শাহরুখ খানের হিন্দি মুভি: বলিউডের ‘কিং খান’-এর চলচ্চিত্র যাত্রা
পড়তে সময় লাগবে: ১৫ মিনিট
শাহরুখ খান
হিন্দি সিনেমা
চলচ্চিত্র
সূচিপত্র
১. ভূমিকা: শাহরুখ খান – বলিউডের “কিং খান”
বলিউড চলচ্চিত্রের আকাশে শাহরুখ খান এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ‘কিং খান’ নামে পরিচিত এই অভিনেতা শুধু ভারতীয় চলচ্চিত্রেই নয়, বিশ্বব্যাপী মিলিয়ন মিলিয়ন দর্শকের হৃদয় জয় করেছেন। তার অনন্য অভিনয় প্রতিভা, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব এবং অসাধারণ পর্দায় উপস্থিতি তাকে বলিউডের সবচেয়ে সফল অভিনেতাদের একজন করে তুলেছে। আজকের এই আর্টিকেলে, আমরা শাহরুখ খানের অসাধারণ চলচ্চিত্র যাত্রা, তার উল্লেখযোগ্য হিন্দি ছবিগুলি এবং বিশ্ব চলচ্চিত্রে তার অবদান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করা শাহরুখ খান তার ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় চলচ্চিত্রে অবদান রেখে চলেছেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি ৮০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, যার বেশিরভাগই বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। রোমান্টিক নায়ক থেকে শুরু করে ভিলেন, অ্যাকশন হিরো থেকে শুরু করে কমেডি চরিত্র – তার বিস্তৃত অভিনয় পরিসর সত্যিই অতুলনীয়।
২. প্রাথমিক জীবন ও কর্মজীবন
শাহরুখ খান হিন্দি চলচ্চিত্রে তার যাত্রা শুরু করেন টেলিভিশন সিরিজ দিয়ে। ১৯৮৮ সালে “ফৌজি” নামক একটি টেলিভিশন সিরিজে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এরপর তিনি “সার্কাস” এবং “দিল দরিয়া” সহ আরও কয়েকটি টেলিভিশন সিরিজে কাজ করেন। ১৯৯২ সালে তিনি বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন “দীওয়ানা” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ছবিটি বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য পায় এবং শাহরুখ খান সেরা নবাগত অভিনেতার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেন।
শাহরুখ খানের প্রাথমিক চলচ্চিত্র যাত্রার একটি মুহূর্ত
বলিউডে শাহরুখের প্রথম সাফল্যগুলির একটি
শাহরুখের প্রাথমিক সাফল্যের পর, তিনি “বাজিগর” (১৯৯৩) এবং “ডর” (১৯৯৩) এর মতো চলচ্চিত্রে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেন এবং ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান। “বাজিগর” ছবিতে তার অভিনয় এতোটাই প্রশংসনীয় ছিল যে তিনি সেরা অভিনেতার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেন। এই সময়ে তিনি একজন বহুমুখী অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যিনি যে কোনো ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে সক্ষম।
চলচ্চিত্র | বছর | চরিত্র | বিশেষ উল্লেখ |
---|---|---|---|
দীওয়ানা | ১৯৯২ | রাজ | সেরা নবাগত অভিনেতা (ফিল্মফেয়ার) |
বাজিগর | ১৯৯৩ | আজয় শর্মা/বিক্রম | সেরা অভিনেতা (ফিল্মফেয়ার) |
ডর | ১৯৯৩ | রাহুল মেহরা | ভিলেন চরিত্রে সাফল্য |
কভি হাঁ কভি না | ১৯৯৪ | সুনিল | ক্লাসিক রোমান্টিক কমেডি |
৩. ৯০-এর দশক: স্বর্ণযুগের শুরু
১৯৯৫ সাল থেকে শাহরুখ খানের কেরিয়ারে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। এই বছর তিনি “দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে” (DDLJ) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যা ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। আদিত্য চোপড়া পরিচালিত এই ছবি মারাঠা মন্দির সিনেমা হলে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুক্তি পেয়ে চলেছিল, যা একটি বিশ্ব রেকর্ড। DDLJ শাহরুখকে বলিউডের প্রধান রোমান্টিক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
DDLJ-এর পর, শাহরুখ অসংখ্য হিট চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন যেমন “দিল তো পাগল হ্যায়” (১৯৯৭), “কুছ কুছ হোতা হ্যায়” (১৯৯৮), এবং “মোহব্বতেইন” (২০০০)। এই চলচ্চিত্রগুলি তাকে “রোমান্সের কিং” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং বলিউডের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়কদের একজন করে তোলে।
“আমি যখন মারা যাব, আমার কবরের উপর লেখা থাকবে: ‘তিনি মহিলাদের হাসাতে এবং কাঁদাতে জানতেন’।” – শাহরুখ খান
৯০-এর দশকে শাহরুখ খানের মুভিগুলি শুধু ভারতে নয়, ভারতের বাইরে বিশেষ করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই সময়ে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রের আন্তর্জাতিক মুখ হিসেবে পরিচিতি পান।
৪. রোমান্টিক নায়ক হিসেবে শাহরুখ
শাহরুখ খান বলিউডের সবচেয়ে সফল রোমান্টিক নায়ক হিসেবে পরিচিত। তার বিখ্যাত বাহু প্রসারিত পোজ, মোহনীয় হাসি এবং আবেগময় সংলাপ উচ্চারণের ধরন তাকে বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে দিয়েছে। তিনি যশ চোপড়া এবং করণ জোহর-এর মতো পরিচালকদের সাথে কাজ করে রোমান্টিক চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন।
শাহরুখের রোমান্টিক চলচ্চিত্রগুলির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল তার চরিত্রগুলির গভীরতা এবং আন্তরিকতা। তিনি প্রেমের গল্পকে শুধুমাত্র আবেগীয় করে তোলেন না, বরং তাতে একটি অনন্য মাত্রা যোগ করেন। “দিল সে”, “চাক দে ইন্ডিয়া”, “মাই নেম ইজ খান” এর মতো চলচ্চিত্রগুলিতে তিনি দেখিয়েছেন যে প্রেম শুধু দুজন নায়ক-নায়িকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা জাতি, ধর্ম, এবং সীমান্ত অতিক্রম করতে পারে।
শাহরুখের বিখ্যাত রোমান্টিক চলচ্চিত্রগুলি না শুধু ভারতীয় সিনেমার জন্য মাইলফলক, বরং বিশ্বজুড়ে রোমান্টিক চলচ্চিত্রের ধারণা পাল্টে দিয়েছে। “দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে” এবং “কুছ কুছ হোতা হ্যায়” বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুনরায় নির্মাণ করা হয়েছে, যা তার চলচ্চিত্রগুলির আন্তর্জাতিক প্রভাবের প্রমাণ দেয়।
৫. সুপারহিট ব্লকবাস্টার মুভি
শাহরুখ খানের কেরিয়ারে অসংখ্য ব্লকবাস্টার হিট রয়েছে যা বক্স অফিসে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। নিচে তার সবচেয়ে বড় হিট চলচ্চিত্রগুলির একটি তালিকা দেওয়া হল:
চলচ্চিত্র | বছর | বক্স অফিস কালেকশন | পরিচালক |
---|---|---|---|
চেন্নাই এক্সপ্রেস | ২০১৩ | ৪২৩ কোটি টাকা | রোহিত শেট্টি |
হ্যাপি নিউ ইয়ার | ২০১৪ | ৪০০ কোটি টাকা | ফারাহ খান |
দিলওয়ালে | ২০১৫ | ৩৭৬ কোটি টাকা | রোহিত শেট্টি |
কভি খুশি কভি গম | ২০০১ | ১৩৬ কোটি টাকা | করণ জোহর |
পাঠান | ২০২৩ | ১০৫০ কোটি টাকা | সিদ্ধার্থ আনন্দ |
“চেন্নাই এক্সপ্রেস” ছবিটি ২০১৩ সালে মুক্তি পায় এবং ৪২৩ কোটি টাকার ব্যবসা করে। এটি শাহরুখের কেরিয়ারের অন্যতম বড় হিট। রোহিত শেট্টি পরিচালিত এই অ্যাকশন-কমেডি চলচ্চিত্রে শাহরুখ একজন মুম্বাইয়ের গুন্ডার ভূমিকায় অভিনয় করেন। শাহরুখের স্বাভাবিক চরিত্র থেকে বেরিয়ে এসে এই ভিন্ন ধরনের ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য দর্শকরা তাকে ব্যাপক প্রশংসা করেন।
২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া “পাঠান” চলচ্চিত্রটি শাহরুখের কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় হিট। এটি বিশ্বব্যাপী ১০৫০ কোটি টাকারও বেশি আয় করে। চার বছরের ব্রেক নেওয়ার পর, শাহরুখ এই অ্যাকশন থ্রিলার দিয়ে বড় পর্দায় ফিরে আসেন এবং ভারতীয় চলচ্চিত্রের একটি নতুন যুগের সূচনা করেন।
৬. পরীক্ষামূলক চরিত্রে শাহরুখ
যদিও শাহরুখ খান প্রধানত রোমান্টিক নায়ক হিসেবে পরিচিত, তিনি তার কেরিয়ারে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষামূলক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। “চক দে ইন্ডিয়া” (২০০৭) চলচ্চিত্রে তিনি একজন কঠোর হকি কোচের চরিত্রে অভিনয় করেন, যা আগে কখনও তার সাথে যুক্ত করা হয়নি। এই ছবিটি সমালোচক এবং দর্শক উভয়ের কাছেই ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।
চক দে ইন্ডিয়া (২০০৭)
স্বদেশ (২০০৪)
“স্বদেশ” (২০০৪) চলচ্চিত্রে শাহরুখ একজন NASA বিজ্ঞানীর চরিত্রে অভিনয় করেন, যিনি তার গ্রামে ফিরে আসেন এবং গ্রামীণ ভারতের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করেন। এই চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে খুব একটা সাফল্য না পেলেও, সমালোচকদের কাছে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে এবং পরবর্তীতে কাল্ট ক্লাসিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া “ফ্যান” চলচ্চিত্রে শাহরুখ একজন অভিনেতা এবং তার উন্মাদ ভক্ত – দুটি ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটিতে তার অভিনয় দক্ষতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে সমালোচকরা মনে করেন। “দিয়ার জিন্দেগি” (২০১৬) চলচ্চিত্রেও তিনি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের চরিত্রে অভিনয় করেন এবং নতুন ধরনের অভিনয়ের পরিচয় দেন।
“আমি বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, কারণ আমি বিশ্বাস করি অভিনেতা হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি।” – শাহরুখ খান
৭. সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র ও পুনরাবিষ্কার
২০২৩ সাল শাহরুখ খানের জন্য একটি বিশেষ বছর হয়ে উঠেছে। “পাঠান”-এর অভূতপূর্ব সাফল্যের পর, তিনি “জওয়ান” এবং “ডাংকি” নামে আরো দুটি বড় বাজেটের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। “পাঠান” চলচ্চিত্রটি শুধু শাহরুখের কেরিয়ারেই নয়, সম্পূর্ণ ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী ১০৫০ কোটি টাকারও বেশি আয় করেছে।
“জওয়ান” চলচ্চিত্রে শাহরুখ দক্ষিণ ভারতীয় পরিচালক এটলি কুমারের সাথে কাজ করেছেন, যা বক্স অফিসে ৬৫০ কোটি টাকারও বেশি আয় করেছে। এই চলচ্চিত্রে তিনি একটি দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং তার অ্যাকশন দৃশ্যগুলি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
শাহরুখের সাম্প্রতিক চলচ্চিত্রগুলি প্রমাণ করে যে তিনি এখনও ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম শক্তিশালী তারকা। ৫৫ বছর বয়সেও তিনি নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছেন এবং নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করছেন।
২০২৩-এর চলচ্চিত্র
- পাঠান – মুক্তি: জানুয়ারি ২০২৩, বক্স অফিস: ১০৫০+ কোটি
- জওয়ান – মুক্তি: সেপ্টেম্বর ২০২৩, বক্স অফিস: ৬৫০+ কোটি
- ডাংকি – মুক্তি: ডিসেম্বর ২০২৩, পরিচালক: রাজকুমার হিরানি
৮. পুরস্কার ও সম্মাননা
শাহরুখ খানের ব্যাপক কৃতিত্বের জন্য তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি ১৪টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন, যা একজন অভিনেতার জন্য সর্বোচ্চ সংখ্যক। এছাড়াও তিনি ৮টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ৩টি আন্তর্জাতিক ইন্ডিয়ান ফিল্ম একাডেমি পুরস্কার, এবং অসংখ্য অন্যান্য সম্মাননা লাভ করেছেন।
ভারত সরকার তাকে ২০০৫ সালে ‘পদ্মশ্রী’ এবং ২০২০ সালে “পিটার থে গ্রেট” (রাশিয়া) উপাধিতে ভূষিত করেছে। ফ্রান্স সরকার তাকে “অর্ডার অফ আরর্টস অ্যান্ড লিটারেচার” এবং “লিজিয়ন অফ অনার” সম্মাননায় ভূষিত করেছে।
পুরস্কার | সংখ্যা | উল্লেখযোগ্য ছবি |
---|---|---|
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | ১৪ | DDLJ, কুছ কুছ হোতা হ্যায়, স্বদেশ |
স্ক্রিন পুরস্কার | ১০ | চক দে ইন্ডিয়া, মাই নেম ইজ খান |
আন্তর্জাতিক ইন্ডিয়ান ফিল্ম একাডেমি পুরস্কার | ৮ | দেবদাস, কভি খুশি কভি গম |
জি সিনে পুরস্কার | ৬ | রা.ওয়ান, চেন্নাই এক্সপ্রেস |
শাহরুখ খান মাদাম তুসো মিউজিয়ামে মোমের মূর্তি বসানো অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম, যা বিশ্বব্যাপী তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ। টাইম ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
৯. বাংলাদেশে শাহরুখের জনপ্রিয়তা
বাংলাদেশে শাহরুখ খান বিপুল জনপ্রিয়। বাংলাদেশের দর্শকরা তার চলচ্চিত্রগুলি দেখতে, গানগুলি শুনতে এবং তার শৈলী অনুসরণ করতে ভালোবাসেন। ঢাকা এবং অন্যান্য বড় শহরগুলিতে শাহরুখের সিনেমা মুক্তি পাওয়ার সময় সিনেমা হলগুলিতে প্রচণ্ড ভিড় হয়।
বাংলাদেশে শাহরুখ খানের জনপ্রিয়তার মূল কারণগুলি হল:
- সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য: বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য থাকায় বাংলাদেশি দর্শকরা সহজেই শাহরুখের চলচ্চিত্রগুলির সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন।
- ভাষাগত সাদৃশ্য: যদিও হিন্দি এবং বাংলা ভিন্ন ভাষা, তবে উভয় ভাষাতেই অনেক সাধারণ শব্দ রয়েছে, যা বাংলাদেশি দর্শকদের জন্য হিন্দি চলচ্চিত্র বোঝা সহজ করে তোলে।
- শাহরুখের ব্যক্তিত্ব: শাহরুখের বিনয়ী ব্যক্তিত্ব এবং চার্মিং উপস্থিতি বাংলাদেশের দর্শকদের আকর্ষণ করে।
শাহরুখের চলচ্চিত্রগুলি বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলিতে ব্যাপক সাফল্য পায়। “পাঠান”, “জওয়ান”, “হ্যাপি নিউ ইয়ার”, “চেন্নাই এক্সপ্রেস” – এই চলচ্চিত্রগুলি বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশী মিডিয়াতেও শাহরুখ খানের সংবাদ ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়।
“বাংলাদেশের ভক্তদের ভালবাসা আমাকে সবসময় অভিভূত করে। আমি বাংলাদেশে আসার জন্য অপেক্ষা করছি।” – শাহরুখ খান (একটি সাক্ষাৎকারে)
১০. উপসংহার
শাহরুখ খান শুধু একজন অভিনেতা নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান, একটি ব্র্যান্ড, এবং বিশ্বব্যাপী মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের প্রেরণা। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, তিনি বলিউড চলচ্চিত্রের মুখ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিশ্বজুড়ে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
শাহরুখের চলচ্চিত্র যাত্রা আমাদের সকলকে শেখায় যে কঠোর পরিশ্রম, দৃঢ় সংকল্প, এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখলে সবকিছু সম্ভব। তিনি একজন বহিরাগত হিসেবে বলিউডে প্রবেশ করেছিলেন, কোনো চলচ্চিত্র পরিবারের পটভূমি ছিল না, কিন্তু তারপরও তিনি নিজের প্রতিভা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে “কিং খান” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সক্ষম হয়েছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, তিনি নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের উৎসাহ ও সমর্থন দিয়ে চলেছেন। তার প্রযোজনা কোম্পানি “রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট” নতুন প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সুযোগ দিয়ে চলেছে।
২০২৩ সালে, তিনি বক্স অফিসে “পাঠান” এবং “জওয়ান” এর অভূতপূর্ব সাফল্যের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে তিনি এখনও বলিউডের “কিং” এবং আগামী বছরগুলোতেও তিনি দর্শকদের মুগ্ধ করে যাবেন। শাহরুখ খানের চলচ্চিত্র যাত্রা একটি অনুপ্রেরণার গল্প, যা আমাদের শেখায় যে সর্বদা নিজের স্বপ্নের পিছনে ছুটতে হবে এবং কখনোই হার মানতে নেই