হ্যারি পটার মুভি সিরিজ বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফ্যান্টাসি ফ্র্যাঞ্চাইজি। ব্রিটিশ লেখিকা জে. কে. রাউলিং এর লেখা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রগুলো জাদু, বন্ধুত্ব ও শত্রুতার এক মহাকাব্যিক কাহিনী উপস্থাপন করে। এখানে ৮টি সিনেমার সংক্ষিপ্ত কাহিনী তুলে ধরা হলো।
হ্যারি পটার মুভি তালিকা (ক্রম অনুযায়ী)
1
Harry Potter and the Philosopher’s Stone (2001)
2
Harry Potter and the Chamber of Secrets (2002)
3
Harry Potter and the Prisoner of Azkaban (2004)
4
Harry Potter and the Goblet of Fire (2005)
5
Harry Potter and the Order of the Phoenix (2007)
6
Harry Potter and the Half-Blood Prince (2009)
7
Harry Potter and the Deathly Hallows – Part 1 (2010)
8
Harry Potter and the Deathly Hallows – Part 2 (2011)
হ্যারি পটার মুভির সংক্ষিপ্ত কাহিনী
Harry Potter and the Philosopher’s Stone (২০০১)
হ্যারি পটার, একজন সাধারণ ছেলে, তার খালু-খালার কাছে বেড়ে ওঠে। ছোট থেকেই চেয়ে তাদের কাছে নির্যাতিত হয়। হ্যারির খালা খালু হ্যারির সম্বন্ধে সত্যতা গোপন করে রাখে। তাই হ্যারি তার সম্পর্কে কিছুই জানে না। ১১ বছর বয়সে, হ্যারি জানতে পারে যে সে একজন জাদুকর, এবং তাকে হগওয়ার্টস জাদু বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে। হগওয়ার্টসে পৌঁছানোর পর, সে নতুন বন্ধু রন উইসলি এবং হর্মায়োনি গ্রেঞ্জারের সাথে পরিচিত হয়, এবং তাদের সাথে এক হ্যারি নতুন জগতে পা রাখে।
এই রহস্যময় পাথরকে রক্ষা করতে, হ্যারি এবং তার বন্ধুরা একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, যার মধ্যে রয়েছে জাদু পরীক্ষা, একাধিক বিপদজনক প্রতিবন্ধকতা, এবং ভলডেমর্টের আত্মার বিরুদ্ধে লড়াই। অবশেষে, হ্যারি পাথর রক্ষা করে এবং ভলডেমর্টের আত্মাকে আবারও পরাজিত করে।
Harry Potter and the Chamber of Secrets (২০০২)
হ্যারি পটার হগওয়ার্টসে তার দ্বিতীয় বছর শুরু করতে যাচ্ছে, কিন্তু তার জন্য কিছু রহস্যময় ঘটনা ঘটতে শুরু করে। হ্যারি, রন, এবং হর্মায়োনি জানতে পারে যে হগওয়ার্টসে কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে ছাত্ররা একের পর এক পাথরের মত মূর্তি হয়ে যাচ্ছে। এই রহস্যের সমাধান খুঁজতে, তারা জানতে পারে যে “চেম্বার অফ সিক্রেটস” নামক একটি গোপন কক্ষ হগওয়ার্টসের নিচে লুকিয়ে আছে, যেখানে অদৃশ্য সাপ বাস করে এবং স্কুলে এমন ঘটনার জন্য দায়ী।
হ্যারি তার বন্ধুদের সঙ্গে মিলে সেই চেম্বারটি খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত চালিয়ে যায়। তারা জানতে পারে যে চেম্বারটি বহু বছর আগে খোলা হয়েছিল এবং সেবার এক ছাত্র নিহত হয়েছিল সেখানে তাই চেম্বারটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার, একজন অজানা শত্রু চেম্বারটি আবার খুলে দেয় এবং স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
হ্যারি শিগগিরই বুঝতে পারে যে, সাপের মালিক হল “বেসিলিস্ক”, এটি একটি সাপ যা চেম্বারে মধ্যে থাকে, এবং কেউ যদি কেবল তার চোখে দেখে তাহলে পাথরে পরিবর্তন হয়ে যাবে। হ্যারি তার বন্ধুদের সাহায্যে চেম্বারটির মধ্যে প্রবেশ করে এবং সাপটিকে পরাস্ত করে।
এছাড়াও, হ্যারি জানে যে তার বাবা-মায়ের প্রাক্তন বন্ধু এবং তার জীবনের রহস্যময় মানুষ স্যালাজার স্লিথেরিনের এক ডেরিভেটিভ ছিল। কিন্তু অবশেষে, হ্যারি জানে যে তার সত্ত্বার মধ্যে এক অদ্ভুত শক্তি রয়েছে, যা তাকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে।
Harry Potter and the Prisoner of Azkaban (২০০৪)
হ্যারি পটার তার তৃতীয় বছর হগওয়ার্টস স্কুলে ফিরে আসার জন্য প্রস্তুত, কিন্তু এবার তার জন্য কিছু অবিশ্বাস্য খবর অপেক্ষা করছে। সে জানতে পারেন যে আজকাবান কারাগার থেকে একজন অপরাধী, সিরিয়াস ব্ল্যাক, পালিয়েছে। ব্ল্যাক একজন খ্যাতনামা দোষী ব্যক্তি, যিনি হ্যারি পটার-এর বাবা-মাকে হত্যা করার জন্য দায়ী ছিলেন। এই খবর হ্যারি, রন, এবং হর্মায়োনিকে উত্তেজিত করে তোলে, কারণ তারা বিশ্বাস করে যে ব্ল্যাক হ্যারি পটারকে হত্যা করতে চায়।
হ্যারি, রন এবং হর্মায়োনি তখন হগওয়ার্টসের চারপাশে আতঙ্কিত হয়ে বেড়াতে শুরু করে। পরে তারা জানতে পারে যে সিরিয়াস ব্ল্যাক আসলে একসময়ে হ্যারি পটার-এর বাবা-মায়ের বন্ধু ছিলেন এবং তাকে ফাঁসানো হয়েছে। ব্ল্যাক আসলে হ্যারি পটারকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে চাচ্ছিলেন, যাতে হ্যারি তার জীবনের কিছু সত্য ঘটনা সম্বন্ধে জানতে পারে।
এই সিনেমায় হ্যারি তার প্রাক্তন শিক্ষক, প্রফেসর লুপিনের সহায়তায় উইজার্ডদের রহস্যময় দুনিয়ার অন্ধকার দিকগুলি উন্মোচন করতে শুরু করে। প্রফেসর লুপিন হ্যারি-কে জানিয়ে দেন যে সিরিয়াস ব্ল্যাক আসলে তার খুনী নয়, বরং তার এক বন্ধু পিটার পেট্টিগ্রু ছিল, যিনি তার বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী।
পরিশেষে, হ্যারি ও তার বন্ধুরা আজকাবানের সুরক্ষিত জেল থেকে সিরিয়াস ব্ল্যাককে মুক্ত করে এবং হ্যারি জানতে পারে যে তার বাবা-মায়ের মৃত্যু কিছুটা ভিন্নভাবে ঘটেছিল। এই অভিজ্ঞতা হ্যারির জীবনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দেয় এবং তার আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
Harry Potter and the Goblet of Fire (২০০৫)
হ্যারি পটার হগওয়ার্টস স্কুলে তার চতুর্থ বছরের জন্য ফিরে আসে, যেখানে এই বছরটি অন্য বছরের চেয়ে বিশেষভাবে অন্যরকম। হ্যারি জানতে পারে যে হগওয়ার্টসে এই বছর অনুষ্ঠিত হবে ত্রি-উইজার্ড টুর্নামেন্ট, এটি একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতা যেখানে তিনটি ভিন্ন স্কুলের সেরা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করবে। এই প্রতিযোগিতায় তিনটি বিপজ্জনক ইভেন্ট থাকবে, যেখানে যেকোনো কিছু হতে পারে এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া এই বছর, কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে।
হ্যারি ১৭ বছরের কম বয়সী হওয়া সত্ত্বেও, একটি দুর্ঘটনায় তিনি ত্রি-উইজার্ড টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচিত হন। অবাক করা বিষয় হলো, হ্যারি নিজে তার নাম প্রেজেন্ট না করেও, টুর্নামেন্টের গ্লোবাল নির্বাচনে নির্বাচিত হয়। সে জানে না কে তাকে এই পদক্ষেপে নির্বাচন করেছে।
প্রথমে, হ্যারি তিনটি ইভেন্টে অংশ নেয়ার মাধ্যমে তার সাহসিকতা এবং দক্ষতা প্রদর্শন করে, বিশেষত ড্রাগন এবং জলের গভীরতায় টাস্ক সম্পন্ন করার সময়। টুর্নামেন্টের শেষ ইভেন্টে, হ্যারি ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী সেড্রিক ডিগরি একসাথে ট্রফি ধরার জন্য এগিয়ে যায়। কিন্তু, ট্রফি আসলে এক ধরনের “পোর্টকি”, যা তাদের দুইজনকে ভলডেমর্টের সামনে নিয়ে যায়।
ভলডেমর্ট, কে হ্যারি অনেকদিন ধরে মনে করতো মৃত, কিন্তু তার জীবনে সে আবার ফিরে আসে এবং তাকে ও সেড্রিককে হত্যা করার চেষ্টা করে আর সেখানেই সেড্রিকের মারা যায়। হ্যারি কোনোভাবে পালিয়ে আসে সাথে সেড্রিকের মরদেহ নিয়ে আসে হগওয়ার্টসে। কিন্তু টুর্নামেন্টের শেষের সেই ঘটনার কারণে পুরো বিশ্ব জানতে পারে যে ভলডেমর্ট আবার ফিরে এসেছে, এবং এই কারণে হ্যারির জীবন এখন আরও বিপদজনক হয়ে উঠেছে।
হ্যারি এখন এক নতুন যুদ্ধের পথে, যেখানে শুধু তার নিজের জীবন নয়, বরং সারা বিশ্বও ভলডেমর্টের প্রতিরোধের মুখে রয়েছে।
Harry Potter and the Order of the Phoenix (২০০৭)
হ্যারি পটার তার পঞ্চম বছরে হগওয়ার্টসে ফিরে আসে, কিন্তু এবার পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ভলডেমর্টের পুনরুত্থানের কারণে, জাদু দুনিয়া হ্যারি ও তার বন্ধুবান্ধবের প্রতি এক ধরনের সন্দেহ প্রকাশ করছে। সরকারি কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে মিনিস্ট্রি অফ ম্যাজিক, ভলডেমর্টের ফিরে আসা অস্বীকার করছে, এবং সেই কারণে, হ্যারি ও তার বন্ধুরা একাকী হয়ে পড়েছে।
হ্যারি তার নিজের অভিজ্ঞতা এবং ভলডেমর্টের বিপদ সম্পর্কে সবার কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানোর জন্য লড়াই করতে থাকে, কিন্তু কেউ তার কথা বিশ্বাস করতে চায় না। এর মধ্যেই, হ্যারি তার মস্তিষ্কে থাকা শোক ও গ্লানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অর্ডার অফ দ্য ফিনিক্সের সদস্যদের সাহায্য নেয়।
হগওয়ার্টসে এক নতুন শিক্ষিকা, প্রফেসর ডোলোরেস উমব্রিজ, পাঠদান শুরু করেন, যিনি অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং বিধিনিষেধে ভরা। তিনি শিক্ষকদের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে, শাসন করার জন্য কঠোর নিয়ম চালু করেন, যা হগওয়ার্টসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করে।
হ্যারি, হর্মিওনি, রন ও অন্যান্য বন্ধুদের সাহায্যে “ডিফেন্স এগেইনস্ট দ্য ডার্ক আর্টস” ক্লাস শুরু করে, যাতে ছাত্ররা তাদের নিজস্ব সুরক্ষা শিখতে পারে। এই গোপন ক্লাস “ডিএ” (ডাম্বলডোরের লস্কো) নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।
এদিকে, হ্যারি তার মস্তিষ্কে ভলডেমর্টের চিন্তা ও অভিপ্রায় অনুভব করতে থাকে, যা তাকে ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের দিকে ঠেলে দেয়। একসময়, হ্যারি জানতে পারে যে ভলডেমর্ট একটি প্রাচীন ও শক্তিশালী বস্তু, “দ্য প্রফেসি,” খুঁজছে যা হ্যারি ও তার বিরুদ্ধে তার যুদ্ধকে আরো জটিল করে তুলবে।
চলতি ঘটনা গুলোর সাথে সাথে, এক সময় হ্যারি ও তার বন্ধুদের একটি বড় লড়াই এর সম্মুখীন হতে হয় মন্ত্রক দ্বারা। চূড়ান্ত লড়াই, হ্যারি মন্ত্রক অ্যান্ড অর্ডার অফ দ্য ফিনিক্সের সদস্যদের সঙ্গে মিলে ভলডেমর্টের দুষ্ট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে লড়াই করে। তবে, এই লড়াইয়ে হ্যারি তার বন্ধু সিরিয়াস ব্ল্যাককে হারায়, যিনি তার জন্য এক প্রিয় পরিজন ছিলেন।
Harry Potter and the Half-Blood Prince (২০০৯)
এই সিনেমাটি হ্যারি পটার সিরিজের ষষ্ঠ পাট, যেখানে হ্যারি তার ষষ্ঠ বছর হগওয়ার্টসে কাটাচ্ছে। পৃথিবী জুড়ে ভলডেমর্টের শক্তি বাড়ছে, এবং হ্যারি, হরমায়নি ও রন তাদের যাদুবিদ্যা এবং জাদু বিশ্ব সম্পর্কে আরও গভীরভাবে শিখছে। হ্যারি জানতে পারে, ভলডেমর্ট তার অমরত্ব অর্জন করতে আরও কিছু ভীষণ শক্তিশালী যাদু ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে হোঅরক্রক্স।
এই পাটে হ্যারি প্রফেসর ডম্বলডোরের সাথে বিশেষ ক্লাসে যোগ দেয়, যেখানে তিনি ভলডেমর্টের অতীতের কিছু অন্ধকার দিক জানার চেষ্টা করেন। হ্যারি একটি পুরনো বই পায়, যা “হাফ-ব্লাড প্রিন্স” নামে পরিচিত, এবং এতে বেশ কিছু বিশেষ রেসিপি এবং জাদু টিপস রয়েছে। হ্যারি বইটি ব্যবহার করে তার জাদুবিদ্যা শিখতে থাকে এবং অনেক সমস্যার সমাধান পায়।
এদিকে, হগওয়ার্টসে রোমান্সের ছোঁয়া লাগতে শুরু করে, যেখানে হ্যারি ও জিনির সম্পর্ক গাঢ় হয়, এবং রন ও হারমায়নির মধ্যে কিছু জটিলতা তৈরি হয়। সিনেমার শেষের দিকে, ডম্বলডোরকে হত্যা করার জন্য স্ন্যাপের হাতে ধরা পড়ে, যা হ্যারি ও তার বন্ধুদের জন্য একটি বড় ব্যবধান হয়ে দাঁড়ায়।
Harry Potter and the Deathly Hallows – Part 1 (২০১০)
এই মুভিটি হ্যারি পটার সিরিজের সপ্তম অধ্যায়ের প্রথম অংশ। সিনেমাটি হ্যারি, হরমায়নি, এবং রনকে কেন্দ্র করে, যাঁরা হগওয়ার্টস ছেড়ে দিয়ে ভলডেমর্টের বিপজ্জনক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে বেরিয়ে পড়েন। তাদের প্রধান লক্ষ্য হল ভলডেমর্টের হোঅরক্রক্সগুলি খুঁজে বের করা, যেগুলি তার অমরত্বের জন্য অপরিহার্য।
এই যাত্রার পথে, তিন বন্ধু নানা বিপদের সম্মুখীন হয়। তারা নানা গোপন স্থানে যাওয়া, নানা যুদ্ধের মধ্যে পড়ে এবং একে অপরের সহায়তায় এগিয়ে যায়। হ্যারি ও তার বন্ধুদের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হয়, কিন্তু তাদের এই যাত্রা সহজ নয়।
সিনেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো “ডেথলি হ্যালোজ” বা “মৃত্যুর গহনা” নামক একটি পুরনো পৌরাণিক কাহিনীর প্রতি আস্থা। হ্যারি জানে যে এই গহনা তিনটি অত্যন্ত শক্তিশালী বস্তু যা ভলডেমর্টকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
এদিকে, ভলডেমর্ট আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে এবং তার অনুসারীরা, ডেথ ইটার্স, হ্যারি ও তার বন্ধুদের খোঁজে বেরিয়ে পড়ছে। সিনেমার শেষাংশে, ডম্বলডোরের পুরনো বন্ধু, স্ন্যাপ, প্রতিকূলতা এবং অবিশ্বাসের সাথে কিছু গোপন রহস্য প্রকাশ করে, যা পরবর্তী মুভির জন্য একটি বড় উত্তেজনা তৈরি করে।
Harry Potter and the Deathly Hallows – Part 2 (২০১১)
এই মুভিটি হ্যারি পটার সিরিজের শেষ পর্ব এবং ভলডেমর্টের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত যুদ্ধে হ্যারি, রন, এবং হরমায়নির সংগ্রামকে কেন্দ্র করে। সিনেমাটি সোজাসুজি ডার্ক এবং অ্যাডভেঞ্চার ভরপুর, যেখানে হ্যারি ও তার বন্ধুদের শেষ লড়াই শুরু হয়।
মুভির শুরুতে, হ্যারি, রন, এবং হরমায়নি ভলডেমর্টের হোঅরক্রক্সগুলি খুঁজে শেষ করতে ছুটে চলে। তারা জানে যে এই অন্ধকার শক্তিগুলি ধ্বংস না করলে ভলডেমর্টকে পরাজিত করা সম্ভব হবে না। তাদের এই অভিযান তাদের বিভিন্ন বিপদ ও অপ্রত্যাশিত বাঁধার মধ্যে নিয়ে যায়, কিন্তু তাদের সঙ্গী বন্ধুত্ব ও আত্মত্যাগ তাদের শক্তিশালী করে তোলে।
শেষ পর্যন্ত, হ্যারি হগওয়ার্টসে ফিরে আসে, যেখানে ভলডেমর্ট ও তার অনুসারীরা হামলা শুরু করে। এখানে হ্যারি এবং তার বন্ধুরা স্কুলের প্রতিটি কোণায় যুদ্ধ করে, কিন্তু তাদের লক্ষ্য একটাই—ভলডেমর্টকে শেষ করা। সিনেমার একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হলো হ্যারি এবং ভলডেমর্টের চূড়ান্ত দ্বৈরথ, যেখানে হ্যারি তার বন্ধুদের আত্মত্যাগের মূল্য বুঝে শেষ পর্যন্ত ভলডেমর্টকে পরাজিত করে।
এই মুভিটি হ্যারি পটার সিরিজের জন্য একটি প্রাপ্তি ও আবেগপূর্ণ সমাপ্তি হিসেবে কাজ করে, যেখানে দর্শকরা অনুভব করেন যে সত্যিকারের সাহস ও ভালোবাসার শক্তি সবকিছু জয় করতে পারে। এই চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্য, যেখানে হ্যারি ও তার বন্ধুদের ভবিষ্যতের নতুন প্রজন্মকে হগওয়ার্টসে পাঠানো হচ্ছে, সিরিজের একটি নস্টালজিক এবং হৃদয়গ্রাহী উপসংহার তৈরি করে।
হ্যারি পটার ক্যারেক্টারস (প্রধান চরিত্র)
Harry Potter “Daniel Radcliffe” – “The Boy Who Lived”
হ্যারি পটার, সিরিজের প্রধান চরিত্র, একমাত্র ছেলে যে ভলডেমর্টের আক্রমণে বেঁচে যায় এবং তার কপালে এক বিশেষ দাগ হয়। হ্যারি শিখে যায় যে সে এক জাদুকর এবং হগওয়ার্টসে তার যাত্রা শুরু হয়, যেখানে সে সাহস, বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসার শক্তি সম্বন্ধে জানতে এবং বুঝতে পারে।
Hermione Granger “Emma Watson” – The Brilliant Friend
হরমায়নি গ্রেঞ্জার, হ্যারি এবং রনের সেরা বন্ধু, এক অসাধারণ বুদ্ধিমান যুবতী। সে হগওয়ার্টসে তার বন্ধুদের সহায়ক, কঠোর পরিশ্রমী এবং পরিপূর্ণ শ্রেণীভুক্ত স্টুডেন্ট। হরমায়নি কেবল জাদু জানে না, তার মানবিক গুণাবলীও মুগ্ধকর।
Ron Weasley “Rupert Grint” – The Loyal Friend
রন উইজলি, হ্যারির ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং উইজলি পরিবারের সদস্য, যে সাহস এবং বন্ধুত্বের প্রতীক। অনেক সময় সে নিজের অস্বস্তি কাটিয়ে হ্যারির পাশে থাকে এবং বেশিরভাগ সময় খোলামেলা এবং হাস্যকর।
Albus Dumbledore “Michael Gambon” – The Wise Mentor
আলবাস ডাম্বলডোর, হগওয়ার্টসের প্রধান অধ্যক্ষ, একজন দারুণ জাদুকর এবং হ্যারি পটারকে সবচেয়ে বড় মেন্টর। তার জীবন ও সিদ্ধান্ত হ্যারি এবং তার বন্ধুরা তথা জাদু জগতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। ডাম্বলডোরের রহস্যময় এবং সহানুভূতিশীল মনোভাব তাকে একজন অসাধারণ চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
Lord Voldemort “Ralph Fiennes” – The Dark Lord
লর্ড ভলডেমর্ট, হ্যারি পটার সিরিজের প্রধান খলনায়ক, যে অমরত্বের জন্য লড়াই করে এবং জাদু জগতের সবকিছু দখল করতে চায়। তার অন্ধকার শক্তি, ভয়ঙ্কর উপস্থিতি এবং নিষ্ঠুর মনোভাব তাকে অন্যতম সবচেয়ে ভয়ঙ্কর চরিত্রে পরিণত করেছে।
Severus Snape “Alan Rickman” – The Mysterious Hero
সেভেরাস স্নেপ, রহস্যময় এবং জটিল চরিত্র, যে প্রথমে হ্যারি পটারকে শত্রু মনে হলেও, পরে তার আসল উদ্দেশ্য জানা যায়। স্নেপের জীবনের মধ্যে প্রেম, ত্যাগ এবং অত্যন্ত গোপনীয়তা ছিল, এবং শেষ পর্যন্ত সে হ্যারি এবং তার বন্ধুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
Draco Malfoy “Tom Felton” – The Rival
ড্রাকো ম্যালফয়, হ্যারির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, যে তার পরিবার ও সমাজের মধ্যে ভিন্ন মতবাদে বেড়ে ওঠে। যদিও তার চরিত্রের মধ্যে অনেক অন্ধকার দিক ছিল, তবে পরবর্তীকালে তার মনের মধ্যে পরিবর্তন দেখা যায় এবং সে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করে।
হ্যারি পটার বই সিরিজ
এই সিরিজের সিনেমাগুলো জে. কে. রাউলিং এর লেখা ৭টি বই অবলম্বনে নির্মিত। বইগুলো হলো
Harry Potter and the Philosopher’s Stone
(১৯৯৭) প্রথম বইটি হ্যারি পটারকে পরিচয় করিয়ে দেয় হগওয়ার্টস জাদু স্কুলের সাথে এবং তার কপালের পরিচিত দাগের রহস্য উন্মোচন হয়।
Harry Potter and the Chamber of Secrets
(১৯৯৮) দ্বিতীয় বইটি হ্যারি ও তার বন্ধুদের জন্য এক নতুন শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার গল্প, যেখানে হগওয়ার্টসে একটি গোপন চেম্বার খোলা হয়।
Harry Potter and the Prisoner of Azkaban
(১৯৯৯) তৃতীয় বইটি সিরিয়াস ব্ল্যাক নামে এক পলাতক আসামির রহস্য উন্মোচন করে, যার সাথে হ্যারি পটারের অতীতের সম্পর্ক রয়েছে।
Harry Potter and the Goblet of Fire
(২০০০) চতুর্থ বইটি ত্রি-উইজার্ড টুর্নামেন্টের আশ্চর্যজনক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হ্যারি পটারের জীবনে নতুন বিপদ নিয়ে আসে।
Harry Potter and the Order of the Phoenix
(২০০৩) পঞ্চম বইটি হ্যারি পটারের জন্য নতুন শক্তিশালী শত্রুদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করে এবং ড্যাথ ইটারদের বিরুদ্ধে একটি গোপন আক্রমণ দল গঠন করে।
Harry Potter and the Half-Blood Prince
(২০০৫) ষষ্ঠ বইটি হ্যারি ও তার বন্ধুদের ব্যক্তিগত জীবন ও অতীতের রহস্য উন্মোচন করে, এবং নতুন মন্ত্রীর মুখোমুখি হোন যারা তাদের ভবিষ্যত অন্ধকারে নিয়ে আসে।
Harry Potter and the Deathly Hallows
(২০০৭) সপ্তম ও চূড়ান্ত বইটি হ্যারি ও তার বন্ধুদের জন্য ভলডেমর্টের বিরুদ্ধে শেষ যুদ্ধের গল্প এবং সবকিছু পরিবর্তন করার মূহূর্ত।
Harry Potter and the Cursed Child (নাটক ও বই)
“Harry Potter and the Cursed Child” ২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি নাটক, যেখানে হ্যারি পটারের ছেলে অ্যালবাস সেভেরাস পটার এবং ড্রাকো ম্যালফয়ের ছেলে স্করপিয়াস নতুন এক অভিযানে বের হয়।
হ্যারি পটার মুভি সিরিজ এক মহাকাব্যিক ফ্যান্টাসি, যা বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। যারা এখনো এই মুভি দেখেননি, তাদের অবশ্যই দেখা উচিত!
আপনার প্রিয় হ্যারি পটার মুভি কোনটি? কমেন্টে জানান!