back to top

ইমরান হাশমী সিনেমা: বলিউডের কিস কিং | Emran Hashmi

- Advertisement -

ইমরান হাশমী সিনেমা: বলিউডের কিস কিং

ইমরান হাশমীর অভিনয় যাত্রা, তাঁর সেরা সিনেমা এবং বলিউডে তাঁর অবদান নিয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা


ইমরান হাশমী - বলিউড অভিনেতা

ভূমিকা: ইমরান হাশমীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

বলিউড সিনেমার জগতে ইমরান হাশমী একটি অনন্য নাম। “কিস কিং” থেকে শুরু করে গম্ভীর চরিত্রে অভিনয় করা এই অভিনেতা বলিউডের ইতিহাসে একটি স্বতন্ত্র জায়গা করে নিয়েছেন। ১৯৭৯ সালের ২৪ মার্চ মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করা ইমরান হাশমী (আসল নাম: ইমরান আনোয়ার হাশমী) বলিউডের বিখ্যাত ভাগনা নির্দেশক মাহেশ ভাটের ভাগনে। তিনি প্রায় দুই দশক ধরে ভারতীয় সিনেমা জগতে সক্রিয় আছেন এবং তাঁর অভিনীত ছবিগুলি দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।

ইমরান হাশমীর সিনেমা জীবনের শুরু ২০০৩ সাল থেকে। “ফুটপাথ” নামক একটি ক্রাইম থ্রিলার ছবির মাধ্যমে তিনি অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন। কিন্তু তাঁর প্রকৃত সাফল্য এসেছিল ২০০৪ সালে “মার্ডার” ছবির মাধ্যমে। এরপর থেকে, তিনি বলিউডের একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে “জীনাত”, “আশিক বানায়া আপনে”, “রাজ”, “দি ডার্টি পিকচার”, “শঙ্গহাই”, “আজহার”, “টাইগার ৩” ইত্যাদি।

“ইমরান হাশমী বলিউডের একমাত্র অভিনেতা যিনি সফলভাবে নিজের ধরন এবং চিত্রনাট্য নির্বাচনের মাধ্যমে নিজের ভাবমূর্তি বদলে নিতে সক্ষম হয়েছেন।”

এই প্রবন্ধে, আমরা ইমরান হাশমীর সিনেমাটিক যাত্রা, তাঁর অভিনীত সেরা ছবিগুলি, তাঁর অভিনয় শৈলীর বিবর্তন এবং ভারতীয় সিনেমায় তাঁর অবদান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সেই সাথে, ইমরান হাশমীর আসন্ন প্রজেক্ট এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তাঁর উপস্থিতি নিয়েও আলোকপাত করব।

❖ ❖ ❖

প্রাথমিক জীবন ও কর্মজীবনের শুরু

ইমরান হাশমীর প্রাথমিক জীবন

ইমরান হাশমী মুম্বাইয়ের একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আনোয়ার হাশমী একজন ব্যবসায়ী এবং মা মাহেরা হাশমী গৃহিণী। তিনি মুম্বাইর জাভিয়ার কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। সিনেমার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই ছিল, যার একটি বড় কারণ হলো তাঁর খালু মাহেশ ভাট, যিনি একজন বিখ্যাত নির্দেশক এবং চিত্রনাট্যকার।

ইমরান হাশমীর প্রথম অভিনয় অভিজ্ঞতা শিশু অভিনেতা হিসেবে। তিনি ১৯৯০ সালে “ক্রাইম ও করেকশন” নামক একটি টেলিভিশন সিরিজে একটি ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেন। তারপর ১৯৯৮ সালে তিনি “মেহবুব মেরা” ছবিতে একটি ছোট চরিত্রে দেখা যান। তবে প্রকৃত অর্থে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু হয় ২০০৩ সালে, যখন তিনি “ফুটপাথ” নামক ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন।

“ফুটপাথ” ছবিটি মাহেশ ভাট দ্বারা নির্মিত এবং বিক্রম ভাট দ্বারা পরিচালিত। এই ছবিতে ইমরান হাশমী অনিমেষ দিওয়ান নামে একজন ক্রিমিনালের চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর সহ-অভিনেতা ছিলেন আফতাব শিবদাসানি এবং রাহুল দেব। যদিও ছবিটি বক্স অফিসে তেমন সাফল্য পায়নি, তবে ইমরান হাশমীর অভিনয় দক্ষতা সমালোচকদের নজর কেড়েছিল।

তার পরের ছবি ছিল ২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া “মার্ডার”। এই ছবিতে তিনি শিমালী (মল্লিকা শেরাওয়াত) নামক একজন নারীর সাথে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত অশ্বনীর চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি তার সময়ের একটি সাহসী ছবি হিসেবে পরিচিত হয় এবং এটি বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য পায়। এই ছবির মাধ্যমেই ইমরান হাশমী “কিস কিং” হিসেবে পরিচিতি পান, কারণ ছবিতে তিনি কয়েকটি সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করেন।

“মার্ডার ছবির সময় আমি আমার ক্যারিয়ারে অনিশ্চিত ছিলাম। ছবিটি একটি বড় রিস্ক ছিল, কিন্তু আমি আমার ইনস্টিংক্ট ফলো করেছিলাম এবং এটি আমার জন্য একটি ব্রেকথ্রু হয়ে ওঠে।”
– ইমরান হাশমী

“মার্ডার” ছবির সাফল্যের পর, ইমরান হাশমী “জীনাত” (২০০৫), “আক্সর” (২০০৬), “গ্যাংস্টার” (২০০৬), “আওয়ারাপন” (২০০৭) ইত্যাদি ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবিগুলোতেও তিনি রোমান্টিক ও থ্রিলার ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেন এবং ধীরে ধীরে একজন বিশ্বাসযোগ্য অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

❖ ❖ ❖

সাফল্যের শিখরে ইমরান হাশমী

যদিও “মার্ডার” ছবির মাধ্যমে ইমরান হাশমী বলিউডে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন, তবে তাঁর কর্মজীবনের প্রকৃত সাফল্য এসেছিল ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে। এই সময়ে তিনি বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান এবং নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করেন।

২০০৭ সালে তিনি “আওয়ারাপন” নামক একটি রোমান্টিক থ্রিলার ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবিতে তিনি শিভম পান্ডে নামে একজন গ্যাম্বলারের চরিত্রে অভিনয় করেন, যে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং পরে হঠাৎ করে এক মাফিয়া বসের হাতে পড়ে যায়। ছবিটি বক্স অফিসে বেশ সাফল্য পায় এবং ইমরান হাশমীর অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ায়।

২০০৮ সালে তিনি “জানত: লেট’স ফল ইন লাভ এগেইন” ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবিতে তিনি আকাশ রানার চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি একজন প্লে-বয় যিনি সত্যিকারের প্রেমে পড়েন এবং এর জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত বিপন্ন করেন। ছবিটি বক্স অফিসে হিট হয় এবং ইমরান হাশমী তার অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হন।

কিন্তু তাঁর কর্মজীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছিল ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া “রাজ” ছবির মাধ্যমে। এই ভৌতিক থ্রিলার ছবিতে তিনি রাজ মালহোত্রা নামক একজন লোকের চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি তার প্রেমিকা সিম্রন (বিপাশা বসু) এর মৃত্যুর পিছনে রহস্য উদঘাটন করতে চান। ছবিটি বক্স অফিসে বড় হিট ছিল এবং এটি একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সূচনা করে, যার পরবর্তী সিক্যুয়েলগুলিতেও ইমরান হাশমী অভিনয় করেন। এই ছবির মাধ্যমে ইমরান হাশমী একজন বক্স অফিস হিরো হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

“ইমরান হাশমী এমন একজন অভিনেতা যিনি বার বার প্রমাণ করেছেন যে তিনি যে কোনো চরিত্রে জীবন ফুটিয়ে তুলতে পারেন।”

২০১০ সালে তিনি “ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই” নামক একটি গ্যাংস্টার ড্রামা ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবিতে তিনি শোয়েব খান নামে একজন গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি মুম্বাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডে উঠে আসেন। ছবিটি বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য পায় এবং ইমরান হাশমীর অভিনয় দক্ষতা আবারও প্রশংসিত হয়।

বার বার সাফল্য লাভের মাধ্যমে, ইমরান হাশমী বলিউডের একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন এবং তিনি আরও বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। এর পরবর্তী সময়গুলোতে তিনি বিভিন্ন ধরনের ছবিতে অভিনয় করেন এবং তিনি “কিস কিং” হিসেবে খ্যাত হলেও, তিনি যে সত্যিকারের একজন প্রতিভাবান অভিনেতা, তা প্রমাণ করেন।

❖ ❖ ❖

ইমরান হাশমীর সেরা ১০ সিনেমা

ইমরান হাশমী তাঁর দীর্ঘ অভিনয় জীবনে অনেকগুলি উল্লেখযোগ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন। এখানে তাঁর অভিনীত সেরা ১০টি ছবির একটি তালিকা দেওয়া হলো:

১. মার্ডার (২০০৪)

মার্ডার ছবি

পরিচালক: অনুরাগ বসু

অভিনেতা/অভিনেত্রী: ইমরান হাশমী, মল্লিকা শেরাওয়াত, আসমিত পাটেল

চরিত্র: অশ্বনী

গল্প: অশ্বনী একটি অসুখী বিবাহে আবদ্ধ, যিনি তার প্রাক্তন প্রেমিকা শিমালীর সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করেন এবং একটি প্রেমের ত্রিভুজে জড়িয়ে পড়েন। ছবিটি প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা এবং আবেগের একটি জটিল ওয়েব চিত্রিত করে। এই ছবির মাধ্যমে ইমরান হাশমী “কিস কিং” হিসেবে পরিচিতি পান।

২. আওয়ারাপন (২০০৭)

আওয়ারাপন ছবি

পরিচালক: মহেশ ভাট

অভিনেতা/অভিনেত্রী: ইমরান হাশমী, শ্রিয়া সরন, আশুতোষ রানা

চরিত্র: শিভম পান্ডে

গল্প: শিভম পান্ডে একজন গ্যাম্বলার, যিনি প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। পরে তিনি মাফিয়া বস মল্লিক (আশুতোষ রানা) এর জন্য কাজ করতে শুরু করেন এবং তার প্রেমিকা রিহানার (শ্রিয়া সরন) দেখাশোনা করার দায়িত্ব পান। ছবিটি একটি ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ থ্রিলার যা মুক্তি ও মুক্তির থিমের উপর ভিত্তি করে তৈরি।

৩. জানত: লেট’স ফল ইন লাভ এগেইন (২০০৮)

জানত ছবি

পরিচালক: কুণাল দেশমুখ

অভিনেতা/অভিনেত্রী: ইমরান হাশমী, সোনাল চৌহান, জাভেদ শেখ

চরিত্র: আকাশ রানা

গল্প: আকাশ রানা একজন রাস্তার ছেলে যিনি জোয়ার পরিমাণ পরিবর্তন করতে টাকা ব্যবহার করে। প্রথমে তিনি ছোট স্কিমে জড়িত থাকেন, কিন্তু পরে ক্রিকেট ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়েন। তিনি একজন মডেল নেহা (সোনাল চৌহান) এর প্রেমে পড়েন এবং তার জন্য সমস্ত ঝুঁকি নেন। ছবিটি ক্রিকেট ম্যাচ ফিক্সিং এবং অনৈতিক অর্থের বিষয়ে আলোকপাত করে।

৪. রাজ (২০০৯)

রাজ ছবি

পরিচালক: মহেশ ভাট

অভিনেতা/অভিনেত্রী: ইমরান হাশমী, বিপাশা বসু, ধনঞ্জয় সিং

চরিত্র: রাজ মালহোত্রা

গল্প: রাজ মালহোত্রা একজন যিনি তার প্রেমিকা সিম্রন এর সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরেন। সিম্রন ভৌতিক শক্তির দ্বারা আক্রান্ত হন, এবং রাজ এই রহস্য সমাধান করতে চান। এই প্রক্রিয়ায়, তিনি শাঞ্জয় নামে একজন মৃত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করেন, যিনি তার আত্মাকে শান্তি দিতে চান। ছবিটি একটি ভৌতিক থ্রিলার যা অতীত এবং বর্তমানের মধ্যে সম্পর্ক উন্মোচন করে।

৫. ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই (২০১০)

ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই ছবি

পরিচালক: মিলন লুথরিয়া

অভিনেতা/অভিনেত্রী: অজয় দেবগন, ইমরান হাশমী, কঙ্গনা রানাউত, প্রাচী দেসাই

চরিত্র: শোয়েব খান

গল্প: ছবিটি মুম্বাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডে দুই গ্যাংস্টারের উত্থান ও পতনের গল্প। ইমরান হাশমী শোয়েব খান নামে একজন স্ট্রিট স্মার্ট গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি একজন প্রভাবশালী গ্যাংস্টার সুলতান মিরজা (অজয় দেবগন) এর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন। ছবিটি ১৯৭০-এর দশকের মুম্বাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডের প্রেক্ষাপটে তৈরি এবং সত্য ঘটনা দ্বারা অনুপ্রাণিত।

৬. দি ডার্টি পিকচার (২০১১)

দি ডার্টি পিকচার ছবি

পরিচালক: মিলন লুথরিয়া

অভিনেতা/অভিনেত্রী: বিদ্যা বালান, ইমরান হাশমী, তুষার কাপুর, নাসিরুদ্দিন শাহ

চরিত্র: আব্রাহাম

গল্প: ছবিটি সিল্ক স্মিথার (বিদ্যা বালান) জীবন নিয়ে, যিনি ১৯৮০-এর দশকে দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী ছিলেন। ইমরান হাশমী আব্রাহাম নামে একজন নির্দেশকের চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি সিল্কের প্রতি আকর্ষিত হন কিন্তু তার কাজের সমালোচনা করেন। ছবিটি একজন নারীর উত্থান, তার খ্যাতি এবং পতনের গল্প বলে, যিনি একটি পুরুষ-প্রধান শিল্পে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন।

৭. শঙ্গহাই (২০১২)

শঙ্গহাই ছবি

পরিচালক: দিবাকর ব্যানার্জী

অভিনেতা/অভিনেত্রী: অভয় দেওল, ইমরান হাশমী, কলকি কোচলিন, প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী

চরিত্র: জৌকর কৌফমান

গল্প: ছবিটি একটি রাজনৈতিক থ্রিলার যা ভারতে একটি ছোট শহরে ঘটে। জৌকর কৌফমান (ইমরান হাশমী) একজন পর্নোগ্রাফিক ফিল্মের ভিডিওগ্রাফার, যিনি একজন সামাজিক কর্মী ড. আহমদির (প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী) হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হন। তিনি একজন বুরোক্র্যাট টি.এ. কৃষ্ণন (অভয় দেওল) এবং একজন সক্রিয়বাদী সানজয় (কলকি কোচলিন) এর সাথে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে চান। ছবিটি ভারতে রাজনৈতিক দুর্নীতি এবং কর্পোরেট লোভের সমালোচনা করে।

৮. আজহার (২০১৬)

আজহার ছবি

পরিচালক: টনি ডি’সৌজা

অভিনেতা/অভিনেত্রী: ইমরান হাশমী, নরগিস ফাখরি, প্রাচী দেসাই

চরিত্র: মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন

গল্প: ছবিটি ভারতীয় ক্রিকেটার মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের জীবনী চলচ্চিত্র, যিনি ম্যাচ ফিক্সিং স্ক্যান্ডালে জড়িত হয়ে পড়েন। ইমরান হাশমী মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের চরিত্রে অভিনয় করেন এবং তার জীবনের বিভিন্ন দিক, তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার, তার ব্যক্তিগত জীবন এবং তার ম্যাচ ফিক্সিং মামলা চিত্রিত করেন। ছবিটি আজহারউদ্দিনের উত্থান, পতন এবং তার মুক্তিলাভের গল্প বলে।

৯. বাদশাহো (২০১৭)

বাদশাহো ছবি

পরিচালক: মিলন লুথরিয়া

অভিনেতা/অভিনেত্রী: অজয় দেবগন, ইমরান হাশমী, ইলিয়ানা ডি’ক্রুজ, ইশা গুপ্তা

চরিত্র: দলজীত

গল্প: ছবিটি ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার সময় ভারতের একটি রাজস্থানি রাজ পরিবারের সোনা চুরি করার গল্প। ইমরান হাশমী দলজীত নামে একজন সেনাবাহিনীর অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি একটি হেভি ডিউটি ট্রাকের চালক। তিনি এবং তার সঙ্গীরা (অজয় দেবগন, ইলিয়ানা ডি’ক্রুজ, ইশা গুপ্তা, বিদ্যুৎ জামওয়াল) মিলে রাজ পরিবারের সোনা চুরি করতে চান। ছবিটি একটি হেইস্ট থ্রিলার যা আকর্ষণীয় চরিত্র এবং অ্যাকশন দৃশ্য দিয়ে ভরপুর।

১০. টাইগার ৩ (২০২৩)

টাইগার ৩ ছবি

পরিচালক: মনীষ শর্মা

অভিনেতা/অভিনেত্রী: সলমান খান, ক্যাটরিনা কাইফ, ইমরান হাশমী

চরিত্র: ফারিদ রহমান/আতিশ

গল্প: টাইগার ৩ হল YRF স্পাই ইউনিভার্সের পঞ্চম ছবি। ইমরান হাশমী প্রধান ভিলেন ফারিদ রহমান/আতিশের চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি পাকিস্তানের ISI এর একজন এজেন্ট ছিলেন কিন্তু এখন বিশ্বাসঘাতক হয়ে গেছেন। তিনি ভারতীয় RAW এজেন্ট টাইগার (সলমান খান) এবং জোয়া (ক্যাটরিনা কাইফ) কে হত্যা করতে চান। ছবিটি একটি অ্যাকশন থ্রিলার যা বিভিন্ন দেশে শুটিং করা হয়েছে এবং বিস্ময়কর অ্যাকশন দৃশ্য দিয়ে ভরপুর।

এছাড়াও, ইমরান হাশমীর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে “জীনাত” (২০০৫), “গ্যাংস্টার” (২০০৬), “আশিক বানায়া আপনে” (২০০৯), “রাজ ৩” (২০১৩), “এক্স: পাস্ট ইজ প্রেজেন্ট” (২০১৪), “মিস্টার এক্স” (২০১৫), “দি বডি” (২০১৯) ইত্যাদি। ইমরান হাশমী তাঁর দীর্ঘ অভিনয় কর্মজীবনে বিভিন্ন ধরনের ছবিতে অভিনয় করেছেন এবং বার বার প্রমাণ করেছেন যে তিনি যে কোনো চরিত্রে সফলভাবে অভিনয় করতে পারেন।

❖ ❖ ❖

অভিনয় শৈলীর বিবর্তন

ইমরান হাশমীর অভিনয় শৈলীর বিবর্তন

ইমরান হাশমী তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন “কিস কিং” হিসেবে, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তিনি নিজেকে এই আখ্যা থেকে বেরিয়ে এসে একজন গম্ভীর অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর অভিনয় শৈলীর বিবর্তন নিম্নলিখিত পর্যায়গুলোতে ভাগ করা যেতে পারে:

১. শুরুর দিন (২০০৩-২০০৭): কিস কিং এর আবির্ভাব

ইমরান হাশমী তাঁর অভিনয় কর্মজীবনের শুরুতে মূলত রোমান্টিক থ্রিলার ছবিতে অভিনয় করতেন, যেখানে তাঁকে সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করতে হতো। “মার্ডার” (২০০৪), “আক্সর” (২০০৫), “জীনাত” (২০০৫) ইত্যাদি ছবিতে তিনি এই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবিগুলোর সাফল্যের কারণে তিনি “কিস কিং” হিসেবে পরিচিতি পান। কিন্তু এই সময়েই তিনি “ফুটপাথ” (২০০৩) ও “গ্যাংস্টার” (২০০৬) এর মতো ছবিতে গম্ভীর চরিত্রে অভিনয় করে দেখান যে তিনি শুধুমাত্র রোমান্টিক হিরো নন।

২. মধ্যবর্তী পর্যায় (২০০৮-২০১২): বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়

এই সময়ে ইমরান হাশমী বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। “জানত” (২০০৮) এ তিনি একজন ম্যাচ ফিক্সারের চরিত্রে অভিনয় করেন, “রাজ” (২০০৯) এ একজন ভৌতিক গল্পের নায়ক, “ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই” (২০১০) এ একজন গ্যাংস্টার এবং “শঙ্গহাই” (২০১২) এ একজন ভিডিওগ্রাফারের চরিত্রে অভিনয় করেন। এই বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করেন এবং বলিউডের একজন বহুমুখী অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

৩. পরবর্তী পর্যায় (২০১৩-বর্তমান): গম্ভীর চরিত্রে অভিনয়

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ইমরান হাশমী আরও গম্ভীর এবং চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করছেন। “আজহার” (২০১৬) এ তিনি ক্রিকেটার মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের জীবনী চরিত্রে অভিনয় করেন, “দি বডি” (২০১৯) এ একজন ফরেনসিক সার্জনের চরিত্রে, “টাইগার ৩” (২০২৩) এ একজন ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ওয়েব সিরিজেও অভিনয় করছেন, যেমন “বার্ড অফ ব্লাড” (২০১৯) এবং “দাইমন্ড”। এই সময়ে তিনি আরও পরিপক্ব এবং নিপুণ অভিনেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।

“আমি কখনো আমার চিত্রনাট্য নির্বাচনে সাবধান ছিলাম না। আমি সবসময় সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং ঝুঁকি নিয়েছি। এটাই আমার কেরিয়ারকে আলাদা করেছে।”
– ইমরান হাশমী

ইমরান হাশমীর অভিনয় শৈলীর বিবর্তন প্রমাণ করে যে তিনি একজন বহুমুখী অভিনেতা যিনি নিজেকে বারবার পুনরাবিষ্কার করতে সক্ষম। তিনি “কিস কিং” এর আখ্যা থেকে বেরিয়ে এসে একজন গম্ভীর অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে বার বার শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। তাঁর চিত্রনাট্য নির্বাচন প্রমাণ করে যে তিনি একজন সাহসী অভিনেতা যিনি ঝুঁকি নিতে ভয় পান না।

❖ ❖ ❖

সংগীত ও গান: ইমরান হাশমীর ছবির হিট গানসমূহ

ইমরান হাশমীর ছবিগুলি শুধুমাত্র কাহিনী এবং অভিনয়ের জন্য নয়, এর সংগীত এবং গানের জন্যও বিখ্যাত। তাঁর ছবিগুলির অনেক গান হিট হয়েছে এবং আজও শ্রোতাদের প্রিয়। এখানে ইমরান হাশমীর ছবিগুলোর কিছু অবিস্মরণীয় গানের তালিকা দেওয়া হল:

ইমরান হাশমীর ছবির সেরা ১০টি গান

১. “আশিক বানায়া আপনে” – আশিক বানায়া আপনে (২০০৯)

সংগীতশিল্পী: হিমেশ রেশমিয়া | সংগীত পরিচালক: হিমেশ রেশমিয়া

২. “তু হি হারো” – জানত (২০০৮)

সংগীতশিল্পী: অতিফ আসলাম, সুজাতা ভাট্ট | সংগীত পরিচালক: প্রীতম চক্রবর্তী

৩. “একো জানকি” – আওয়ারাপন (২০০৭)

সংগীতশিল্পী: নাদিম শ্রাভান | সংগীত পরিচালক: প্রীতম চক্রবর্তী

৪. “হাম জী লেঙ্গে” – মার্ডার ৩ (২০১৩)

সংগীতশিল্পী: অনকিত তিওয়ারি, নীতু ভারওয়াল | সংগীত পরিচালক: প্রীতম চক্রবর্তী

৫. “তু হি মেরি শাব হ্যায়” – গ্যাংস্টার (২০০৬)

সংগীতশিল্পী: কেকে | সংগীত পরিচালক: প্রীতম চক্রবর্তী

৬. “জিয়া ধাড়কে” – রাজ (২০০৯)

সংগীতশিল্পী: রাহাত ফতেহ আলী খান | সংগীত পরিচালক: প্রীতম চক্রবর্তী

৭. “পে চারাগাহ” – দি ডার্টি পিকচার (২০১১)

সংগীতশিল্পী: বেনি দায়াল, কারান মল্লিক | সংগীত পরিচালক: বিশাল-শেখর

৮. “লা উবা ডি” – বাদশাহো (২০১৭)

সংগীতশিল্পী: অনকিত তিওয়ারি, নীতু ভারওয়াল | সংগীত পরিচালক: তন্বি বাগচি

৯. “আজ ফির তুমপে” – দোমন (২০১০)

সংগীতশিল্পী: তুলসী কুমার, করমানি | সংগীত পরিচালক: হিমেশ রেশমিয়া

১০. “মাহিয়া মাহিয়া” – আওয়ারাপন (২০০৭)

সংগীতশিল্পী: ফাইজা মৌলা | সংগীত পরিচালক: প্রীতম চক্রবর্তী

ইমরান হাশমীর ছবিগুলির সংগীত সাধারণত রোমান্টিক, আবেগপূর্ণ এবং মেলোডিয়াস হয়। প্রীতম চক্রবর্তী, হিমেশ রেশমিয়া, মিথুন-এর মতো সংগীত পরিচালকরা তাঁর ছবিগুলির জন্য সংগীত কম্পোজ করেছেন এবং তাদের সংগীত শ্রোতাদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। ইমরান হাশমীর ছবিগুলির গান শুধুমাত্র ভারতে নয়, বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় এবং বাংলাদেশেও তাঁর ছবির গানগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়।

ইমরান হাশমীর ছবিগুলির সংগীতের সাফল্য তাঁর ছবিগুলির সামগ্রিক সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর ছবিগুলির থিম সংগীত এবং গানগুলি ছবির মুড এবং ভাবকে আরও উন্নত করেছে এবং দর্শকদের কাছে ছবিগুলিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

❖ ❖ ❖

ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ইমরান হাশমী

বার্ড অফ ব্লাড

বিগত কয়েক বছরে, ওটিটি (ওভার-দ্য-টপ) প্ল্যাটফর্মগুলি ভারতীয় মনোরঞ্জন জগতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। অনেক বলিউড অভিনেতা/অভিনেত্রী এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে নিজেদের প্রতিভা দেখাচ্ছেন। ইমরান হাশমীও এই ট্রেন্ডে যোগ দিয়েছেন এবং তিনি কয়েকটি ওটিটি সিরিজে অভিনয় করেছেন।

ইমরান হাশমীর ওটিটি ডেবিউ হয়েছিল ২০১৯ সালে, যখন তিনি নেটফ্লিক্সের “বার্ড অফ ব্লাড” নামক একটি স্পাই থ্রিলার সিরিজে অভিনয় করেন। এই সিরিজটি বিলাল সিদ্দিকীর একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। ইমরান হাশমী কাবির আন্বার নামে একজন প্রাক্তন RAW এজেন্টের চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি বালুচিস্তানে একটি মিশনে যান। তাঁর সাথে অভিনয় করেন কিরিত কুলকার্নি, সোবিতা ধুলিপালা, বিনীত কুমার সিং, জায়দীপ অহলাওয়াত প্রমুখ। সিরিজটি রেড চিলি এন্টারটেইনমেন্ট দ্বারা নির্মিত এবং শাহ রুখ খান এর প্রযোজক কোম্পানি।

ইমরান হাশমীর পরবর্তী ওটিটি প্রজেক্ট ছিল “দাইমন্ড” নামক একটি ওয়েব সিরিজ, যা ডিসনি+ হটস্টারে মুক্তি পেয়েছে। এই সিরিজটি একটি ক্রাইম থ্রিলার, যেখানে ইমরান হাশমী মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন। সিরিজটি জুয়েলারি বিজনেস এবং আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্পর্ক নিয়ে তৈরি।

“ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আমাদের অভিনেতাদের কাছে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। এখানে আমরা ভিন্ন ধরনের গল্প এবং চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পাই।”
– ইমরান হাশমী

ইমরান হাশমী ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সফলভাবে যোগদান করেছেন এবং এখানেও নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তাঁর উপস্থিতি প্রমাণ করে যে তিনি একজন অভিনেতা হিসেবে বিবর্তিত হতে এবং নতুন মিডিয়া গ্রহণ করতে সদা প্রস্তুত। ভবিষ্যতে তিনি আরও ওটিটি প্রজেক্টে অভিনয় করতে পারেন, যা তাঁর অভিনয় কর্মজীবনকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

❖ ❖ ❖

পুরস্কার ও সম্মাননা

ইমরান হাশমী তাঁর অভিনয় কর্মজীবনে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন। তাঁর অভিনয় দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বেশ কয়েকটি পুরস্কার এবং মনোনয়ন পেয়েছেন। এখানে তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য পুরস্কার ও সম্মাননার তালিকা দেওয়া হল:

পুরস্কার ও মনোনয়ন

• ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড

– সেরা অভিনেতা (মনোনয়ন) – মার্ডার (২০০৪)

– সেরা খলনায়ক (মনোনয়ন) – ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই (২০১০)

– সেরা সহকারী অভিনেতা (মনোনয়ন) – দি ডার্টি পিকচার (২০১১)

• স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড

– সেরা জনপ্রিয় অভিনেতা – মার্ডার (২০০৪)

– জোড়ি নং. ১ – জানত (রেমনা্টী সিং সহ) (২০০৮)

– সেরা অভিনেতা (মনোনয়ন) – জানত (২০০৮)

• আইফা অ্যাওয়ার্ড

– সেরা খলনায়ক (মনোনয়ন) – ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই (২০১০)

– সেরা সহকারী অভিনেতা (মনোনয়ন) – দি ডার্টি পিকচার (২০১১)

• স্ট্যারডাস্ট অ্যাওয়ার্ড

– সেরা নেগেটিভ রোল – ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই (২০১০)

– স্ট্যারডাস্ট অ্যাওয়ার্ড ফর সেরা সহকারী অভিনেতা – দি ডার্টি পিকচার (২০১১)

• জি সিনে অ্যাওয়ার্ড

– সেরা অভিনেতা ইন নেগেটিভ রোল – মার্ডার ২ (২০১১)

• সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মুভি অ্যাওয়ার্ড

– স্টাইলিশ আইকন অফ বলিউড অ্যাওয়ার্ড (২০১৭)

এছাড়াও, ইমরান হাশমী বিভিন্ন ম্যাগাজিন এবং মিডিয়া হাউস দ্বারা “সেক্সিয়েস্ট ম্যান”, “স্টাইলিশ আইকন”, “মোস্ট ডিজায়ারেবল ম্যান” ইত্যাদি উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর পুরস্কার ও সম্মাননা প্রমাণ করে যে তিনি শুধুমাত্র একজন জনপ্রিয় অভিনেতাই নন, বরং একজন প্রতিভাবান অভিনেতাও, যিনি তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে সমালোচক ও দর্শক উভয়কেই মুগ্ধ করেছেন।

❖ ❖ ❖

আসন্ন সিনেমা ও প্রজেক্ট

ইমরান হাশমী সবসময় নতুন এবং আকর্ষণীয় প্রজেক্টে কাজ করে থাকেন। বর্তমানে তিনি বেশ কয়েকটি আসন্ন সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন। এখানে তাঁর কিছু আসন্ন প্রজেক্টের তালিকা দেওয়া হল:

আসন্ন প্রজেক্ট

১. গ্রাউন্ড জিরো

পরিচালক: তেজাস ধানিয়া

নির্মাতা: নির্বেদ চন্দ্র

সহ-অভিনেতা/অভিনেত্রী: ওয়াজিদ খান, পরিণীতি চোপড়া

বিবরণ: এটি একটি সাসপেন্স থ্রিলার ছবি, যেখানে ইমরান হাশমী একজন আর্মি অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করবেন। ছবিটি ২০২৪ সালে মুক্তির জন্য নির্ধারিত।

২. শোওয়ান

পরিচালক: অভিনাশ দাস

নির্মাতা: অনিল অম্বানি

সহ-অভিনেতা/অভিনেত্রী: শরদ কেলকর, মানুষি ছিল্লার

বিবরণ: “শোওয়ান” হল একটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, যেখানে ইমরান হাশমী একজন ডিটেক্টিভের চরিত্রে অভিনয় করবেন। ছবিটি ২০২৪ সালের শেষের দিকে মুক্তি পাবে।

৩. এল২: এমপায়ার

পরিচালক: মহেশ ভাট

নির্মাতা: মুকেশ ভাট

সহ-অভিনেতা/অভিনেত্রী: সনি রজদান, ঊর্মিলা মাতোন্ডকর

বিবরণ: “এল২: এমপায়ার” হল “জানত” ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় ইনস্টলমেন্ট। ইমরান হাশমী এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম দুটি ইনস্টলমেন্টে অভিনয় করেছিলেন এবং এবার তিনি একটি নতুন চরিত্রে অভিনয় করবেন। ছবিটি ২০২৫ সালে মুক্তি পাবে।

এছাড়াও, ইমরান হাশমী আরও কয়েকটি প্রজেক্টে কাজ করছেন, যেগুলি এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তিনি ওয়েব সিরিজ এবং ছবি উভয়ই করতে আগ্রহী এবং তিনি বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চান। তাঁর আসন্ন প্রজেক্টগুলি প্রমাণ করে যে তিনি একজন সক্রিয় এবং চাহিদাসম্পন্ন অভিনেতা হিসেবে বলিউডে তাঁর স্থান সুদৃঢ় করেছেন।

❖ ❖ ❖

উপসংহার

ইমরান হাশমী

ইমরান হাশমী বলিউডের একজন অনন্য অভিনেতা, যিনি “কিস কিং” হিসেবে তাঁর যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং বর্তমানে একজন বহুমুখী এবং সম্মানিত অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর অভিনয় কর্মজীবনে, তিনি বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং তাঁর অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করেছেন।

ইমরান হাশমীর সবচেয়ে বড় গুণ হল তাঁর অভিনয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা। যে চরিত্রেই তিনি অভিনয় করেন না কেন, তিনি সেই চরিত্রকে বাস্তবসম্মত এবং হৃদয়গ্রাহী করে তোলেন। তিনি একজন রোমান্টিক হিরো হিসেবে ও সফল, আবার একজন খলনায়ক হিসেবেও সমান সফল। তাঁর বিভিন্ন ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করার ক্ষমতা তাঁকে অন্যান্য অভিনেতাদের থেকে আলাদা করে।

ইমরান হাশমীর অভিনীত ছবিগুলি শুধুমাত্র বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি, এগুলি সমালোচকদের প্রশংসাও অর্জন করেছে। “শঙ্গহাই”, “ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাই”, “দি ডার্টি পিকচার” এর মতো ছবিগুলি সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং এগুলি আজও ভারতীয় সিনেমার উল্লেখযোগ্য ছবি হিসেবে স্মরণীয়।

ইমরান হাশমী তাঁর অভিনয় কর্মজীবনে অনেক চড়াই-উতরাই দেখেছেন, কিন্তু তিনি সবসময় নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন। তিনি “কিস কিং” এর ইমেজ থেকে বেরিয়ে এসে একজন গম্ভীর ও বহুমুখী অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করেছেন।

“আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতে। আমি কখনোই একই ধরনের চরিত্রে বার বার অভিনয় করতে চাই না। আমি চাই শ্রোতারা আমাকে নতুন নতুন চরিত্রে দেখুক।”
– ইমরান হাশমী

ইমরান হাশমী ভারতীয় সিনেমা জগতে একটি অনন্য স্থান অর্জন করেছেন। তিনি শুধুমাত্র একজন জনপ্রিয় অভিনেতাই নন, বরং একজন প্রতিভাবান অভিনেতাও, যিনি তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে বার বার দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। তাঁর আসন্ন প্রজেক্টগুলি নিয়ে ফ্যানরা উদ্বিগ্ন এবং আশা করা যায় যে তিনি আগামী দিনগুলোতে আরও ভাল কাজ করবেন এবং ভারতীয় সিনেমা জগতকে সমৃদ্ধ করবেন।

ইমরান হাশমীর অভিনয় যাত্রা প্রমাণ করে যে কঠোর পরিশ্রম, দৃঢ়তা এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকলে সাফল্য অবশ্যম্ভাবী। তিনি বলিউডের একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা হিসেবে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে তাঁর স্থান সুরক্ষিত করেছেন।

আরও পড়ুন

বলিউড সিনেমা সম্পর্কে আরও জানতে, নিম্নলিখিত আর্টিকেলগুলি দেখুন:

Latest articles

Related articles