কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত “female 4 Natok” বাংলা নাট্যজগতে একটি আলোচিত নাম। জনপ্রিয় “ফিমেল” সিরিজের চতুর্থ পর্বটি ২০২৪ সালে মুক্তি পেয়েছে এবং এটি ভক্তদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। প্রথম তিনটি পর্বে দর্শকদের প্রচুর হাসি এবং বিনোদন দেওয়ার পর, “ফিমেল ৪” নাটকটি কিছু নতুন দিক যোগ করলেও পূর্বের মতো শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এই নিবন্ধে আমরা “Female 4 Natok” কাহিনি, চরিত্র, নির্মাণশৈলী এবং এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
Female 4 Natok-এর প্লট: নতুন মেয়ে, পুরোনো গ্যাঞ্জাম
“Female 4 Natok” এর গল্প শুরু হয় ঢাকার ব্যাটারি গলিতে। নতুন একটি মেয়ের আগমন ঘটায় এলাকায় গ্যাঞ্জাম শুরু হয়। এইবারের গল্পে আগের কাহিনিগুলোর মতোই পুরোনো গলির লোকজনের সঙ্গে বনানী এলাকার লোকজনের বিরোধ দেখা যায়।
- গ্যাঞ্জামের কেন্দ্রবিন্দু: নতুন মেয়েকে ঘিরে এলাকাবাসীর ঝামেলা।
- প্লট টুইস্ট: আগের তিন পার্টের মতোই শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গল্পের মূল চরিত্ররা।
- ফাইনাল সিকোয়েন্স: পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর জেলে এক হাস্যকর সিকোয়েন্স তৈরি হয়, যা দর্শকদের বেশ ভালোভাবে বিনোদন দিয়েছে।
তবে গল্পে নতুনত্বের অভাব এবং একই ধাঁচের পুনরাবৃত্তি অনেক দর্শকের কাছে বোরিং মনে হয়েছে।
ক্যারেক্টারদের উপস্থিতি এবং অভিনয়
“Female 4 Natok”-এ পুরোনো চরিত্রদের প্রায় সবাই ফিরে এসেছে, তবে কিছু পরিবর্তন ছিল, যা ভক্তদের হতাশ করেছে।
- বডি সোহেল: এই পর্বে বডি সোহেল ছিল না, কারণ সে বিদেশে ছিল। তার অনুপস্থিতি অনেক ভক্তের জন্য বড় একটি হতাশা ছিল।
- ইরেশ যাকের: তার এন্ট্রি এবং পলাশের সঙ্গে একটি বিশেষ সিকোয়েন্স ছিল, যা দর্শকদের মধ্যে ভালো সাড়া ফেলেছে।
- ড্যান্সার সা আলম, কুত্তা মিজান, এতিম আকবর এবং লাবু কমিশনার: তাদের চরিত্রগুলো আগের মতোই মজাদার ছিল, তবে গল্পে তাদের অবদান এইবার কিছুটা কম ছিল।
- ডিসকো বাবু: আগের পর্বের তুলনায় এইবারের ফাইটিং সিকোয়েন্সে তার উপস্থিতি তেমন প্রভাব ফেলেনি।
Female 4 Natok-এর তুলনা আগের পর্বগুলোর সঙ্গে
বিনোদন:
আগের তিনটি পর্ব দর্শকদের প্রচুর হাসির খোরাক জুগিয়েছিল। তবে “ফিমেল ৪”-এ হাসির ডায়লগ এবং মজাদার মুহূর্ত তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
গল্প:
গল্পে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করা হলেও প্লটের পুনরাবৃত্তি দর্শকদের হতাশ করেছে।
- আগে: ব্যাটারি গলি বনাম ব্যাটারি গলির ঝগড়া।
- এবার: ব্যাটারি গলি বনাম বনানী এলাকার ঝগড়া।
ফাইটিং সিকোয়েন্স:
আগের পর্বের ফাইটিং সিকোয়েন্সের তুলনায় এবারের ফাইটগুলোতে কম মজা ছিল। ডিসকো বাবুর এক্সট্রা অ্যাকশন দৃশ্যের অনুপস্থিতি তা আরও প্রমাণ করে।

ক্যামেরা এবং মিউজিক
“ফিমেল ৪”-এর নির্মাণশৈলী আগের মতোই ভালোমানের ছিল।
- ক্যামেরার কাজ: বাইক শো এবং একশন শটগুলো সুন্দরভাবে চিত্রায়িত হয়েছে।
- মিউজিক: আগের মতোই প্রাণবন্ত এবং গল্পের সঙ্গে মানানসই।
তবে দর্শকদের মতে, যদি গল্পের গতি এবং কন্টেন্টে আরও নতুনত্ব যোগ করা হতো, তাহলে এটি আরও উপভোগ্য হতে পারত।
Female 4 Natok-এর ইতিবাচক দিক
১. চরিত্রের কেমিস্ট্রি: ইরেশ যাকের এবং পলাশের দৃশ্য দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে।
২. জেল সিকোয়েন্স: পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পরের দৃশ্য দর্শকদের বেশ ভালোভাবে বিনোদন দিয়েছে।
৩. ভিজ্যুয়াল মান: নাটকের ক্যামেরা এবং শট নির্বাচন ছিল অসাধারণ।
ফিমেল ৪-এর নেতিবাচক দিক
১. গল্পের পুনরাবৃত্তি: পুরোনো প্লট এবং চরিত্রের অভাবনীয়তা নাটককে বোরিং করে তুলেছে।
২. বিনোদনের অভাব: হাসির দৃশ্য এবং সংলাপ আগের পর্বের তুলনায় দুর্বল।
৩. নতুন চরিত্রের অভাব: নতুন চরিত্র যুক্ত না করায় কাহিনিতে ভিন্নতা আসেনি।
৪. বডি সোহেলের অনুপস্থিতি: তার অনুপস্থিতি অনেক দর্শক মেনে নিতে পারেননি।
উপসংহার
“Female 4 Natok” নাটকটি ভক্তদের জন্য একটি মিশ্র অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছে। যারা এই সিরিজের আগের পর্ব দেখেছেন, তারা হয়তো কিছুটা হতাশ হবেন, তবে যারা নতুন করে দেখছেন, তারা এটি উপভোগ করতে পারেন।
কাজল আরেফিন অমির পরিচালনা এবং অভিনেতাদের কাজ প্রশংসার যোগ্য হলেও গল্পে নতুনত্বের অভাব এবং বিনোদনের কমতি নাটকটিকে দুর্বল করেছে। ভবিষ্যতে “ফিমেল” সিরিজের পরবর্তী পর্বগুলোর ক্ষেত্রে গল্প এবং চরিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করার প্রত্যাশা রইল।
যারা নাটকটি এখনও দেখেননি, তারা বঙ্গ অ্যাপ থেকে দেখে নিতে পারেন। আপনার মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না!