জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান, আর সেই মূল্যবান সময়ের কিছু অংশ যদি চলচ্চিত্র দেখে কাটাতে চান, তাহলে সেই সময়টাকে সার্থক করে তুলতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, জীবনে অন্তত একবার দেখে ফেলা উচিত এমন ১০০টি মুভির তালিকা, যা আপনার চলচ্চিত্র অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করবে এবং ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনকে দেখতে শেখাবে।
ক্লাসিক চলচ্চিত্র:
১. দ্য গডফাদার (১৯৭২) – ফ্রান্সিস ফোর্ড কোপোলার এই মাফিয়া মহাকাব্য অসাধারণ পরিচালনা, অভিনয় এবং গল্পবলার এক অসামান্য উদাহরণ।
২. সিটিজেন কেন (১৯৪১) – অরসন ওয়েলসের এই চলচ্চিত্র আধুনিক সিনেমাটোগ্রাফির ভিত্তি স্থাপন করেছে।
৩. কাসাব্লাংকা (১৯৪২) – প্রেম, ত্যাগ এবং যুদ্ধের অবিস্মরণীয় গল্প, হামফ্রে বোগার্ট এবং ইনগ্রিড বার্গম্যানের অসাধারণ অভিনয়ে উজ্জ্বল।
৪. সেভেন সামুরাই (১৯৫৪) – আকিরা কুরোসাওয়ার এই জাপানি মহাকাব্য সামুরাই ঐতিহ্য এবং মানবিক মূল্যবোধের অসাধারণ চিত্রায়ণ।
৫. ২০০১: এ স্পেস ওডিসি (১৯৬৮) – স্ট্যানলি কুব্রিকের এই চলচ্চিত্র সায়েন্স ফিকশন জনপ্রিয়তার নতুন যুগের সূচনা করেছিল।
অস্কার জয়ী সেরা চলচ্চিত্র
এই চলচ্চিত্রগুলি শুধুমাত্র মনোরঞ্জনই দেয় না, সাথে সাথে সিনেমাটিক দক্ষতার চরম উৎকর্ষও প্রদর্শন করে:
৬. স্কিনডলার’স লিস্ট (১৯৯৩) – স্টিভেন স্পিলবার্গের হলোকাস্ট বিষয়ক এই মাস্টারপিস একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত।
৭. লরেন্স অফ আরাবিয়া (১৯৬২) – ডেভিড লিনের প্রযোজিত এই মরুভূমি মহাকাব্য বিশাল ক্যানভাসে চিত্রায়িত এক অবিস্মরণীয় ভ্রমণ।
৮. দ্য শশাঙ্ক রিডেমপশন (১৯৯৪) – মুক্তি, আশা এবং বন্ধুত্বের এই অনবদ্য গল্প সমস্ত সময়ের সর্বাধিক প্রশংসিত চলচ্চিত্রগুলির একটি।
৯. পারাসাইট (২০১৯) – বং জুন-হোর এই কোরিয়ান চলচ্চিত্র সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের অস্কার জেতা প্রথম বিদেশি ভাষার ছবি।
১০. দ্য ডিপার্টেড (২০০৬) – মার্টিন স্কর্সেসির প্রযোজিত এই পুলিশ ড্রামা দক্ষ পরিচালনা এবং অভিনয়ের এক অনবদ্য উদাহরণ।
নতুন দশকের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নির্মিত এই চলচ্চিত্রগুলি সময়ের সাথে সাথে ক্লাসিক হয়ে উঠেছে:
১১. ইনসেপশন (২০১০) – ক্রিস্টোফার নোলানের এই মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার স্বপ্ন এবং বাস্তবতার সীমারেখাকে অতিক্রম করে।
১২. মুনলাইট (২০১৬) – পরিচয়, যৌনতা এবং সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে বিরল সংবেদনশীলতায় নির্মিত একটি চলচ্চিত্র।
১৩. ম্যাড ম্যাক্স: ফিউরি রোড (২০১৫) – জর্জ মিলারের এই পোস্ট-অ্যাপোকালিপটিক অ্যাকশন ছবি সমস্ত কালের সেরা অ্যাকশন মুভিগুলির মধ্যে অন্যতম।
১৪. দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক (২০১০) – ফেসবুকের জন্মের গল্প নিয়ে ডেভিড ফিঞ্চারের এই ড্রামা ডিজিটাল যুগের একটি প্রামাণ্য দলিল।
১৫. জোকার (২০১৯) – হোয়াকিন ফিনিক্সের অসাধারণ অভিনয়ে বলিষ্ঠ এই চলচ্চিত্র সুপারহিরো জনপ্রিয়তার যুগে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
বাংলা চলচ্চিত্রের মাস্টারপিস
বাংলা চলচ্চিত্রের ঐতিহ্য বিশ্ব সিনেমার ইতিহাসে অনন্য স্থান দখল করে আছে:
১৬. পথের পাঁচালী (১৯৫৫) – সত্যজিৎ রায়ের এই চলচ্চিত্র বাংলা সিনেমাকে আন্তর্জাতিক মানের সম্মান এনে দিয়েছিল।
১৭. মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০) – রিতুপর্ণো ঘোষের এই চলচ্চিত্র মানবিক সম্পর্কের জটিলতাকে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেছে।
১৮. তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩) – ঋত্বিক ঘটকের এই চলচ্চিত্র আঞ্চলিক জীবনযাত্রা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনবদ্য সমন্বয়।
১৯. চিত্রাঙ্গদা (১৯৯৪) – ঋতুপর্ণ ঘোষের লিঙ্গ পরিচয় এবং সৌন্দর্যের ধারণা নিয়ে এক অভিনব প্রযোজনা।
২০. গণশত্রু (১৯৮৯) – সত্যজিৎ রায়ের এই চলচ্চিত্র সামাজিক এবং রাজনৈতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বক্তব্য।
বিশ্ব সিনেমার অমূল্য রত্ন
বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এই চলচ্চিত্রগুলি বিভিন্ন সংস্কৃতি, দৃষ্টিকোণ, এবং গল্প বলার শৈলীর সাথে পরিচয় করায়:
২১. সিটি অফ গড (২০০২) – ব্রাজিলিয়ান এই চলচ্চিত্র রিও ডি জেনিরোর বস্তিতে বেড়ে ওঠা দুই বন্ধুর জীবন কাহিনী।
আরো জানুন: সেরা ১০০ হ্যাপি নিউ ইয়ার স্পেশাল মুভির তালিকা
২২. লাইফ ইজ বিউটিফুল (১৯৯৭) – রবের্তো বেনিনির এই ইতালীয় চলচ্চিত্র হলোকাস্টের মধ্যেও আশা এবং ভালোবাসার কথা বলে।
২৩. আমেলি (২০০১) – জিন-পিয়ের জুনেটের এই ফরাসি ফিল্ম পারিসের সন্ধানী এক তরুণীর কল্পনাপ্রবণ এবং রোমান্টিক কাহিনী।
২৪. য়ি যিঁ (২০০০) – আং লির এই চিনা মার্শাল আর্টস চলচ্চিত্র রোমান্স, অ্যাকশন এবং সৌন্দর্যের এক অনবদ্য সংমিশ্রণ।
২৫. দ্য সেভেন্থ সিল (১৯৫৭) – ইংমার বার্গম্যানের এই সুইডিশ চলচ্চিত্র মৃত্যু এবং অস্তিত্বের অর্থ সন্ধানের দার্শনিক যাত্রা।
চলচ্চিত্রের ইতিহাসের মাইলফলক
এই চলচ্চিত্রগুলি শিল্পমাধ্যম হিসাবে সিনেমার বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে:
২৬. সাইকো (১৯৬০) – আলফ্রেড হিচকক সাসপেন্স তৈরির যে কৌশল এই চলচ্চিত্রে ব্যবহার করেছেন, তা আজও থ্রিলার জনরার ভিত্তি।
২৭. পাল্প ফিকশন (১৯৯৪) – কোয়েন্টিন ট্যারান্টিনোর এই পোস্টমডার্ন মাস্টারপিস চলচ্চিত্র নির্মাণের নতুন রীতি প্রতিষ্ঠা করেছে।
২৮. রাশোমন (১৯৫০) – আকিরা কুরোসাওয়ার এই জাপানি চলচ্চিত্র সত্য এবং দৃষ্টিকোণের বহুমাত্রিকতা নিয়ে অসাধারণ অন্বেষণ।
২৯. দ্য ম্যাট্রিক্স (১৯৯৯) – ওয়াচাউস্কি ভগ্নীদ্বয়ের এই সাইবারপাঙ্ক মাস্টারপিস সিনেমাটিক প্রভাব এবং দর্শনের সংমিশ্রণ।
৩০. বাইসিকেল থিভস (১৯৪৮) – ভিত্তোরিও ডি সিকার ইতালিয়ান নিওরিয়ালিস্ট এই চলচ্চিত্র সাধারণ মানুষের জীবন সংগ্রামের কাহিনী।
অবিস্মরণীয় অভিনয় বৈশিষ্ট্যপূর্ণ চলচ্চিত্র
অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অনবদ্য পারফরম্যান্সের জন্য এই চলচ্চিত্রগুলি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে:
৩১. ট্যাক্সি ড্রাইভার (১৯৭৬) – রবার্ট ডি নিরোর অভিনয়ে মার্টিন স্কর্সেসির এই চলচ্চিত্র শহুরে নিঃসঙ্গতার এক প্রতিচ্ছবি।
৩২. ওয়ান ফ্লু ওভার দি কুকু’স নেস্ট (১৯৭৫) – জ্যাক নিকোলসনের অসাধারণ অভিনয়ে মিলোস ফর্ম্যানের এই চলচ্চিত্র মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করেছে।
৩৩. দ্য গডফাদার: পার্ট II (১৯৭৪) – দ্য গডফাদারের এই সিক্যুয়েলে আল পাচিনো এবং রবার্ট ডি নিরোর অভিনয় অনবদ্য এক নজির।
৩৪. দ্য সাইলেন্স অফ দ্য ল্যামস (১৯৯১) – অ্যান্থনি হপকিন্স এবং জোডি ফস্টারের অভিনয়ে এই সাইকোলজিকাল থ্রিলার অস্কারজয়ী পাঁচটি বিভাগে।
৩৫. ব্ল্যাক স্ওয়ান (২০১০) – নাটালি পোর্টম্যানের অসাধারণ অভিনয়ে ডেরেন আরোনোফস্কির এই সাইকোলজিকাল থ্রিলার পারফেকশনিজমের অন্ধকার দিক দেখায়।
এনিমেশন চলচ্চিত্রের মাস্টারপিস
এনিমেশন শুধু শিশুদের নয়, সব বয়সের দর্শকদের জন্যও অসাধারণ গল্প শোনাতে পারে:
৩৬. স্পিরিটেড অ্যাওয়ে (২০০১) – হায়াও মিয়াজাকির এই জাপানি এনিমে ফিল্ম একটি ফ্যান্টাসি বিশ্বে শিশুর অভিযানের অসাধারণ গল্প।
৩৭. ফাইন্ডিং নেমো (২০০৩) – পিক্সারের এই এনিমেশন মূল্যবোধ, পরিবার এবং সাহসের কথা অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করেছে।
৩৮. ওয়ালি (২০০৮) – পরিবেশ সংরক্ষণ এবং মানবতার ভবিষ্যৎ নিয়ে পিক্সারের এই নীরব এনিমেশন এক দার্শনিক কাহিনী।
৩৯. পারসেপোলিস (২০০৭) – ইরানি বিপ্লবের সময় একটি মেয়ের বেড়ে ওঠার গল্প নিয়ে এই ফরাসি অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র।
৪০. আকিরা (১৯৮৮) – কাটসুহিরো ওটোমোর এই জাপানি অ্যানিমে সাইবারপাঙ্ক বিশ্বে এক প্রভাবশালী মাস্টারপিস।
যুদ্ধ-বিষয়ক উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং মানবিক অবস্থাকে এই চলচ্চিত্রগুলি বাস্তব এবং গভীরভাবে উপস্থাপন করেছে:
৪১. সেভিং প্রাইভেট রায়ান (১৯৯৮) – স্টিভেন স্পিলবার্গের এই চলচ্চিত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে বাস্তবসম্মত চিত্রায়ণগুলির একটি।
৪২. অ্যাপোকালিপস নাউ (১৯৭৯) – ফ্রান্সিস ফোর্ড কোপোলার এই চলচ্চিত্র ভিয়েতনাম যুদ্ধের মধ্যকার মানসিক যন্ত্রণার এক অবিস্মরণীয় চিত্র।
৪৩. ফুল মেটাল জ্যাকেট (১৯৮৭) – স্ট্যানলি কুব্রিকের এই ভিয়েতনাম যুদ্ধ-বিষয়ক ছবি যুদ্ধে মানুষের মানসিক পরিবর্তনের এক তীব্র চিত্রায়ণ।
৪৪. দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর (১৯৯০) – শীতল যুদ্ধের সময়কার এই থ্রিলারে সোভিয়েত সাবমেরিন ক্যাপ্টেনের গল্প বলা হয়েছে।
৪৫. ডানকার্ক (২০১৭) – ক্রিস্টোফার নোলানের এই চলচ্চিত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধার অভিযানের কাহিনী বলে।
সাসপেন্স এবং থ্রিলার মাস্টারপিস
এই চলচ্চিত্রগুলি দর্শককে আদ্যোপান্ত প্রাণ খোলা উত্তেজনায় আবদ্ধ রাখে:
৪৬. সাইকো (১৯৬০) – আলফ্রেড হিচকক’র এই মাস্টারপিস সাইকোলজিকাল থ্রিলার জনরায় এক নতুন যুগের সূচনা করেছিল।
৪৭. দ্য শাইনিং (১৯৮০) – স্ট্যানলি কুব্রিকের এই হরর চলচ্চিত্র জ্যাক নিকোলসনের অসাধারণ অভিনয়ে বলিষ্ঠ।
৪৮. নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন (২০০৭) – কোয়েন ব্রাদার্সের এই থ্রিলার জাভিয়ের বারদেমের অভিনয়ে অসাধারণ উচ্চতায় পৌঁছেছে।
৪৯. সিলেন্স অফ দ্য ল্যামস (১৯৯১) – জোনাথান ডেমির এই চলচ্চিত্র হ্যানিবাল লেক্টরের চরিত্রকে সিনেমা ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরণীয় ভিলেনদের একজন করে তুলেছে।
৫০. মেমেন্টো (২০০০) – ক্রিস্টোফার নোলানের এই থ্রিলার অস্বাভাবিক ক্রনোলজি ব্যবহার করে একটি অস্বাভাবিক গল্প বলেছে।
সায়েন্স ফিকশন চলচ্চিত্রের অবিস্মরণীয় যাত্রা
এই চলচ্চিত্রগুলি আমাদের কল্পনাকে বাস্তবতার সীমা ছাড়িয়ে নিয়ে যায়:
৫১. ব্লেড রানার (১৯৮২) – রিডলি স্কটের এই সাইবারপাঙ্ক মাস্টারপিস মানবতা এবং অস্তিত্বের জটিল প্রশ্ন তুলেছে।
৫২. এলিয়েন (১৯৭৯) – মহাকাশে হরর এবং সাইন্স ফিকশনের অসাধারণ সংমিশ্রণে রিডলি স্কটের এই চলচ্চিত্র এক ক্লাসিক।
৫৩. ইন্টারস্টেলার (২০১৪) – ক্রিস্টোফার নোলানের এই চলচ্চিত্র মহাকাশ ভ্রমণ, সময় এবং মানবতার অস্তিত্বের এক অসাধারণ গল্প।
৫৪. আরাইভাল (২০১৬) – ডেনিস ভিলনিউভের এই চলচ্চিত্র ভাষা, যোগাযোগ এবং সময়ের প্রকৃতি নিয়ে অভিনব চিন্তা উপস্থাপন করেছে।
৫৫. দ্য ডে দ্য আর্থ স্টুড স্টিল (১৯৫১) – কোল্ড ওয়ার যুগের এই ক্লাসিক সায়েন্স ফিকশন পৃথিবীতে এলিয়েন আগমনের কাহিনী বলে।
রোমান্টিক চলচ্চিত্রের অমর প্রেমকাহিনী
এই চলচ্চিত্রগুলি মানব হৃদয়ের গভীরতম আবেগকে স্পর্শ করে:
৫৬. ক্যাসাব্লাংকা (১৯৪২) – হামফ্রে বোগার্ট এবং ইংগ্রিড বার্গম্যানের অভিনয়ে এই রোমান্টিক ড্রামা সব কালের সেরা প্রেমের গল্পগুলির একটি।
৫৭. এটারনাল সানশাইন অফ দ্য স্পটলেস মাইন্ড (২০০৪) – মাইকেল গোন্ড্রির এই চলচ্চিত্র প্রেম, স্মৃতি এবং হারানোর বেদনা নিয়ে এক অসাধারণ কাহিনী।
৫৮. বিফোর সানরাইজ (১৯৯৫) – রিচার্ড লিঙ্কলেটারের এই চলচ্চিত্র এক রাতের মধ্যে ঘটে যাওয়া অসাধারণ এক প্রেমের গল্প বলে।
৫৯. ইন দ্য মুড ফর লাভ (২০০০) – ওয়োং কার-ওয়াইয়ের এই হংকং চলচ্চিত্র অপূর্ণ প্রেমের গল্প বলার এক অনবদ্য উদাহরণ।
৬০. লা লা ল্যান্ড (২০১৬) – ড্যামিয়েন শ্যাজেলের এই মিউজিক্যাল ড্রামা আধুনিক হলিউডে রোমান্টিক চলচ্চিত্রের ঐতিহ্যকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
হাস্যরস-সমৃদ্ধ উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
হাসি প্রাণের খোরাক, আর এই চলচ্চিত্রগুলি আপনাকে হাসাবে নিশ্চিত:
৬১. সাম লাইক ইট হট (১৯৫৯) – বিলি ওয়াইল্ডারের এই কমেডি ক্লাসিক জ্যাক লেমন, টনি কার্টিস এবং মেরিলিন মনরোর অসাধারণ অভিনয়ে সমৃদ্ধ।
৬২. মন্টি পাইথন অ্যান্ড দ্য হোলি গ্রেইল (১৯৭৫) – মন্টি পাইথন গ্রুপের এই অ্যাবসার্ড কমেডি ব্রিটিশ হাস্যরসের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
৬৩. দ্য গ্র্যান্ড বুদাপেস্ট হোটেল (২০১৪) – ওয়েস অ্যান্ডারসন এর এই বিজয় বিসয়ে চিত্রিত কমেডি একই সাথে হাস্যকর এবং গভীর।
৬৪. গ্রাউন্ডহগ ডে (১৯৯৩) – বিল মারের এই রোমান্টিক কমেডি সময়চক্রে আটকে পড়া একজন মানুষের অসাধারণ গল্প বলে।
৬৫. হট ফাজ (২০০৭) – এডগার রাইটের এই ব্রিটিশ কমেডি পুলিশি এবং অ্যাকশন চলচ্চিত্রের প্যারোডি হিসেবে অসাধারণ কাজ করেছে।
ঐতিহাসিক চলচ্চিত্রের সেরা উদাহরণ
ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলি এই চলচ্চিত্রগুলি অত্যন্ত মনোগ্রাহীভাবে উপস্থাপন করেছে:
৬৬. শিনডলার’স লিস্ট (১৯৯৩) – স্টিভেন স্পিলবার্গের এই চলচ্চিত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি বাঁচানোর চেষ্টা করা এক জার্মান ব্যবসায়ীর কাহিনী।
৬৭. আমাদেউস (১৯৮৪) – মিলোস ফর্ম্যানের এই চলচ্চিত্র সংগীতজ্ঞ মোৎসার্টের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত।
৬৮. বেন-হার (১৯৫৯) – উইলিয়াম ওয়াইলারের এই মহাকাব্যিক ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র রোমান সাম্রাজ্যের যুগে একজন ইহুদির গল্প বলে।
৬৯. গান্ধী (১৯৮২) – রিচার্ড অ্যাটেনবরোর এই চলচ্চিত্রে মহাত্মা গান্ধীর জীবন ও সংগ্রামের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে।
৭০. ১২ ইয়ারস অ্যা স্লেভ (২০১৩) – স্টিভ ম্যাকুইনের এই চলচ্চিত্র মার্কিন দাসত্ব প্রথার কঠোর বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
পারিবারিক চলচ্চিত্রের মাস্টারপিস
সব বয়সের দর্শকদের জন্য এই চলচ্চিত্রগুলি একই সাথে শিক্ষামূলক এবং বিনোদনমূলক:
৭১. ই.টি. দ্য এক্সট্রা-টেরেস্ট্রিয়াল (১৯৮২) – স্টিভেন স্পিলবার্গের এই চলচ্চিত্র বাড়ি ফেরার চেষ্টা করা এক এলিয়েন এবং শিশুদের বন্ধুত্বের অনবদ্য গল্প।
৭২. দ্য লায়ন কিং (১৯৯৪) – ডিজনির এই অ্যানিমেটেড ক্লাসিক বড় হওয়া, দায়িত্ব নেওয়া এবং সাহসী হওয়ার গল্প বলে।
৭৩. দ্য প্রিন্সেস ব্রাইড (১৯৮৭) – রব রাইনারের এই চলচ্চিত্র রোমান্স, অ্যাডভেঞ্চার এবং হাস্যরসের এক অসাধারণ সংমিশ্রণ।
৭৪. হম আপকে হ্যায় কৌন (১৯৯৪) – এই বলিউড ক্লাসিক ভারতীয় পারিবারিক মূল্যবোধ এবং প্রেমের অনবদ্য চিত্রায়ণ।
৭৫. টয় স্টোরি (১৯৯৫) – পিক্সারের এই অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র খেলনাদের জীবন এবং বন্ধুত্বের অসাধারণ কাহিনী।
মার্শাল আর্টস চলচ্চিত্রের মাস্টারপিস
এই চলচ্চিত্রগুলি আপনাকে অবিশ্বাস্য ফাইটিং সিকোয়েন্স এবং গভীর কাহিনী উপহার দেবে:
৭৬. ক্রাউচিং টাইগার, হিডেন ড্রাগন (২০০০) – আং লির এই চিনা মার্শাল আর্টস ড্রামা অভূতপূর্ব লড়াইয়ের দৃশ্য এবং আবেগময় কাহিনীর এক অসাধারণ সংমিশ্রণ।
৭৭. এন্টার দ্য ড্রাগন (১৯৭৩) – ব্রুস লির এই চলচ্চিত্র কুং ফু চলচ্চিত্রের জগতে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিল।
৭৮. দ্য রেইড: রিডেম্পশন (২০১১) – গ্যারেথ ইভান্সের এই ইন্দোনেশীয় অ্যাকশন থ্রিলার সেরা মার্শাল আর্টস সিকোয়েন্সগুলির কয়েকটি প্রদর্শন করে।
৭৯. আসে৯ (২০০৪) – জ্যাকি চ্যানের এই চলচ্চিত্র কুং ফু এবং কমেডি মিশ্রিত এক সফল উদাহরণ।
৮০. ফিস্ট অফ লিজেন্ড (১৯৯৪) – জেট লির অভিনয়ে এই হংকং অ্যাকশন ফিল্ম মার্শাল আর্টস সিনেমার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
আত্মজিজ্ঞাসামূলক চলচ্চিত্র
এই চলচ্চিত্রগুলি আমাদের অস্তিত্ব, প্রকৃতি এবং মানবতা সম্পর্কে গভীর প্রশ্ন করতে বাধ্য করে:
৮১. ২০০১: এ স্পেস ওডিসি (১৯৬৮) – স্ট্যানলি কুব্রিকের এই চলচ্চিত্র মানবতা, প্রযুক্তি এবং মহাবিশ্বের রহস্য নিয়ে জটিল প্রশ্ন তোলে।
৮২. দ্য ট্রুম্যান শো (১৯৯৮) – পিটার উইয়ারের এই চলচ্চিত্র বাস্তবতা, মিডিয়া এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নিয়ে অসাধারণ প্রশ্ন তোলে।
৮৩. মুলহল্যান্ড ড্রাইভ (২০০১) – ডেভিড লিঞ্চের এই চলচ্চিত্র পরিচয়, বাস্তবতা এবং স্বপ্নের মধ্যে সীমারেখা মুছে ফেলে।
৮৪. প্রেস্টিজ (২০০৬) – ক্রিস্টোফার নোলানের এই চলচ্চিত্র অব্সেশন, প্রতারণা এবং ত্যাগের এক জটিল গল্প।
৮৫. সিনেক্ডোচি, নিউ ইয়র্ক (২০০৮) – চার্লি কাউফম্যানের এই চলচ্চিত্র জীবন, শিল্প এবং মৃত্যুভীতি নিয়ে অসাধারণ মেটাফিজিক্যাল জিজ্ঞাসা।
ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল উদাহরণ
বাস্তব জীবনের এই গল্পগুলি আমাদের জগৎকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়:
৮৬. দ্য অ্যাক্ট অফ কিলিং (২০১২) – জোশুয়া ওপেনহাইমারের এই ডকুমেন্টারি ইন্দোনেশিয়ার গণহত্যাকারীদের নিয়ে এক অভূতপূর্ব অধ্যয়ন।
৮৭. মার্চ অফ দ্য পেঙ্গুইনস (২০০৫) – এম্পেরর পেঙ্গুইনদের জীবনযাত্রা নিয়ে এই ফরাসি প্রামাণ্যচিত্র বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
৮৮. বোলিং ফর কলাম্বাইন (২০০২) – মাইকেল মুরের এই চলচ্চিত্র আমেরিকাতে বন্দুক সংস্কৃতি এবং সহিংসতা নিয়ে তীক্ষ্ণ প্রশ্ন তোলে।
৮৯. সার্চিং ফর শুগারম্যান (২০১২) – মালিক বেনজেলুলের এই ডকুমেন্টারি হারিয়ে যাওয়া এক সংগীতশিল্পীর অবিশ্বাস্য গল্প উন্মোচন করে।
৯০. ম্যান অন ওয়্যার (২০০৮) – জেমস মার্শের এই ডকুমেন্টারি অস্কার জয়ী ফিল্মমেকার এরল মরিসের অবিশ্বাস্য জীবন নিয়ে নির্মিত।
টেলিভিশন ইতিহাসের সেরা মিনিসিরিজ
কখনও কখনও একটি গল্প বলতে একটি ফিল্মের চেয়ে বেশি সময় লাগে:
৯১. ব্যান্ড অফ ব্রাদার্স (২০০১) – এইচবিও’র এই মিনিসিরিজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইজি কোম্পানির যোদ্ধাদের কাহিনী বলে।
৯২. চেরনোবিল (২০১৯) – এইচবিও’র এই মিনিসিরিজ ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এবং বীরত্বের গল্প বলে।
৯৩. হোমল্যান্ড (২০১১-২০২০) – এই সাসপেন্স থ্রিলার সিরিজ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং রাজনীতির জটিল বিশ্বকে চিত্রিত করে।
৯৪. ব্রেকিং ব্যাড (২০০৮-২০১৩) – অ্যামিসি’ এই টেলিভিশন সিরিজ এক স্কুল শিক্ষকের অপরাধ জগতে প্রবেশের কাহিনী বলে।
৯৫. গেম অফ থ্রোনস (২০১১-২০১৯) – এইচবিও’র এই ফ্যান্টাসি সিরিজ ক্ষমতা, রাজনীতি এবং যুদ্ধের এক জটিল গল্প বলে।
বাঙালি পরিচালকদের অবিস্মরণীয় চলচ্চিত্র
বাঙালি পরিচালকরা বিশ্ব সিনেমার ইতিহাসে অনন্য অবদান রেখেছেন:
৯৬. অপু ত্রয়ী (১৯৫৫-১৯৫৯) – সত্যজিৎ রায়ের এই ত্রয়ী (পথের পাঁচালী, অপরাজিতো, অপুর সংসার) বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।
৯৭. মেঘে ঢাকা তারা (২০০৮) – কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের এই চলচ্চিত্র গ্রামীণ বাংলার জীবনের এক অনবদ্য চিত্র।
৯৮. মহানগর (১৯৬৩) – সত্যজিৎ রায়ের এই চলচ্চিত্র কলকাতার মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবন সংগ্রামের এক অসাধারণ চিত্রায়ণ।
৯৯. কাগজের ফুল (১৯৫৯) – রিতুপর্ণো ঘোষের এই চলচ্চিত্র প্রেম, বিচ্ছেদ এবং অভিবাসনের এক মর্মস্পর্শী গল্প।
১০০. দ্য ক্লে বার্ড (২০০২) – ঋতুপর্ণ ঘোষের এই চলচ্চিত্র বাঙালি পরিচালকদের আধুনিক চলচ্চিত্র নির্মাণের দক্ষতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
উপসংহার
চলচ্চিত্র শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি আমাদের জীবনকে বদলে দিতে পারে, নতুন দৃষ্টিকোণ দিতে পারে, এবং বিশ্বকে দেখার নতুন উপায় শেখাতে পারে। এই ১০০টি চলচ্চিত্র আপনাকে বিভিন্ন সংস্কৃতি, ইতিহাস, এবং মানবিক অভিজ্ঞতার এক বিশাল পরিসর উন্মোচন করবে। তাই আজই শুরু করুন আপনার চলচ্চিত্র যাত্রা, কারণ প্রতিটি চলচ্চিত্র একটি নতুন জগতের দ্বার খুলে দেয়।
মনে রাখবেন, এই তালিকা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের উপর ভিত্তি করে নয়, বরং চলচ্চিত্রের প্রভাব, উদ্ভাবনী নির্মাণকৌশল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং কালজয়ী গুণাবলীর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। আপনার পছন্দের চলচ্চিত্র তালিকাও তৈরি করুন, এবং চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিশ্বকে আবিষ্কার করতে থাকুন।