলে পাবে তারে”
  • “পরের জায়গা পরের জমি”
  • “শোনো একটি মুজিবের থেকে”
  • “দেহ খাচার ভিতর অচিন পাখি”
  • “আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে”

২. ভাটিয়ালি গান

ভাটিয়ালি গান বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল, বিশেষ করে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদী অববাহিকার নাবিকদের গান। এই গান মূলত নৌকায় বসে, নদীর স্রোতের বিপরীতে (ভাটির দিকে) যাত্রাকালে নাবিকরা গেয়ে থাকেন। ভাটিয়ালি গানে নদী, নৌকা, নাবিক, বিরহ, প্রেম ইত্যাদি বিষয় প্রাধান্য পায়।

বিখ্যাত ভাটিয়ালি গায়ক:

  • আব্বাস উদ্দীন
  • নীরেন চৌধুরী
  • ফারিদা পারভীন
  • রাশেদ আলী
  • রবীন্দ্রনাথ রায়

বিখ্যাত ভাটিয়ালি গান:

  • “ও নদীরে, একটি কথা শুধাই”
  • “আমায় ভাসাইলি রে”
  • “ওরে নীল দরিয়া”
  • “ওরে সাঁঝের তারা”
  • “নদীর কূল নাই কিনারা নাই”

৩. ভাওয়াইয়া

ভাওয়াইয়া গান বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল (রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা) ও পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার অঞ্চলের লোকসংগীত। এই গানে উত্তরবঙ্গের গ্রাম্য জীবন, চাষাবাদ, প্রেম-বিরহ, প্রকৃতি ইত্যাদি বিষয় প্রাধান্য পায়।

বিখ্যাত ভাওয়াইয়া গায়ক:

  • আব্বাস উদ্দীন
  • আবদুল আলিম
  • ফেরদৌসী রহমান
  • রবি চৌধুরী
  • ভবেন মজুমদার

বিখ্যাত ভাওয়াইয়া গান:

  • “প্রাণের বন্ধু রে”
  • “ও কি গাড়িয়াল ভাই”
  • “দিনাজপুরের মালঞ্চ সাইকেল”
  • “আমার যৌবন জ্বলে”
  • “ফিরিঙ্গী বেড়া”

৪. ভাদু গান

ভাদু গান পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর এবং ঝাড়খণ্ডের সিংভূম অঞ্চলের বিখ্যাত লোকসংগীত। ভাদ্র মাসের দেবী ভাদু (পার্বতী) উদ্দেশ্যে গাওয়া হয় বলে এর নাম ভাদু গান। মূলত মেয়েরা এই গান গায়। এতে প্রেম, বিরহ, গ্রাম্য জীবন, প্রকৃতি ইত্যাদি বিষয় স্থান পায়।

বিখ্যাত ভাদু গান:

  • “বাঁশের কাঠি দিয়া”
  • “সব কিছু ফুরায়ে যায়”
  • “আমি ভাদু গো”
  • “ও ভাদু আমার”
  • “ভাদুর আসন আলো করে”

৫. ভাটি সুরের গান

ভাটি সুরের গান মূলত বাংলাদেশের ফরিদপুর, বরিশাল, ঢাকা, কুমিল্লা অঞ্চলের লোকসংগীত। এতে স্থানীয় জীবন-যাপন, কৃষি, প্রেম, বিরহ ইত্যাদি বিষয় প্রাধান্য পায়।

বিখ্যাত ভাটি সুরের গান:

  • “ও আমার মনের মানুষ”
  • “বন্ধু তুমি কার পোষাক পরছো”
  • “নদী ভরা ঢেউ”
  • “ও কি ও বন্ধু বিদেশী”
  • “ডুবল ডুবল মনরে”

৬. জারি গান

জারি গান বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর অঞ্চলের লোকসংগীত। এই গান কারবালার যুদ্ধে হাসান-হোসেনের শাহাদাতের কাহিনী নিয়ে রচিত। জারি গান সাধারণত মহররম মাসে গাওয়া হয়।

বিখ্যাত জারি গান:

  • “বিদায় মদিনা”
  • “কারবালার ময়দানে”
  • “শহীদ হাসান হোসেন”
  • “আল্লাহর রাসুল বিদায় নিলেন”
  • “এজিদের সৈন্য”

লোকগীতি

মাটির মানুষের সুরে,
বাঁধা প্রাণের গান।

বাংলা ফোক গানের তালিকা

বাউলের একতারায় বাজে,
মনের আনন্দ-বেদন।

ভাটিয়ালি সুরে ভাসে,
নদীর বুকে ভেলা।

ভাওয়াইয়া গানে মাতে,
উত্তরের সারা মেলা।

জারির করুণ সুরে কাঁদে,
কারবালার স্মৃতি।

বাংলার মাটিতে মিশে আছে,
এসব ফোক গীতি।

লোকগীতির ধরন উৎপত্তি অঞ্চল বৈশিষ্ট্য প্রধান বাদ্যযন্ত্র
বাউল গান কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, বিরভূম, নদিয়া আধ্যাত্মিক, দার্শনিক, সূফিবাদী প্রভাব একতারা, দোতারা, খঞ্জনি
ভাটিয়ালি গান পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদী অববাহিকা নদী, নাবিক, নৌকা, বিরহ মাঝিরা প্রধানত বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই গায়
ভাওয়াইয়া রংপুর, দিনাজপুর, কোচবিহার গ্রাম্য জীবন, প্রেম, প্রকৃতি দোতারা, বাঁশী
ভাদু গান পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর দেবী ভাদুর উদ্দেশ্যে গাওয়া, মেয়েদের গান ঢোল, মাদল
জারি গান ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা কারবালার যুদ্ধের কাহিনী ঢোল, করতাল
মুর্শিদি গান চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ইসলামী শিক্ষা, সূফিবাদ হারমোনিয়াম, ঢোলক

বাউল পারফরম্যান্স

বাউল গানের একটি পারফরম্যান্স – বাংলা লোকসংগীতের অন্যতম রূপ

অন্যান্য বিখ্যাত বাংলা ফোক গান

উপরে উল্লিখিত প্রধান ধারাগুলি ছাড়াও, বাংলায় আরও অনেক ধরনের লোকগীতি রয়েছে। এখানে আরও কিছু উল্লেখযোগ্য ফোক গানের তালিকা দেওয়া হল:

বিয়ের গান

বিয়ের অনুষ্ঠানে গাওয়া হয় এমন গান। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের বিয়ের গান প্রচলিত, যেমন – আইবুড়ো ভাত, গায়ে হলুদ, বিয়ের গান ইত্যাদি।

বিখ্যাত বিয়ের গান:

  • “কনে দেখা”
  • “আইবুড়ো ভাত”
  • “হলুদের গান”
  • “খোপা বাঁধার গান”
  • “বিদায়ের গান”

ভাওয়াল গান

ভাওয়াল গান বাংলাদেশের গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ অঞ্চলের লোকসংগীত। ভাওয়াল অঞ্চলের (সাবেক ভাওয়াল রাজ্য) জঙ্গলে কাজ করার সময় শ্রমিকরা এই গান গাইতেন।

বিখ্যাত ভাওয়াল গান:

  • “ও ভাওয়াল রে”
  • “জঙ্গলের পরানি বন্ধু”
  • “বিরহী বন্ধু রে”
  • “আমার ভাওয়াল দেশের”

সারি গান

সারি গান বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের, বিশেষ করে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার অঞ্চলের নাবিকদের গান। বড় নৌকা বা ডিঙ্গি নৌকা টানার সময় মাঝিরা এই গান গায়।

বিখ্যাত সারি গান:

  • “ও নাইয়ারে”
  • “উজান গাঙের”
  • “ও কী ও দোস্ত ডিঙ্গা আইলো”
  • “ভাসান নদীর পানি”

গম্ভীরা গান

গম্ভীরা গান মূলত রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মালদহ অঞ্চলের লোকসংগীত। এটি একটি যুগল নৃত্যসহ গান, যেখানে দুজন শিল্পী ক্রমান্বয়ে প্রশ্ন ও উত্তর আকারে গান গায়। গম্ভীরায় সাধারণত সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম প্রভৃতি বিষয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করা হয়।

বিখ্যাত গম্ভীরা গান:

  • “ও নানা গো”
  • “ও দাদা গো”
  • “কি হইল দেশের বাজারে”
  • “আমার নয়নের মণি গো”

ঝুমুর গান

ঝুমুর গান মূলত পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান, বীরভূম অঞ্চলের লোকসংগীত। এটি নৃত্যসহ পরিবেশিত হয়।

বিখ্যাত ঝুমুর গান:

  • “ললিতা ঝুমুর”
  • “রাধা ঝুমুর”
  • “ভাদরিয়া ঝুমুর”
  • “সখী লো কেবা আসে”

আধুনিক যুগে বাংলা ফোক গান

আধুনিক যুগে বাংলা ফোক গান নতুন মাত্রা পেয়েছে। অনেক আধুনিক শিল্পী পারম্পরিক লোকগীতিকে নতুন রূপে উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া, নতুন লোকগীতিও রচিত হচ্ছে। আধুনিক যুগে বাংলা ফোক গানের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো:

১. ফিউশন ফোক

আধুনিক যুগে অনেক শিল্পী পারম্পরিক ফোক গানকে আধুনিক সুর, তাল, বাদ্যযন্ত্রের সাথে মিশিয়ে ফিউশন ফোক গান তৈরি করেছেন। এতে লোকগীতির মূল স্বাদ বজায় রেখে এটিকে আধুনিক শ্রোতাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে।

আধুনিক ফিউশন ফোক শিল্পী:

  • অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়
  • সৌমিত্র রায়
  • ফাহিম লিওন
  • দলৈ
  • সোমলতা
  • ছলন
  • জেমস

২. ডিজিটাল প্লাটফর্মে লোকগীতি

ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যাপল মিউজিক, ওয়াইনক, সাউন্ডক্লাউড ইত্যাদি ডিজিটাল প্লাটফর্মে বাংলা ফোক গান এখন সহজলভ্য। এর ফলে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে শ্রোতারা বাংলা লোকগীতি শুনতে পারছেন।

জনপ্রিয় ডিজিটাল চ্যানেল:

  • বাংলা ফোক আর্কাইভ
  • সারেগামা বাংলা ফোক
  • বাংলা ফিউশন প্রজেক্ট
  • বাউল সংগীত আর্কাইভ
  • বাংলার গান

বাউল গায়ক দল

শান্তিনিকেতনে আধুনিক বাউল গায়কদের একটি দল

বাংলা ফোক গানের সংরক্ষণ ও প্রচার

বাংলা লোকসংগীতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এজন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছেন:

  1. সরকারি উদ্যোগ: বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, সংগীত অ্যাকাডেমি, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান লোকসংগীত সংরক্ষণে কাজ করছে।
  2. গবেষণা ও ডকুমেন্টেশন: বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলা ফোক গান সংগ্রহ, ডকুমেন্টেশন, ও গবেষণা করা হচ্ছে।
  3. উৎসব ও অনুষ্ঠান: বাউল মেলা, পৌষ মেলা, ভাওয়াইয়া উৎসব, লালন স্মরণোৎসব, ভাটিয়ালি মেলা, লোকসংগীত উৎসব ইত্যাদি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লোকসংগীত প্রচার করা হচ্ছে।
  4. শিক্ষা: বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লোকসংগীত শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন সংগীত কলেজে ফোক গান শেখানো হয়।
  5. মিডিয়া প্রচার: টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট ইত্যাদি মাধ্যমে লোকসংগীত প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন রিয়ালিটি শো’তে ফোক গানকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

“লোকসংগীত হল আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূল্যবান সম্পদ। এটি শুধু সংগীত নয়, এটি আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, আবেগ, ও জীবনবোধের প্রকাশ। লোকসংগীত সংরক্ষণ ও প্রচার করার অর্থ আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষা করা।” – ড. আনিসুজ্জামান

উপসংহার

বাংলা ফোক গান বাঙালি সংস্কৃতির এক অমূল্য সম্পদ। এটি শুধু একটি সাংগীতিক ঐতিহ্য নয়, বরং বাঙালি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, জীবনধারা, ভাবনা, আবেগ, দর্শন, ও অভিজ্ঞতার অনন্য দলিল। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা এই সমৃদ্ধ লোকসাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এর মূল্যবোধ পৌঁছে দেওয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব।

বাউল, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, জারি, মুর্শিদি, গম্ভীরা, ঝুমুর – এসব বিভিন্ন ধরনের ফোক গান বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে। আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই সমৃদ্ধ লোকসংগীত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বাংলা ফোক গানের বিস্তৃত ও সমৃদ্ধ ভাণ্ডার সম্পর্কে জানতে, শুনতে ও উপভোগ করতে সবাইকে উৎসাহিত করা উচিত। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করতে পারব এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই অমূল্য সম্পদ পৌঁছে দিতে পারব।

© ২০২৩ – সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | বাংলা ফোক গানের তালিকা

Latest articles

Related articles